ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খাদ্যের অভাব থেকে বাঁচতে এখনই সচেতন হওয়ার আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২২
খাদ্যের অভাব থেকে বাঁচতে এখনই সচেতন হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: বাংলাদেশে যেন খাদ্যের অভাব দেখা না দেয়, সেজন্য এখনই সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

সোমবার (১৭ অক্টোবর) ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আবারও অনুরোধ করছি, কোনো খাদ্যের অপচয় নয়, খাদ্য উৎপাদন বাড়ান, যার যেখানে যতটুকু জমি আছে, উৎপাদন বাড়ান। যদি কোনো পতিত জমি থাকে, সেটাও চাষের আওতায় নিয়ে আসেন, তাহলে দেখবেন দেশ কখনো পিছিয়ে থাকবে না। ’

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে যে দুর্যোগের ঘনঘটার আভাস আমরা পাচ্ছি, তা থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষিত করুন। আমি বিশ্বাস করি, সবার প্রচেষ্টায় এটা করা সম্ভব। ’

‘আমরা সব ধরনের ভর্তুকি দিয়েই কৃষি ব্যবস্থাটাকে সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। করোনা মহামারি, বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরে খাদ্য উৎপাদন এবং খাদ্যপ্রাপ্তিতে বিশ্বব্যাপী যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সে সমস্যা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখতে হবে। আপনারা দেখেছেন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আজ বলছে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে, খাদ্যের অভাব দেখা দেবে,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশে যেন কোনো রকম খাদ্যের অভাব দেখা না দেয়, সেজন্য এখন থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে, যে জমি আছে, সবাই সেখানে কিছু উৎপাদন করুন। এখন তো ছাদ কৃষি থেকে শুরু করে নানা ধরনের ব্যবস্থা আছে, সুতরাং যে যেভাবে পারেন, উৎপাদনের দিকে মনোযোগী হোন, সাশ্রয়ী হোন। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী যদি দুর্ভিক্ষ হয়, তাহলে বাংলাদেশে যেন খাদ্যের অভাব না থাকে, সেই ব্যবস্থাটাই আমাদের করতে হবে। ’

খাবার নষ্ট না করে সংরক্ষণ করার বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বলব, সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, অপচয় বন্ধ করা জরুরি। বেঁচে যাওয়া খাবার ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে পুনরায় খাওয়া যায়। এ বিষয়গুলোর দিকেও সবাইকে নজর দিতে হবে। আমরা উৎপাদন করে সেগুলো যদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে না পারি, তাহলে অযথা নষ্ট হবে। ’

প্রক্রিয়াজাত শিল্পায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প যাতে গড়ে ওঠে, তার ওপর আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা শুধু নিজেরাই খাদ্য গ্রহণ করবো না, বরং প্রক্রিয়াজাত করে তা রপ্তানি করে যাতে অনেক দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণেও সহায়তা করতে পারি, সেটা মাথায় রেখে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। ’

যেসব পণ্য আমদানি করতে হয়, সেসব পণ্য উৎপাদনে বেশি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেসব পণ্য এখনো আমাদের আমদানি করতে হয়, যেমন- ভোজ্য তেল অথবা ভুট্টা, গম, এগুলোর দিকে আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। পেঁয়াজের সমস্যা ছিল, পেঁয়াজ আমরা এখন উৎপাদন করছি। এখন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে হবে। ঠিক সেভাবে ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রেও তেল বীজ উৎপাদন করা এবং সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি মনে করি, এটা খুব কঠিন কাজ হবে না। আমাদের কৃষকদের একটু উৎসাহিত করলে আমরা ভোজ্য তেলেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব, কারো ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না আমাদের। এ মাটি এবং মানুষ আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। ’ 

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে উপস্থিত থেকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও সাবেক কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২২
এমইউএম/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।