ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্বপ্নের পদ্মা সেতু: যোগাযোগে আসবে নতুন দিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
স্বপ্নের পদ্মা সেতু: যোগাযোগে আসবে নতুন দিন

ঢাকা: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতুকে ঘিরে মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন।

রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়ক পথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে এই সেতুর মাধ্যমে। যোগাযোগে নতুন দিন আনবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

বিশিষ্টজনদের মতে, প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুটি উদ্বোধনের সঙ্গে-সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে নতুন দিগন্ত। পাশাপাশি খুলে যাবে এ অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বহুমুখী অর্থনৈতিক দ্বার। পাল্টে যাবে সামগ্রিক চেহারা। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের, কমে আসবে বেকার সমস্যা। বদলে যাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের ভাগ্য। গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের হাতের নাগালে চলে আসবে রাজধানী ঢাকা।

ফেরি ঘাটে ভোগান্তি, ধীরগতির নদী পারাপার, ঘন কুয়াশা, ঝড় ও দুর্যোগে যাত্রা বাতিল এবং বেশি স্রোত অথবা নদীর নাব্যতাসংকটে ফেরি অচল; এসব ভোগান্তি থেকে এবার মুক্ত হবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো। কমবে ঈদ কিংবা বড় কোনো ছুটিতে বাড়ি ফেরার ভোগান্তি। সেতুটি দিয়ে ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এর মাধ্যমে দেশের প্রধান ১০টি মহাসড়কের ৯টিই ফেরি পারাপারের ভোগান্তিমুক্ত হবে (ঢাকা থেকে পাটুরিয়া হয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াত বাদে)। দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় আসবে নতুন দিগন্ত।

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে বরিশাল যাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টায়, খুলনা ৩ ঘণ্টায় আর ফরিদপুর যেতে সময় লাগবে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। ৬ কিলোমিটারের পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যাবে মাওয়া প্রান্তে। এরপর ৪০ মিনিটের মধ্যে গুলিস্তান কিংবা যাত্রাবাড়ী।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে জানান, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ফলে সড়কপথে বরিশাল থেকে ৩ ঘণ্টায় যাওয়া যাবে রাজধানী ঢাকা। বদলে যাবে পদ্মার দক্ষিণ পাড়ে থাকা জেলাগুলোর মানুষের ভাগ্য।

বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী খান জানান, পদ্মা পাড়ি দিতে ফেরিঘাটে ট্রাককে সাধারণত পাঁচ-সাত ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হয়। মাঝেমধ্যে লাগে দুই থেকে তিন দিন। অপেক্ষা মানেই চালক-সহকারীর বাড়তি খরচ। পণ্যের মালিকের ক্ষতি। এখন ৬ মিনিটে পদ্মা নদী পার হওয়া যাবে। পরিবহন খাতের মানুষ হিসেবে এটা বড় পাওয়া।

এদিকে, পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উন্নয়নমূলক মহাকর্মযজ্ঞ চলছে শরীয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবহন ব্যবসায়ীরা চালু করবেন নতুন নতুন গাড়ি। রাজধানী থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ ঘণ্টায় পৌঁছানো যাবে দক্ষিণের ২১ জেলা। বেনাপোল স্থল বন্দর, ভোমরা স্থল বন্দর, মংলা বন্দর, পায়রা বন্দর পৌঁছানো যাবে সহজেই। এ ছাড়াও, কুয়াকাটা-সুন্দরবনসহ পর্যটনখাতেও সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন জানান, স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে বরিশালসহ দ্বীপ জেলা ভোলা’র অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। আরও সহজ হবে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ। দ্বীপজেলা ভোলা হবে দেশের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক জেলা। পাশাপাশি পর্যটন শিল্পেও আনবে অপার সম্ভাবনা।

১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যখন পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়, তখন থেকেই স্বপ্ন দেখছে মানুষ। এবার ঘুচছে তাদের স্বপ্নের অপেক্ষা।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
এইচএমএস/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।