ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কোভিড মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
কোভিড মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কোভিড-১৯ অতিমারী নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনের যৌথ-সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত কোভিড-১৯ গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।

বুধবার (২০ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি মোকাবিলার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার। যখন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের প্রয়োজন, ঠিক সে সময় কোভিড-তাড়িত অর্থনৈতিক অস্থিরতার ভীতিতে বিনিয়োগকারীরা এসব দেশ থেকে তাদের তহবিল সরিয়ে নিচ্ছেন। এর ফলে উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলিতে তহবিল ঘাটতির সৃষ্টি হচ্ছে।  

এসব দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহযোগিতা করার জন্য তিনি উন্নত দেশসমূহ এবং বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে স্বাস্থ্যসেবাসহ অর্থনীতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে রেয়াতি ঋণের প্রবাহ বাড়ানোর আহ্বান জানান; এবং স্বল্প-কার্বন ভিত্তিক উন্নয়নে অর্থায়ন বাড়ানো এবং সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তরের উপর জোর দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোভিড ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সাফল্যের মূলে রয়েছে জীবন রক্ষার পাশাপাশি জীবিকার সংস্থান অব্যাহত রাখা, অতিঝুঁকিপূর্ণদের জন্য বিশেষ সহায়তার ব্যবস্থা করা এবং লাগসই প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে অতিমারীর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির দ্রুত পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করা। ২৩ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থনীতিকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছে; যার ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬.৯৪ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়সীমার আগেই মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। মৃত্যুর হার বৈশ্বিক গড়ের থেকে নীচে রয়েছে। ২০২২ সালের মে মাসে নিক্কেই কোভিড-১৯ পুনরুদ্ধার সূচকে ১২১ টি দেশের মধ্যে পঞ্চম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ১ম স্থান অর্জন কোভিড ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অসামান্য সাফল্যের প্রতিফলন।

ড. মোমেন বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কোভ্যাক্স ব্যবস্থার সাফল্যই প্রমাণ করে বৈশ্বিক সঙ্কট মোকাবিলায় বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা কতটা কার্যকর। তিনি অতিমারী মোকাবিলায় কয়েকটি বৈশ্বিক কার্যক্রমের ওপর জোর দেন, যার মধ্যে রয়েছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করার মাধ্যমে ভ্যাক্সিনকে সুলভ ও সহজলভ্য করা; বাংলাদেশের মতো তুলনামূলকভাবে উন্নত ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং ভিতসমৃদ্ধ বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলোকে মেধাসত্ত্ব অধিকার (আইপিআর) এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের উপযুক্ত বিধানের মাধ্যমে ভ্যাকসিন, টেস্টিং সামগ্রী এবং প্রতিষেধক তৈরিতে তাদের নিজস্ব সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করা; বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং উন্নত দেশগুলোর সহায়তায় কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো মোকাবেলাসহ জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলির সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া; এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা কাঠামোকে চলমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করতে নকশা প্রণয়নে লৈঙ্গিক ও ভৌগলিক ভারসাম্যের ভিত্তিতে বিশ্ব নেতাদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল গঠন করা।

জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেটের যৌথ পরিকল্পনায় আয়োজিত এই পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সভার লক্ষ্য হচ্ছে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা জোরদার করতে বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের একত্রিত করা। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট এবং ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর বিশ্বের ১৪টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এবং বেশ কয়েকটি দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
টিআর/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।