ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘সমকামিতার’ বলি বালু ব্যবসায়ী কাউসার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
‘সমকামিতার’ বলি বালু ব্যবসায়ী কাউসার

ফরিদপুর: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বালু ব্যবসায়ী কাউসার খাঁন (৪০) ‘সমকামী’ ছিলেন। সাফায়ত ইসলাম সিফাত (১৬) নামে এক তরুণকে তিনি এ কাজে বাধ্য করতেন।

নিজের কামনা পূরণ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন কাউসার, ধারণা করতে পারেননি। সিফাতের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।

কাউসার হত্যাকাণ্ডের পর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিফাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বাবা শাহিন মোল্লাও (৫০) গ্রেফতার হয়েছেন হত্যার আলামত নষ্ট করার অপরাধে।

রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

পুলিশ সুপার বলেন, সিফাতকে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সমকামিতায় বাধ্য করতেন বালু ব্যবসায়ী কাউসার খান। গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) নিখোঁজ হন তিনি।

সিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, শুক্রবার কাউসার তার মাধ্যমে নিজের কামনা পূরণের চেষ্টা করেন। দুজনের ঘনিষ্ঠতার মধ্যেই ছুরি দিয়ে কাউসারের গলায় আঘাত করেন সিফাত। পরে কাউসারের পিঠ, গলা, গর্দান ও মাথার পেছনের অংশে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

এ কর্মকাণ্ডের পর কাউসারের দেহ বালুচাপা দিয়ে তার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান সিফাত।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের জাজেরার সূরার ভাঙ্গামাথা নামক স্থানে পদ্মার বালুচরে কাউসারের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনিসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার ও চরভদ্রাসন থানা পুলিশ।

পরে তার নির্দেশে ঘটনা তদন্তে নামেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার। সুমনের নেতৃত্বে ছিল ডিবিসহ পুলিশের একটি বিশেষ টিম। তারা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ হত্যাকাণ্ডে সিফাতের জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসে।

এরপর সিফাতকে তার বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। কাউসার তাকে সমকামিতায় বাধ্য করতেন বলেও জানান। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়ি থেকেই মোবাইলের পোড়া অংশ, জ্যাকেট, শার্ট-প্যান্ট ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

চরভদ্রাসন থানায় হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিফাত। তার বাবা শাহিন মোল্লাকে হত্যার আলামত নষ্ট করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মণ্ডল, ডিবির ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।