ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টিপকাণ্ডে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে, প্রতিবেদন শনিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২২
টিপকাণ্ডে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে, প্রতিবেদন শনিবার

ঢাকা: টিপকাণ্ডে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তদন্ত শেষ শনিবার (০৯ এপ্রিল) তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ম অনুযায়ী জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছে, অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেকের ওই দিন উল্টো পথে বাইক চালিয়ে আসা নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। তবে অভিযোগকারী নারীর কপালে টিপ পরা নিয়ে অভিযুক্তের মন্তব্যের বিষয়ে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।

এ বিষয়ে শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ কমিশনার ডিসি মো ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য ও কারণ নির্ণয় করেছে। এই ঘটনায় তারা তদন্ত শেষ করেছে। শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছে, অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেককে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ ও ভুক্তভোগী অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও নাজমুল যে পথ ব্যবহার করেছে ওই পথের একাধিক সিসিটিভি ফুটে সংগ্রহ করে সেগুলো বিশ্লেষণ করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

এদিকে, অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত। ২০১১ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পান। নাজমুল তারেকের চাকরী জীবনের এই ১১ বছরে তিনবার বাহিনী থেকে দণ্ডিত হয়েছিলেন। এর মধ্যে দুইবার গুরুদণ্ড ও একবার লঘুদণ্ড পেয়েছিলেন কনস্টেবল মো. নাজমুল তারেক।

টিপকাণ্ডের অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগী শিক্ষিকা ড. লতা সমাদ্দার বাংলানিউউজকে বলেন, এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি। এমন ঘটনা যাতে আর পুনরাবৃত্ত না ঘটে সেটির আশা করছি।

তিনি বলেন, আমার অভিযোগের পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মমর্তারা যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আমি যথেষ্ট আন্তরিকতা প্রকাশ করছি।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে কপালে টিপ পরায় পুলিশ সদস্যে লাঞ্চনার শিকার হন তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ওই পুলিশ সদস্য তার পায়ের ওপর দিয়েই মোটরসাইকেল তুলে দেন। পরে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা।

এদিকে, টিপ কাণ্ড নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেক শনাক্ত করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ঘটনার তদন্তে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে পুলিশ প্রটেকশন বিভাগের একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এবং তেজগাঁও বিভাগের একজন সহকারী কমিশনারকে (এসি) রাখা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, কনস্টেবল নাজমুল তারেকের জন্ম ১৯৯১ সালে। এসএসসি পাসের পর তিনি ২০১১ সালে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন। আগে ঢাকার বাইরে তার পোস্টিং ছিলো। গত ৮ মাস ধরে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২২
এসজেএ/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।