নেত্রকোনা: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও খালিয়াজুরী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চার উপজেলার ৬৩টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ। বন্যায় গ্রামীন সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ও বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়ায় বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষাধিক মানুষ। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় প্রশাসন বন্যা দুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩২৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। এ সব আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ১৫ হাজার ৯২৩ জন আশ্রয় নিয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনা জেলার কংশ নদীর জারিয়া পয়েন্টে পানি ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, কলমাকান্দা উপজেলার উব্দাখালি ও মহাদেও নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খালিয়াজুরীর ধনু নদের পানি ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৫৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, দুর্গাপুর পয়েন্টে ৩১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ও ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী সমন্বিতভাবে নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পুনর্বাসিত মানুষের সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি করেন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী, খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন খন্দকার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যবৃন্দ।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বলেন, নেত্রকোনায় বন্যা দুর্গতদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১৩ লাখ নগদ টাকা, ৩৩৩ মেট্রিক টন চাল ও ৪ হাজার ৯৫০ প্যাকেট বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বন্যা দুর্গত লোকজনের মাঝে ১৩১ মেট্রিক টন চাল, ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা ও ২ হাজার ৩শ শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
আরএ