ফরিদপুর: জমির নিয়ে বিরোধের জেরে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বশির হাওলাদার (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে জখমের পর মৃত ভেবে হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মালিগ্রাম কলাতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, হামলাকারীরা বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে মৃত ভেবে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যায়।
আহত বশির হাওলাদারের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত ইন্টার্নি চিকিৎসক কামাল হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় পাই। তার হাতে ও পায়ের হাড় ভাঙ্গা। তার চিকিৎসা চলছে।
বশিরের স্ত্রী রাশেদা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমার স্বামী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরেছিলেন না। রাত থেকেই আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার কোনো সন্ধান পাইনি। বুধবার সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুর হাসপাতালে থেকে এক নারী আমাকে ফোন দিয়ে বলেন- ‘আপনার স্বামী পাঁচ তলায় ভর্তি, তার অবস্থা ভাল না, আপনারা দ্রুত আসেন। ’ তখন আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বললে সে বলে তাকে মেরে হাসপাতালে ভর্তি করে রেখে গেছে।
আহত বশির হাওলাদার বলেন, রাতে আমি ঘর থেকে বের হলে আমাকে রেজাউল মাতুব্বরের ছেলে শাহিন মাতুব্বর ও সাদ্দামসহ ৬-৭ জন আমার মুখ চেপে পাশের মাঠে নিয়ে যায়। এরপর শাহিন আমাকে রড, ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। আমি তখন তাদের জীবন ভিক্ষা চাইলেও তারা শুনেনি। এ সময় ওরা ফোন করে আব্দুল মজিদ ব্যাপারীর ছেলে শাহাবুদ্দিন ডেকে আনেন। শাহিন এসময় বলে- ‘ওই মরে গেছে এখন কী করবি। চল পালাই। ’ তখন শাহাবুদ্দিন বলে না ওরে হাসপাতালে দিয়ে আসি। এরপর আমার আর জ্ঞান ছিল না। বুধবার সকালে জ্ঞান ফিরলে আমি পাশের বেডের একজনকে আমার স্ত্রীর ফোন নম্বর দিয়ে আমার অবস্থা জানাতে বলি।
আহত বশির হাওলাদারের ছেলে রাশেদ হাওলাদার বলেন, আমার ভগ্নিপতি আনু মাতুব্বরের সঙ্গে প্রতিবেশী ছবেদ আলী ও রেজাউল মাতুব্বরের জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ চলছিল। রেজাউল মাতুব্বর ও ছবেল আলী তাদের ওয়ারিশের কিছু মাঠের জমি বিক্রি করে যা আমার ভগ্নিপতির জমির লাগোয়া। রেজাউল ও ছবেল আলীকে তাদের বিক্রিত জমি বুঝিয়ে দেওয়া সময় আমার ভগ্নিপতি জমির সীমানা মেপে নির্ধারণ করে দিতে বলেন। কারণ তারা তাদের অতিরিক্ত জমি যা ভগ্নিপতির তা তারা জোর করে দখল করতে চাচ্ছিল। গত রোববার এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সে ঘটনায় দু’পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হন। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাতে রেজাউল মাতুব্বরের ছেলে শাহিন, সাদ্দাম, শাহাবুদ্দিন ও ছবেদ আলী মিলে আমার বাবাকে রাতের আধারে তুলে নিয়ে হত্যাচেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আহত বশিরের পরিবারকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২২
এসআরএস