জয়পুরহাট: ‘কাটিয়া আনোরে ধান, আগোনে হবে নবান, নয়ালী ধানের ক্ষীর পিঠা ও পাকান’ -এ স্লোগানে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় উদযাপিত হয়েছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব।
এ উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে কালাইয়ের পাঁচশিরা বাজারে বসে নানা প্রজাতির মাছের মেলা।
মেলায় রুই, কাতলা, চিতল, বাঘাইড়, বোয়াল, সিলভার কার্পসহ নানা প্রজাতির মাছ এনেছিল বিক্রেতারা। ভোর থেকেই এসব মাছ নিয়ে সারি বেধে দোকান নিয়ে বসে মাছ বিক্রেতারা। মাছ ব্যবসায়ীরা দাম হাঁকছেন আর ক্রেতারা দরদাম করছেন। ৩ কেজি থেকে শুরু করে ১৯ কেজি ওজনের মাছ উঠেছে মেলায়। লোকজনও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনেছেন মাছ। এদের মধ্যে অনেকেই আবার মেলা দেখতে এসেছেন ।
মেলায় অংশ নেন কালাই উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর, আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন ও কালাই পৌরসভার শতাধিক গ্রাম-মহল্লার মানুষ। মেলাকে কেন্দ্র করে মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়।
মেলায় মাছ কিনতে আসা হারুঞ্জা গ্রামের আজমত আলী বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মাছের দাম একটু বেশি। তবে যাই হোক না কেন এই মেলা থেকে বড় একটি কাতলা মাছ কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।
রাকিবুল নামের এক জামাই বলেন, মেলায় বড় বড় মাছ দেখে অনেক ভালো লেগেছে। তাই দেখে শুনে ১০ কেজি ওজনের একটি বিগ হেড মাছ কিনেছি।
মাছ বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, এই মেলার জন্য এলাকার বিভিন্ন পুকুর ও নদী থেকে মাছ সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। মেলাকে লক্ষ্য করে চলে মাছ ধরার উৎসব। এবার ১৯ কেজি ওজনের একটি ব্লাড কার্প মাছ নিয়ে এসেছিলাম। সেটি এক জনের কাছে বিক্রি করি ১৫ হাজার টাকায়।
আরেক মাছ বিক্রেতা বাদশা মিয়া বলেন, আমি প্রতি বছরই এ মেলায় মাছ নিয়ে আসি। বাজারের তুলনায় মেলায় মাছের দাম বেশি হলেও সবাই আনন্দের সঙ্গে কেনেন।
কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন বলেন, এই মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী এবং মাছ চাষিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে সপ্তাহ খানেক ধরে বড় বড় মাছ সংগ্রহ করেন। মেলায় কেউ যেন বিষযুক্ত মাছ বিক্রি করতে না পারে, সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি থাকে।
কালাই পৌরসভার মেয়র রাবেয়া সুলতানা বলেন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হওয়ায় নবান্নের এই মাছের মেলায় কেনাকাটা করতে আসেন সব সম্প্রদায়ের মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২২
এসআরএস