ঢাকা, শনিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পুলিশের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
পুলিশের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

মাদারীপুর: মাদারীপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তাকে তিন দিন আটকে রেখে হত্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে বলে নির্যাতিত পরীক্ষার্থীর পরিবার অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীর পরিবার। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম সানি বেপারী (১৬)। তিনি কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ফাঁসিয়াতলা এলাকার কুদ্দুস বেপারীর ছেলে এবং ফাঁসিয়াতলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।

জানা গেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি জেলার কালকিনিতে খুন হন কৃষকলীগ নেতা মানিক সরদার। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সীমা খানম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করে। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোবাইল ফোনে কল দিলে সোমবার (১৪ মার্চ) রাত ৯টার দিকে সানিকে সঙ্গে নিয়ে মাদারীপুর জেলার গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে হাজির হন পরিবারের লোকজন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরদিন সকালে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও বুধবার (১৬ মার্চ) এসএসসি পরীক্ষার্থী সানিকে মাদারীপুর পৌর এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত সানিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরই প্রতিবাদে অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকালে শহরের একটি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে সানির পরিবার।

সানির দুলাভাই মহসিন কাজী বলেন, সানিকে আমরা ডিবি পুলিশের কাছে নিয়ে আসি গত সোমবার। পুলিশ বলছে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিবে। কিন্তু তিনদিন আটকে রেখে নির্যাতনের পর আদালতে পাঠিয়েছে। পরে জানতে পারি, ঝুলিয়ে সানিকে অত্যাচারও করা হয়েছে। জোর করে স্বীকারোক্তি নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাছাড়া সানির বয়স বাড়িয়ে তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এসএসসির রেজিস্ট্রেশনে তার বয়স পহেলা জুলাই ২০০৬ সাল দেওয়া আছে। জন্মনিবন্ধনেও তাই দেওয়া। তবুও পুলিশ এসব বাদ দিয়ে সানির বয়স ৩ বছর বাড়িয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। বয়স না বাড়ালে সানিকে কিশোর সংশোধানাগারে রাখা যেত। অথচ কিশোর হওয়ার পরেও সানিকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। পুলিশের এমন কাণ্ড দেখে আমরা হতবাক। ’

সানির ভাবি ইসরাত জাহান লিতুন বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি পুলিশ) এমন ঘটনা ঘটাবে জানলে আমরা সানিকে তাদের অফিসে নিয়া আসতাম না। সানিকে টানা তিনদিন নির্যাতন করায় সমস্ত শরীরে সানির ব্যথা হয়েছে। পরে আদালতে নেওয়ার পরে ব্যথার ওষুধ কিনে দিতে হয়েছে।

জানতে চাইলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক হিমেল রানা বলেন, মানিক সরদার হত্যা মামলায় সানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এরপরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার কোর্টে চালান করা হয়েছে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আল-মামুন বলেন, হত্যা মামলার সঙ্গে সানি জড়িত। তাই তার পরিবার নিজেদের দায় এড়াতে অনেক কথাই বলতে পারে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই আসামি বলেছে, তার বয়স ১৯ থেকে ২০ বছর।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ফাঁসিয়াতলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন কালকিনি উপজেলা কৃষকলীগ নেতা মানিক সরদার। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সীমা খানম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করে। তবে এজাহারে এসএসসি পরীক্ষার্থী সানির নাম নেই বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।