ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

রাজশাহীতে বাজার মাতাচ্ছে ‘কাঁচাবাদাম’

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
রাজশাহীতে বাজার মাতাচ্ছে ‘কাঁচাবাদাম’

রাজশাহী: ঈদুল ফিতরের আর মাত্র পাঁচদিন বাকি। রমজানের শেষ মুহূর্তে এসে জমে উঠেছে রাজশাহীর ঈদবাজার।

মার্কেট থেকে ফুটপাত সর্বত্রই বেচাকেনার ধুম পড়ে গেছে। আপাতত কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাজশাহীতে তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ ঈদের কেনাকাটায় নেমে পড়েছেন। আলোকজ্জ্বল বিপণী বিতান থেকে শুরু করে রাজপথ; ঈদের বেচাবিক্রি নিয়ে ব্যস্ত সব দোকানিরা।

ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে রাজশাহীতে এখন প্রতিদিন ভোররাত পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকছে। সেখানে সকাল থেকে সাহরি পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা। টানা দুই বছর করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মুখে তাই হাসি ফুটেছে।

রাজশাহীতে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের মানুষের ইদের কেনাকাটায় পছন্দের শীর্ষে রয়েছে আরডিএ মার্কেট এবং সাহেববাজার-গণকপাড়া কেন্দ্রিক ফুটপাত। মার্কেটের মতো ফুটপাতেও সমানভাবে জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। সাহেববাজার ছাড়াও মহানগরীর গৌরহাঙ্গা, শিরোইল, বিন্দু হোটেলের সামনে, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট বাজারেও কেনাকাটা চলছে।

সরেজমিনে এসব দোকান ঘুরে দেখা গেছে- সব ক্রেতাই নিজের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করছেন। এসব দোকানে দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যান চালকরা নিজের ও পরিবারের জন্য পোশাক কিনছেন।

বুধবার দুপুরে রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম গণকপাড়া ফুটপাতের একটি দোকান থেকে মেয়ের জন্য ফ্রক কিনছিলেন। তিনি জানান, তার ছয় বছর বয়সী একটি মেয়ে ও চার বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে তিনি মেয়ের জন্য একটি ফ্রক ও স্কার্ট কিনেছেন। আর ছেলের জন্য জিন্সের প্যান্ট এবং হাফহাতা শার্ট নিয়েছেন। দেড় হাজার টাকার মধ্যেই সব হয়ে গেছে।

ফুটপাত ব্যবসায়ী জামশেদ আলী জানান, এবার ২০ রমজানের পর থেকেই তাদের বিক্রি জমে উঠেছে। এখন সব মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ হাজার টাকার বেচাবিক্রি হচ্ছে। চাঁদরাত পর্যন্ত ব্যবসা এভাবেই চলবে বলে আশা করছেন তিনি।

এদিকে ফুটপাত ছাড়াও গরীবের মার্কেট খ্যাত আরডিএ মার্কেটে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এই মার্কেটে এবার এসেছে মেয়েদের কাঁচা বাদাম ও পুষ্পা নামের পোশাক। এছাড়াও বাজার মাতাচ্ছে ছেলেদের কেজিএফ প্যান্ট। হালের ফ্যাশনে জনপ্রিয়তা পেয়েছে মেয়েদের সারা ও বারিস জামা।

ব্যবসায়ীরা জানান, মহানগরীর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের ভিড় বেশি আরডিএর দোকানগুলোতে। শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি থেকে শুরু করে শিশুদের জামাকাপড়, জুতা সবই মেলে এখানে। বাজারে বাহারি পোশাক এলেও গ্রীষ্মকালে ঈদ হওয়ায় ক্রেতাদের নজর এখন সুতির কাপড়ে। গরমে ছোটদের কাপড়ের চাহিদাই বেশি থাকছে। ফুটপাতের তুলনায় এখানে দাম একটু বেশি। এছাড়া মেয়েদের জন্য থ্রি পিস, ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে এই মার্কেটে।

দশ বছর বয়সী ছেলের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন ফরিদা বেগম নামের এক গৃহিণী। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এবার শিশুদের পোশাকের দাম অনেক বেশি। বলা যায়, ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। দাম এত বেশি হলে আমরা নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষ কেমন করে কিনবো?

একই কথা বলছেন আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এবার সব পোশাকেরই দাম বেশি। এ কারণে দোকানে ভিড় বেশি হলেও বিক্রি কম। ক্রেতারা প্রয়োজন অনুযায়ী পোশাক কিনতে পারছে না। যার তিনটা পোশাক প্রয়োজন তিনি একটা পোশাক নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে মিলন গার্মেন্টসের ম্যানেজার জয়নাল আলী বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ব্যবসা হয়নি। এবার ক্রেতাদের ভিড়ে আবার ব্যবসায় প্রাণ ফিরে এসেছে। তবে দাম বেশি হওয়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের হাত নেই। তারা ঢাকা থেকে পাইকারি দামে পোশাক কিনে এনে বিক্রি করছেন। এরপরও মার্কেটে সব ধরনের পোশাক এখনও ৫০০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকায় মিলছে বলে দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
এসএস/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।