ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিদ্যালয় কক্ষে পোশাক কারখানা!

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২২
বিদ্যালয় কক্ষে পোশাক কারখানা! বিদ্যালয়ে পোশাক কারখানা

সিরাজগঞ্জ: মাসিক তিন হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় ভবনের তিনটি কক্ষ। তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে করা হয়েছে ঘরভাড়ার চুক্তিনামা।

সেই ভাড়া নেওয়া ঘরে গড়ে তোলা হয়েছে পোশাক কারখানা। এতে শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিনষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।  

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়টির পাঠদান কক্ষের পাশে একাডেমিক ভবনের কক্ষেই সকাল-সন্ধ্যা চলছে পোশাক কারখানার সেলাই মেশিন।  

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। গত বছরের ১ ডিসেম্বর টিনসেড এই ভবনটির তিনটি কক্ষ স্থানীয় আব্দুর রহমান বাবলুকে ভাড়া দেন প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে করা হয় ঘরভাড়ার চুক্তিনামা।  

চুক্তিনামায় দেখা যায়, আব্দুর রহমান বাবলু নামের এক ব্যক্তি টেইলারিং ব্যবসা করার জন্য তিন কক্ষ বিশিষ্ট ঘরটি ভাড়া নেন। জামানত দেওয়া হয় ৬ হাজার টাকা। আর মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। ভাড়ার টাকা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অনুকূলে বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।  

ভাড়া নেওয়ার পর সেই কক্ষগুলোতে সেলাই মেশিন স্থাপন করে কিছু জনবল নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি করছেন আব্দুর রহমান বাবলু।  

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফ্যাক্টরি থাকায় পড়াশোনার চরম ক্ষতি হচ্ছে। ফ্যাক্টরির মধ্যে মেশিনের শব্দের পাশাপাশি শ্রমিকদের কথা বলার শব্দে এখানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে।

স্থানীয় আব্দুর রশিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, এই বিদ্যালয়ের কক্ষে গার্মেন্টস করা হয়েছে। এখানে আমার নিজ পরিবারের ছয়জন ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে। কিন্তু ফ্যাক্টরিতে সবসময় লোক সমাগম হয়ে থাকে। এ কারণে সঠিকভাবে পাঠ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়।  

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ঘরটা ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে আমি মৌখিক এবং লিখিতভাবে বলে দিয়েছি গার্মেন্টসটি এখান থেকে সরিয়ে নিতে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের রুম ভাড়া নেওয়া আব্দুর রহমান বাবলু জানান, ডিসেম্বরের দিকে আমি রুমগুলো ভাড়া নিয়েছিলাম। কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে অভিযোগ দিচ্ছে।  

বিদ্যালয়ের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করেই পরিত্যক্ত রুমগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সবার অনুমতি নিয়ে কাজগুলো করা হয়েছে। এতে যদি কারো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে তারা যেন আমাকে অথবা ম্যানেজিং কমিটিকে অবগত করে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছাকমান আলী জানিয়েছেন, বিষয়টি আমি শোনার পর প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটি পরিত্যক্ত রুমগুলো ভাড়া দিয়েছে। তবে এর কারণে যদি শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয় তাহলে কেউ অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।