ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফারদিনের দাফন শেষে বাবার দাবি, হত্যা পূর্বপরিকল্পিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২২
ফারদিনের দাফন শেষে বাবার দাবি, হত্যা পূর্বপরিকল্পিত

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) মাগরিবের নামাজের পর ফতুল্লার দেলপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে দেলপাড়া কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এসময় এলাকাবাসী ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকায় বুয়েটে নিয়ে যাওয়া হয় ফারদিনের লাশ। সেখানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বুয়েটের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। পরে সেখানে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা।  

এরপর বেলা ৩টায় লাশ নেওয়া হয় ডেমরা কোনাবাড়ির ভাড়াবাড়িতে, যেখানে ফারদিন থাকতেন। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা ফারহানা ইয়াসমিন। বার বার মূর্ছা যেতে যেতে তিন বলতে থাকেন, ২৫ বছর ধরে তিলে তিলে মানুষ করে গড়ে তোলা তার স্বপ্ন ফারদিন হত্যার বিচার চান তিনি।

পরে সেখানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন এলাকাবাসী ও স্বজনরা। ছিলেন সহপাঠী ও বুয়েটের অনেক শিক্ষার্থীও।

গত ৪ নভেম্বর রাতে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বান্ধবীকে বাসায় যাওয়ার জন্য এগিয়ে দেন ফারদিন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন তিনি। এরপর ০৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত দুইদিন আগে ওই ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে রামপুরা থানায় একটি নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। তার লোকেশন আমরা ট্রেস করেছি। তার বান্ধবীর বাসার আশপাশে ওই ছেলের লোকেশন পাওয়া যায়। পরে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়।  

এদিকে নিখোঁজের পর বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ফারদিনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে ইতোমধ্যে বন্ধু-বান্ধবিসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’-এর সম্পাদক ও প্রকাশক ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন। তার মা ফারহানা ইয়াসমিন গৃহিণী। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলায় তাদের গ্রামের বাড়ি। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন ফারদিন। তার মেজ ভাই আবদুল্লাহ নূর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছোট ভাই তামিম নূর এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।

ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানার দাবি, এটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।  

তিনি বলেন, পড়াশোনায় মেধাবী ফারদিন এসএসসি ও এইচএসসিতে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছিল। গবেষণায় আগ্রহ ছিল তার। সে নিজের ইচ্ছায় বুয়েটে ভর্তি হয়েছিল। আমরা ওকে স্বাধীনভাবে পড়াশোনা করতে দিয়েছি। যেহেতু আমি সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলাম, তাই খুব একটা সচ্ছল ছিলাম না। ফারদিন নিজে টিউশনি করত। নিজের পড়াশোনা, পড়ানো, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আসা-যাওয়া ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২২
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।