ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সখিপুরে স্বামী-সৎ ছেলের হাতে গৃহবধূ খুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২২
সখিপুরে স্বামী-সৎ ছেলের হাতে গৃহবধূ খুন প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে স্বামী ও সৎ ছেলের হাতে নুরজাহান বেগম (৫০) নামক এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন।  

রোববার (৫ জুন) রাতে সখিপুর থানার সখিপুর ইউনিয়নের নইমউদ্দিন সরদার কান্দি ২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

 

নিহত নুরজাহান বেগম সখিপুর ইউনিয়নের নইমউদ্দিন সরদার কান্দি গ্রামের ফজলুর বেপারীর প্রথম স্ত্রী। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মামুন বেপারী সখিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক।

স্থানীয় ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফজলুর বেপারী প্রথম স্ত্রীকে রেখে দীর্ঘদিন ধরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে কাচিকাটা ইউনিয়নে বসবাস করে আসছেন। কয়েকদিন আগে কাচিকাটার ঘরবাড়ি ভেঙে সখিপুরে চলে আসেন ফজলুর। এরপর থেকেই পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার রাতে ফজলুর তার প্রথম স্ত্রী নুরজাহানকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তিনি ঘর থেকে বের না হওয়ায় ফজলুর, দ্বিতীয় স্ত্রী মোরশেদা এবং তার দুই ছেলে সাগর ও বিল্লাল এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে ফেলে নুরজাহানের। এসময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে বাধা দিলে মিন্টু নামে একজনকে কুপিয়ে আহত করে বিল্লাল। পরে নুরজাহানের ছেলে মামুন এবং মেয়ে জেসমীন ও জামাতাকেও কুপিয়ে জখম করে তারা। পরে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। অবস্থার অবনতি হলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। ঢাকায় যাওয়ার পথে মারা যায় নুরজাহান।  

এ ব্যাপারে নিহতের মেয়ে জেসমিন আক্তার বলেন, মাকে আমার বাবা, সৎ মা ও সৎ ভাইয়েরা সব সময় মারধর করত। আমি ঢাকায় গাজীপুরে চাকরি করি। আমার মা আমাকে বলে, জেসমিন আমাকে সবসময় তোর বাবা, সৎ মা ও সৎ ভাই মারধর করে, তুই আমাকে তোর কাছে নিয়ে যা। পরে আমি রোববার সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি সখিপুরে আসি। রাত ৯টার সময় আমি আমার চাচাদের বাসায় টিভি দেখছিলাম। এসময় মায়ের চিৎকার শুনে ঘরে এসে দেখি মাকে কুপিয়ে মেরে ফেলতেছে তারা। আমি ও আমার স্বামী ছাড়াতে গেলে আমার স্বামীকেও কোপায়। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। আমি আমার বাবা ও ওই নির্মম পশুদের ফাঁসি চাই।

এ ব্যাপারে সখিপুর থানার ওসি (তদন্ত) ওবায়দুল হক বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী, সতিন ও সৎ ছেলেরা মিলে এক নারীকে কুপিয়ে আহত করে পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মামুন বেপারী সখিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।