ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘আদার বেপারীরা আর সাংবাদিক হতে পারবেন না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
‘আদার বেপারীরা আর সাংবাদিক হতে পারবেন না’

রাজশাহী: আদার বেপারীরা আর সাংবাদিক হতে পারবেন না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম। তিনি বলেন, ‘অবস্থা এমন হয়েছে, ইচ্ছা হলেই সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া যাচ্ছে।

কিন্তু আর নয়, কঠোর আইন ও নীতিমালা আসছে। যারা প্রকৃত সাংবাদিক তারাই কেবল এই পেশায় থাকবেন। ’

মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজশাহী সার্কিট হাউসে ‘প্রেস কাউন্সিল আইন ও আচরণবিধি এবং তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ’ শীর্ষক সাংবাদিকদের দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি কথাগুলো বলেন।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম। নিজ বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এখন যে কেউ সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। সাংবাদিকতার নামে সাংঘাতিকতা চলছে। তারা মানুষকে ব্ল্যাক-মেইল করছে। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য অপমানজনক। এ কারণে সাংবাদিক কারা তা নির্ধারণ করা যেমন জরুরি হয়ে পড়েছে, তেমনি নতুন আইনেরও খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ’

হলুদ সাংবাদিকতার রুখতে নতুন আইন হচ্ছে জানিয়ে প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোনো সাংবাদিক অন্যায় করলে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে নতুন আইনে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে এক দিনের জেলের পক্ষপাতী। কারণ, জেলে গেলে তার মনে হবে যে আমার কাজটা অন্যায় হয়েছিল। এই কাজ আর কখনও করা যাবে না। এই আইনটা কেবিনেটে আছে। আশা করছি, আগামী সংসদেই পাস হবে। ’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জানিয়ে বিচারপতি নাসিম বলেন, ‘তিনি সাংবাদিকদের সম্মান দিয়েছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, সাংবাদিকরা এমন শ্রেণির লোক যাদের জন্য তিরস্কারই অনেক বড় শাস্তি। সে কারণে প্রেস কাউন্সিল আইনে কোনো অন্যায় করলে সাংবাদিকদের বেশিরভাগ শাস্তিই হয়ে থাকে তিরস্কার। এটা দোষীর আত্মসম্মানে বাধবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। এখন জেল খেটেও মানুষ বুক ফুলিয়ে চলে। তাই নতুন আইন প্রয়োজন আছে। ’

সাংবাদিকদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এই কাজটা প্রেস কাউন্সিল এবং পিআইবি যৌথভাবে করছে। পিআইবি ইলেক্ট্রনিক্স এবং অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের তালিকা করছে। আর প্রেস কাউন্সিল করবে প্রিন্ট মিডিয়ার। এ জন্য প্রত্যেক প্রিন্ট পত্রিকা থেকে সাংবাদিকদের তালিকা নেওয়া হবে। তবে তালিকায় নাম থাকলেই সাংবাদিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। এটা যাচাই-বাছাই করা হবে। সাংবাদিকদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে গ্রাজুয়েশন। তবে কারও যদি পাঁচবছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে নিয়োগপত্রসহ, তাহলে তিনি তালিকাভুক্ত হবেন। তালিকাভুক্ত হয়েই যে যা খুশি করবেন তাও হবে না। প্রত্যেক ছয়মাস পর পর তার কাজকর্ম ভেরিফিকেশন করা হবে।

কর্মশালা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আশরাফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. শাহ আলম।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ৪৪ জন সাংবাদিকের হাতে সনদপত্র তুলে দেন প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
এসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।