ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মা সেতুর সব সুবিধা নিতে পরিকল্পনা জরুরি: স্পিকার

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২২
পদ্মা সেতুর সব সুবিধা নিতে পরিকল্পনা জরুরি: স্পিকার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, পদ্মা সেতু থেকে সব ধরনের সুবিধা নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা নিতে হবে। এ লক্ষ্যে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের লেখা ‘আমাদের অর্থে আমাদের পদ্মা সেতু’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে চন্দ্রাবতী একাডেমি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।  

তিনি বলেন, এই বইয়ের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পদ্মা সেতুকে জানার সুযোগ পাবো। এই বইটির মাধ্যমে তথ্য উপাত্ত ছড়িয়ে যাবে। এটা খুব ভালো উদ্যোগ।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাঙালির আত্মমর্যাদার নিদর্শন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃড়তা ও অদম্য সাহসের জন্য পদ্মা সেতু হয়েছে। যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। পদ্মা সেতুর চ্যালেঞ্জও নিয়েছেন তিনি। এটা শুধু ইট পাথরের সেতু নয়। এই সেতু আমাদের আবেগ ও গৌরবের অধ্যায়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ইকোনমিক লাইফ লাইনে পরিণত হয়েছে। তবে পদ্মা সেতু থেকে সব ধরনের সুবিধা নেওয়ার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, পদ্মা সেতুর ওপরে বই প্রকাশ করে আমরা খুশি। তবে এই বইতে দু'জনের লেখা নিতে পারিনি। একজন জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং অপর জন আমার বড় ভাই আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই, বিদেশিদের পরামর্শ সব সময় সঠিক নয়। বিদেশিরা কোনো কিছু বললেই লাফালাফি বন্ধ করতে হবে। পদ্মা সেতু থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। এছাড়া তারা (বিদেশি) বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। তবে প্রাইভেসির নামে কোনো তথ্য দেওয়া হয় না।

অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দিল, তখন অনেকেই আশঙ্কায় ছিলেন, এটা বোধ আর হবে না। তবে সেই সেতু তৈরি সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে জাপানে গিয়ে এই সেতুর জন্য ঋণ চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই ঋণ হয়নি। এখন সেই সেতু হয়েছে। এটা শুধু সেতু নয়, এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত করতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছিলাম, এটা আপনারা করতে পারবেন না। আমাদের আইন অনুযায়ী আমরা তদন্ত করবো। পরে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করে। কানাডার আদালতও পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি। বিশ্বব্যাংকের ঋণ না পাওয়ায় আমাদের ‘শাপে বর’ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষায় আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পদ্মা সেতুতে শুধু মাত্র বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা নিয়ে আলাদা একটি গবেষণা হতে পারে। তিনি এ বিষয়ে একটি গবেষণা ও প্রকাশনার প্রস্তাব দেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এই বইটি রেফারেন্স হিসেবে কাজ করবে। পদ্মা সেতুর সব কিছু হয়তো বলা যাবে না। অনেক বিষয় বিহাইন্ড থেকে যাবে। বইটি প্রকাশ করার জন্য ড. মোমেনকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু তৈরিতে গভর্নেন্স ও ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি। এটা ঠিক ছিল বলেই পদ্মা সেতু সম্ভব হয়েছে। আর এই সেতু এতো স্বচ্ছভাবে তৈরি হয়েছে যে, এটা নিয়ে কোনো নেতিবাচক কথা বলার সুযোগ নেই।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। এতে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. শামসুল হক, চন্দ্রাবতী একাডেমির স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান কাজল।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২২
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।