ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কক্সবাজারে বাফুফের টেকনিক্যাল সেন্টার বাতিলের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
কক্সবাজারে বাফুফের টেকনিক্যাল সেন্টার বাতিলের দাবি ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) “টেকনিক্যাল সেন্টার” নির্মাণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০ একর বনভূমি বরাদ্দ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং কক্সবাজারের সব বনভূমি রক্ষার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

বুধবার (২০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ১১টি সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত নিবন্ধ পাঠ করেন- গ্রীন কক্সবাজার সংগঠনের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের বনভূমি রক্ষায় রয়েছে সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি। রয়েছে আইন, নীতি,আদালতের নির্দেশ ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্দোবস্তযোগ্য পতিত জমি ও অকৃষি খাস জমি থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বনভূমিকে উন্নয়নের নামে বনবিরুদ্ধ ব্যবহারের জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে, তা বোধগম্য নয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সমাজকর্মী খুশী কবির বলেন, কক্সবাজারের বনভূমির সঙ্গে শুধু গাছপালা না, অন্যান্য বন্যপ্রাণী, বায়ুদূষণ, পরিবেশ দূষণের মত বিষয়গুলো জড়িত। আমরাও ফুটবলের উন্নয়ন চাই। তবে, সেটা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে নয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রেখে নাগরিক আন্দোলন নেতা ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, বনকে টিকিয়ে রাখাই বড় উন্নয়ন। পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোনো রাজধানী নেই যেখানে ৫টি নদী আছে। ঢাকায় আছে৷ এ ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি থাকেন। তবুও এ নদীগুলোকে আমরা পরিশোধন করতে পারছি না। আমরা দুর্ভাগা যে আমরা বনভূমি তথা এ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে পারিনি। কক্সবাজারের বায়ুদূষণ অন্যান্য সব জায়গার চেয়ে বর্তমানে বেশি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বন ও পরিবেশ রক্ষা সরকারের একটি পবিত্র দায়িত্ব। যেন-তেনভাবে যখন বন বরাদ্দ করা হয়, সেটি তো সংবিধানেরও লংঘন৷ এমন তো না যে, কক্সবাজার ছাড়া আর কোনো জায়গায় সরকারি জমি নেই।

ফুটবলের যে মৌলিক নীতি, ‘ফেয়ার প্লে’ সেটিও তো বাফুফে লংঘন করছেন। বাফুফে ফিফার দোহাই দিচ্ছেন। ফিফা তো পরিবেশ ধ্বংস করে সেন্টার নির্মাণের নির্দেশ দেয় নি। বলতে চাই, বাফুফের সেন্টার নির্মাণের অনুমোদনের পর ফিফা'র অর্থায়ন বন্ধের মত বিব্রতকর পরিস্থিতির কথা তারা মাথায় রাখবে। আমরা সেটি মনে রাখার কথা বলব।

র‍্যামন ম্যাগসেস পুরষ্কারপ্রাপ্ত পরিবেশকর্মী বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান বলেন, কক্সবাজারের বনটা হল একটা প্রাকৃতিক বন। আপনি সেটি ধ্বংস করলে আর তৈরি করতে পারবেন না। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আপনি কি রেখে যাচ্ছেন? ইতোমধ্যেই দেখা গেছে, অন্যান্য জেলার তুলনায় ঢাকার তাপমাত্রা এর আশেপাশের জেলাগুলোর তুলনায় ২ ডিগ্রী বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধুমাত্র সবুজ না থাকার কারণে। আমরা এমনিতেও ২৫ শতাংশ বনভূমির যে মৌলিক শর্ত তার ধারে কাছেও নেই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- শরীফ জামিল, সাধারণ সম্পাদক বাপা, গোলাম মনোয়ার কামাল, প্রধান নির্বাহী, আসক, রওশন জাহান মনি, উপ-প্রধান নির্বাহী, এএলআরডি, এসএম রেজাউল করিম, আইন উপদেষ্টা, ব্লাস্ট, ইয়েসের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহীম খলিল মামুন, কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সেইভ দ্যা কক্সবাজারের সভাপতি আনছার হোসেন  ও অন্যান্য সামাজিক এবং পরিবেশ রক্ষা সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
এমকে/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।