ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তা 

রাফিয়ার স্বপ্নপূরণের সারথি হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২২
রাফিয়ার স্বপ্নপূরণের সারথি হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ রাফিয়ার স্বপ্নপূরণের সারথি হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ

কক্সবাজার: নরম বালিশে মাথা রেখে প্রতিদিন কত স্বপ্ন দেখি আমরা। সহস্র রঙের আঁকিবুঁকিতে কত শান্তি, বেঁচে থাকার অফুরন্ত রসদ।

আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে, যারা স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়। যদিও বা স্বপ্ন দেখে, দরিদ্রতা এসে ভর করে সেখানে।  

তখন তারা একটু প্রশান্তি নিয়ে বেঁচে থাকার রসদও খুঁজে পায় না। আর যদি হয় কোনো অতিদরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী, তাহলে তো কথাই নেই। নিজেদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তাদের ফেলে দেয় হতাশার সমুদ্রে।

এমন সব শিক্ষার্থীকে খুঁজে বের করে তাদের পাশে দাঁড়ায় দেশের শীর্ষ শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ। কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের ডেলপাড়া গ্রামের মেধাবী দুই শিক্ষার্থী সাদিয়া ও রাফিয়া। মেধাবী শিক্ষার্থী হলেও তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে দুই পরিবার। সেই পরিবার দুটির পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বৃহত্তম সামাজিক সংগঠন শুভসংঘের বন্ধুদের মাধ্যমে খুঁজে বের করে সাদিয়া ও রাফিয়াকে দেওয়া হয়েছে দুটি সেলাই মেশিন।

সাদিয়ার পুরো নাম তাহসিন সাদিয়া। নজির আহমেদ ও হামিদা খানমের বড় মেয়ে সাদিয়া খুরুশকুল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার আরো ছোট্ট তিনটি ভাই-বোন আছে। তাদের একজন সপ্তম শ্রেণিতে, আরেকজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তিনজনের পড়াশোনা চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক বাবা। সাদিয়ার মা সেলাই মেশিন চালাতে পারেন। সাদিয়াও শিখেছে সেলাই মেশিন চালানো। কিন্তু অভাবের সংসারে কোত্থেকে আসবে সেলাই মেশিন। একটি সেলাই মেশিন পেলে হয়তো এর আয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করানো কিছুটা সহজ হতো। এমন স্বপ্ন এই পরিবারটির বহুদিনের। তাদের সেই স্বপ্নপূরণের সারথি হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ।

গত ২ মার্চ বুধবার একটি সেলাই মেশিন ও কিছু নতুন জামাকাপড় বানানোর মতো সব উপকরণ বসুন্ধরা  গ্রুপের পক্ষ থেকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে শুভসংঘের বন্ধুদের মাধ্যমে।

শুধু সাদিয়াই নয়, একই দিনে আরেক মেধাবী শিক্ষার্থী রাফিয়া সুলতানার পড়াশোনা নিশ্চিন্তে চালিয়ে নিতে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে নতুন সেলাই মেশিন ও কাপড়চোপড়। ২১ বছর আগে বাবা হারানো রাফিয়ারা পাঁচ ভাই-বোন। রাফিয়া সবার ছোট। অন্য ভাই-বোনের সবাই উচ্চশিক্ষা শেষ করেছেন। এই পরিবারটিকে এককভাবে ২১ বছর ধরে সামলে রাখছেন জীবনসংগ্রামে লিপ্ত অদম্য রাফিয়ার মা ফাতেমা বেগম। শেষ বয়সে এসে অনেকটাই ক্লান্ত এই সংগ্রামী নারী। ছোট মেয়েটির উচ্চশিক্ষা শেষ করা নিয়ে যখন বেশ হতাশা ভর করছিল, তখনই পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপ। সেলাইয়ের কাজ জানা রাফিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সেলাই মেশিন ও নানা উপকরণ।

এগুলো হাতে পেয়ে যেন অনেকটা প্রাণ ফিরে পায় পুরো পরিবারটি। নিদারুণ অর্থকষ্ট থেকে বের হতে পারবে তারা—এই ভেবে অজান্তেই চলে আসে স্বস্তির নিঃশ্বাস। রাফিয়া বলে, ‘সেলাইয়ের কাজ জানলেও একটি সেলাই মেশিন কেনার টাকা জোগাড় করতে পারছিলাম না কিছুতেই। সৃষ্টিকর্তা  আমার আকুলতা শুনেছেন। আজকে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আমাকে নতুন সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে। এই মেশিনে কাজ করে এখন আমি নিশ্চিন্তে লেখাপড়া শেষ করতে পারব। উচ্চশিক্ষা শেষ করে আমিও বসুন্ধরা গ্রুপের মতো অতিদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াব। দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করব। ’

বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।