ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্যানেল-ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে গণঅনশনে অসুস্থ ১০

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
প্যানেল-ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে গণঅনশনে অসুস্থ ১০

ঢাকা: প্যানেল-ভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে নিয়োগ বঞ্চিত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের গণঅনশন কর্মসূচিতে ১০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।  

মঙ্গলবার (১৪ জুন) জাতীয় জাদুঘরের সামনে চলা এ অনশনের দশম দিন চলছে।

গণঅনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ১০ জন। তারা হলেন- আফসার উদ্দিন, মোহাম্মদ আনোয়ার তোহা, আল মমিন, মাহমুদা আক্তার, শরিফুল আলম, শাহজাদী, সোমা, আব্দুল বাসেত, গুল রখ মনি, হাবিবুর রহমান।

অনশনের শিক্ষকরা তিন দফা দাবি পেশ করেছেন। দাবিগুলো হলো- এনটিআরসির নিবন্ধিত সনদধারীদের প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে, বৈধ সনদধারী চাকরি প্রত্যাশীদের নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হবে, এক আবেদন প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে এবং ইনডেক্সধারীদের প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত না করে আলাদা বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।

গণঅনশনে প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জি. এম. ইয়াছিন বলেন, তিন দফা দাবিতে গণঅনশনের সপ্তম দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সরকার, শিক্ষা মন্ত্রালয় বা এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে কেউ অনশনস্থলে আসেন নাই বা কোনো মাধ্যমে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নাই। ইতোমধ্যে আমাদের ১০ জন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং একজনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।

তিনি আরও বলেন, ১১৫৬ জন জাল সনদধারী ভূয়া শিক্ষককে সরকার নিয়োগ দিয়েছিল যাদের সনদ ভূয়া প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বেতন ভাতাসহ সমুদয় অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে। অথচ আমরা এনটিআরসিএ কর্তৃক বৈধ সনদপ্রাপ্ত হয়ে নিয়োগের দাবিতে রাজপথে থাকতে হচ্ছে।

এ সময় প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক রাইহান কবির রনো বলেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এমন একটি প্রতিষ্ঠান যারা যোগ্য প্রার্থী বাছাই করার পর তাঁদেরকে নিয়োগ না দিয়ে আবার প্রার্থী খোঁজে এবং পরীক্ষা ফির নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।  

তিনি বলেন, শিক্ষক হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য প্রথমে আমারা স্কুল বা কলেজ ক্যাটাগরিতে আবেদন করি। একটি আবেদনের খরচ ৩৫০ টাকা। আবার শিক্ষক হিসেবে চূড়ান্ত উত্তীর্ণ হওয়ার পর, অর্থাৎ জাতীয় মেধা তালিকায় স্থান করে নেওয়ার পর আবার নিয়োগের জন্য নতুন করে আবেদন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে আবেদন ফি ১০০ টাকা। অর্থাৎ, বাংলাদেশে একমাত্র চাকরি এই বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ যেখানে দুই বার আবেদনে টাকা নেয় সরকার।  

এনটিআরসিএ শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রত্যেক নিবন্ধনধারীর কাছ থেকে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা আলদা ফি নির্ধারণ করেছে এবং যত খুশি তত আবেদনের ব্যবস্থা চালু করে বেকার নিবন্ধনধারীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বেকারদের সর্বস্বান্ত করছে বলে দাবি করে লন রাইয়ান কবির রনো।  

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র গত আড়াই বছরে এনটিআরসিএ নিয়োগ প্রত্যাশী নিবন্ধিত বেকারদের কাছ থেকে আবেদনের নামে মোট ২০৩ কোটি টাকা আদায় করেছে। অথচ এই সময়ে নতুন করে একজনও নিয়োগ দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।

প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি আমির হোসেন বলেন, ২০০৬ সালে প্রকাশিত গেজেটের আলোকে পূর্বের নিবন্ধিত শিক্ষকদের নিয়োগের কোনো সুরাহা না করে, ২০১৫ সালে গেজেট অনুযায়ী এককভাবে নিয়োগ সুপারিশের উদ্দেশ্যে ১৩তম পরীক্ষা নেয় এনটিআরসিএ।

প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সদস্যররা ছাড়াও শতাধিক নিবন্ধিত শিক্ষক গণঅনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২ 
এনবি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।