ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সাভারে বেড়েছে স্বাভাবিক প্রসবের হার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
সাভারে বেড়েছে স্বাভাবিক প্রসবের হার

সাভার, (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় নারী ও শিশু নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গত কয়েকবছর ধরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে (সিজার) সন্তান প্রসবের প্রবণতা কমিয়ে আনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক প্রসবের গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

নানা ধরনের সচেতনতা তৈরি ও পদক্ষেপের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের হারও বৃদ্ধি করেছে।

নারী ও শিশু হাসপাতালটির স্বাভাবিক প্রসব কার্যক্রমে সফলতা পাওয়ায় গত বছরের আগস্টে প্রতিষ্ঠানটির পাশে দাঁড়িয়েছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। এ উদ্যোগের আওতায় আসার পর যেখানে ২০০০ সালে সিজারিয়ান অপারেশনের হার ছিল ৫৮ থেকে ৭৩ শতাংশ। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সে হার দাঁড়িয়েছে ৩৭ শতাংশে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় নারী ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী পরিচালক (সিইও) ড. দবির উদ্দিন আহমেদ, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর খোরশেদ তালুকদার, হাসপাতালটির গাইনি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ফেরদুসি বেগম ও প্রফেসর আনজুম আরা।

২০১৮ সালের এক পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি টেনে তারা জানান, আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নালের হিসেবে অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশে সিজারিয়ান অপারেশনের হার ৬৭ শতাংশ। এটি নিয়মিত বেড়ে চলছে। কোনো সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ধরে নেওয়া যায় চলতি বছরে এই হার ৮০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ হার কমিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল।

২০১৭ সালে দুই হাজার ডেলিভারির মধ্যে সিজার করা হয় ৫৮ থেকে ৭৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ সালে হাসপাতালের উদ্যোগে ১১টি ইটারভেনশান, প্রসূতি চিকিৎসক, নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ও মায়েদের কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার ২০১৬ সালের ৬৮ শতাংশ থেকে ২০১৮ সালে ৪২ শতাংশে এ নেমে আসে। এ পরিসংখ্যানে অনুপ্রাণিত হয় বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। পরে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নারী ও শিশু হাসপাতালকে প্রধান সহযোগী ও আরও সাতটি হাসপাতালকে যুক্ত করে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে দুই বছর মেয়াদী একটি গবেষণা প্রকল্প চালু করা হয়।

হাসপাতালগুলো হল- আশুলিয়ার নারী ও শিশু কেন্দ্র হাসপাতাল (সিডব্লিউসিএইচ), ঢাকার মাতুয়াইলের শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (আইসিএমএইচ), কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (জেআইএমসিএইচ), টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী মহিলা মেডিকেল কলেজ (কেডব্লিউএমসি), ঢাকার আজিমপুরের মেটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ইন্সটিটিউট (এমসিএইচটি), মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (এমইএসটিসি), মিরপুর-১ এর অবস্ট্রেট্রিকাল অ্যান্ড গাইনোকলজিকাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) হাসপাতাল-১ ও মিরপুর-১৩ এলাকার অবস্ট্রেট্রিকাল অ্যান্ড গাইনোকলজিকাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) হাসপাতাল-২।

এসব হাসপাতালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ১৩টি বিষয় নিয়ে প্রকল্প চলমান রেখেছে। প্রকল্পের আওতায় শুরুতেই প্রসূতি ডাক্তার ও নার্সদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ১৩টি বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সকল হাসপাতালে সিটিজি যন্ত্র, ডপলার ম্যাশিন, ভেন্টোজ ম্যাশিন, ম্যানিকুইন, লেবার বেড ও ওয়র্মারসহ স্বাভাবিক প্রসবের জন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।

গত এক বছর ধরেই স্বাভাবিক সন্তান প্রসবকে উৎসাহিত করার ফলাফলেরও দেখা মিলেছে। সহযোগী সকল হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রবণতা নিম্নমুখী দেখা যাচ্ছে। শুধু নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ২০২২ সালের হিসাবেই দেখা যায় সিজারিয়ান অপারেশনের হার বর্তমানে ৩৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, ২৩ অক্টোবর ২০২২
এসএফ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।