নিউইয়র্ক: নরপিশাচ সৎ বাবা দু হাত কেটে নিলেও শান্ত পেয়েছে নতুন দুটি হাত। সে হাত দিয়ে সে কিছু খাবার খেতেও পারে।
তিন সন্তানের মা রোকসানা শুধুমাত্র শান্ত’র চিকিৎসার জন্য স্বামী, সন্তান রেখে ছুটে গেছেন।
চিকিৎসার কথা বলতে গিয়ে রোকসানা কামার তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন যারা শান্ত’র এই চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করেছেন। তিনি বিশেষভাবে ঋণী ‘শ্রাইনার হসপিটাল ফর চিলড্রেন’ ও তার চিকিৎসকদের কাছে । এ ঋণ কখোনোই শোধ হবার নয়। তবে চিকিৎসা বিনামূল্যে হলেও রোকসানা ও শান্ত’কে নিজেদের অর্থেই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাকালে থাকতে হবে।
শান্তকে প্রতিবছরই দুবার আসতে হবে এই হাসপাতালে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার কৃত্রিম এই হাতও বদলাতে হবে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত। তবে রোকসানা কামরের স্বপ্ন তার ছেলে শান্ত’র জন্য দুটি বায়োনিক হাত। যান্ত্রিক হলেও কাজে যা হবে প্রায় স্বাভাবিক হাতের কাছাকাছি। এজন্য প্রয়োজন ৮০ লাখ টাকা। তবে রোকসানা কামার কারো কাছেই অর্থ সাহায্য চাইছেন না। কেউ স্বেচ্ছায় সাহায্য করতে চাইলে তিনি তা কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করবেন।
রোকসানা কাজ করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে। নিজের পারিবারিক কৃষি সম্পত্তি থেকে যা পান তা দিয়ে নিঃস্বার্থভাবে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ান রোকসানা। মানুষের বিপদে নিজেকে সঁপে দেয়ার এই পাগলামিতে তার সিংহহৃদয় ব্যবসায়ী স্বামী পাশে দাঁড়ান তার। ‘এক অনন্য অসাধারণ মানুষ’ হিসেবে স্বামীর প্রশংসা করলেন রোকসানা।
যুক্তরাষ্ট্রে শান্ত’র চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রোকসানা তার কষ্টের কথাও জানালেন। বললেন সারজীবন নিজের সবকিছু দিয়েই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। অথচ আমেরিকায় এসে কিছু সংখ্যক বাংলাদেশির আচরণে যে ব্যথা পেয়েছি, তা ভাবতেও পারি না। রোকসানা বললেন, আমেরিকা থেকে কিছু লোক নিজেরাই ঢাকায় আমার সাথে যোগাযোগ করেন শান্ত’র জন্য আর্থিক সাহায্য করবেন বলে। তিনি তাদের আর্থিক সাহায্যের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। তারা এগিয়েও আসেন। রোকসানা সজ্জন এক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তার দেয়া দুটি টিকেট নিয়ে শান্তর চিকিৎসার জন্য পাড়ি জমান আমেরিকায়। কিন্তু আসার পর অভিজ্ঞতা অন্যরকম। যে সংগঠনটি তাকে হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিতে সাহায্য করেছে, তারা রোকসানাকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছে বলে তাদের ওয়েব সাইটে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। অথচ সে টাকা পান নি রোকসানা। পরে সংগঠনটি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাকে দিয়ে টাকাটা পাঠানো হয়েছে তিনি এই টাকা নিজের কাজে ব্যয় করে ফেলেছেন, পরে দেবেন। বাংলানিউজের কাছে ঐ সংগঠনের দায়িত্বশীল একজন প্রধান কর্মকর্তা এঘটনার সত্যতা স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, রোকসানা কামারের অনুরোধ ছাড়াই নিজেদের উদ্যোগে যে ৭ হাজার ২শ ৯৭ ডলার সাহায্য তুলেছে ঐ সংগঠনটি। অথচ শান্ত’র জন্য ফিলাডেলফিয়ায় থাকাকালে দেয়া হয়েছে নগদ মাত্র মাত্র ৩শ ৩০ ডলার। ৫৫ টাকার খেলনা কেনা হয়েছে এবং ঢাকায় কথা বলতে টেলিফোন কার্ড কেনা বাবদ দেয়া হয়েছে ২০ ডলার।
আর ঐ কর্মকর্তার হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য গাড়ির পেট্রোল কেনা ও অন্যান্য খাতে ব্যয়, ঐ ব্যক্তির এক বন্ধুসহ তাদের দুজনের বিমান টিকেট এবং শান্ত’র চিকিৎসায় সংগঠনটির ভূমিকা জানান দিতে সংবাদ সম্মেলন---সব মিলিয়ে মোট খরচ হয়েছে ৬ হাজার ৫শ ৪২ ডলার। এই ব্যয়কে ‘ইন কাইন্ড ডোনেশন’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অবশিষ্ট যে ৪শ ৫ ডলার, সে অর্থও শান্ত’র চিকিৎসা অব্যাহতভাবে চালানোর জন্য খোলা কাস্টডিয়ান ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে নি।
রোকসানা কামার ও সাংবাদিকদের কারণে ‘বেড়ায় ক্ষেত খাওয়া’র এহেন ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। এজন্য রোকসানার উপর বেজায় চটেছেন ঐ সংগঠনের কতিপয় কর্তাব্যক্তি। আর তাই নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর সংগৃহীত প্রায় ১০ হাজার ডলার আটকে আছে অদৃশ্য হাতের কারসাজির কাছে। আদালত কর্তৃক রোকসানা কামারই শান্ত’র মা হিসেবে একমাত্র বৈধ অভিভাবক। অথচ শান্ত’র ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেবার জন্য ১১ হাজার ৫শ ৬০ ডলার ৯৮ সেন্টের মধ্যে ৯ হাজার ৩শ ৯ ডলার ৫৬ সেন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে আটকে আছে।
রোকসানার বক্তব্য, তিনি তো কাউকে আর্থিক সাহায্যের জন্য বলেন নি বা কেউ তাকে জানিয়েও আর্থিক সাহায্যে তহবিল গঠন করেন নি। তাহলে কেন শান্ত’র জন্য অর্থ সংগ্রহ করে সে অর্থ দেয়া হচ্ছে না? উপরন্তু তাকে শান্ত’র জন্য খরচের হিসেব দিতে বলা হয়েছে তাকে! ফিলাডেলফিয়াতে থাকাকালে রোকসানা ও শান্ত’র জন্য মাত্র ২ হাজার ২শ ৫১ ডলার ৪২ সেন্ট খরচ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সংগৃহীত সমুদয় অর্থ শান্ত’র কাস্টডিয়ান ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেবার সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও তা ঐ ব্যক্তিবর্গের প্ররোচনায় জমা দেয়া হয় নি বলে অভিযোগও করেন রোকসানা কামার।
তিনি আরো বলেন, কেউ কেউ অযাচিতভাবে তার কাছে এযাবৎ শান্ত’র জন্য ব্যয়ের হিসেব চেয়ে বলেছেন, সে অর্থ তারা তাকে দেবেন। এধরনের প্রস্তাবে অপমানিত বোধ করেছেন উল্লেখ করে রোকসানা বাংলানিউজকে বলেন, তার ধারণা এধরনের প্রস্তাবের পেছনে অর্থ আত্মসাতের মত কোনো অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি বলেন,“আমি তো অর্থের জন্য বা নামের জন্য শান্ত’র চিকিৎসার ভার নেই নি। আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই এমন শত শত অসহায় মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছি। ”
শান্তকে নিয়ে ফিলাডেলফিয়ায় থাকার অভিজ্ঞতাও দু:খজনক। তার অভিযোগ করেন, প্রথম দুমাস তাকে একটি বাসায় রাখা হয়েছে। অসুস্থ অবস্থাতেও সামান্য জ্বর ও ব্যথার ট্যাবলেটও দেওয়া হয় নি তাকে। শান্ত’কে ২ দিন খাবারের কষ্ট পর্যন্ত সহ্য করতে হয়েছে। প্রতিবেশীর কাছে রেখে যাওয়া ‘প্রয়োজন সাপেক্ষে ১শ ডলার করে খরচ’ নিতে হয়েছে তাকে। এ ঘটনায় অপমানে লজ্জায় ভেঙে পড়েন রোকসানা। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন নিউইয়র্কে পরিচিত একজনের আশ্রয় নেবেন। এমন তেতো অভিজ্ঞতা নিয়েই রোকশানা কামার নিউইয়র্ক থেকে ৬ জানুয়ারি দেশে ফিরেছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা সদুত্তর দিতে পারেন নি। তবে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, শান্ত’র সৎ বাবা ভিক্ষাবৃত্তির করানোর জন্য শান্ত’র দুটি হাতই কেটে নেয়।
শান্ত’র নিজের ভাষায়: ‘চিপস খাওয়ানোর নাম করে আমার সৎ বাবা একটা জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে আরো কয়েকজন লোক ছিল। এরপর হঠাৎ করে আমাকে মারধর করতে থাকে। বাবা আমার হাত-পা বাইন্দা দা দিয়ে আমার হাত কাইটা ফালায়। মাথায় ও মুখে কোপ মারে আর বলতে থাকে তোর হাত-পা কাইটা ভিক্ষা করাইলে অনেক টাকা আয় করা যাবে। এরপর আর কিছু বলতে পারি না। ”
জীবনের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ঘটনার বর্ণনা এভাবে দিচ্ছিল ৭ বছরের শিশু শান্ত।
ফেলাডেলফিয়ার একটি বাসায় বসে শান্ত যখন তার দু’হাত কেটে ফেলার লোমহর্ষক বর্ণনা দিচ্ছিল তার চোখেমুখে তখন সেই আতংকের করাল ছায়া। সে ভীতিও কেটে গেল আবার মুহূর্তেই। দু’ হাত না থাকা, মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা শিশুটি এখন আনন্দে সব যেন ভুলে গেছে। কিছুদিন পরই তার দু’হাত লাগানো হবে। নিজের হাত দিয়ে আবারো খেতে পারবে।
পুরো নাম রবিউল ইসলাম শান্ত। জন্ম ঢাকার কড়াইল বস্তিতে। বাবার নাম কামাল হোসেন। মায়ের নাম নাসিমা আক্তার। তিন ভাইবোনের মধ্যে শান্ত সবার ছোট। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হবার পর জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে ছাড়াই সংসার করতে থাকেন নাসিমা। এরপর থেকেই অনাদরে অবহেলায় বেড়ে উঠতে থাকা শিশু শান্ত’র জীবনে নেমে আসে অত্যাচার আর নির্যাতনের আরেক অধ্যায়। সৎবাবা জাহাঙ্গীর মাঝে মাঝে তাকে দিয়ে ভিক্ষা করাতো। ভিক্ষা করতে না গেলে তার ওপর চলতো চরম নির্যাতন। গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীর ও তার সহযোগিরা শান্তকে নিয়ে রেল লাইনের পাশে একটি জঙ্গলে নিয়ে দু’হাত কেটে রেল লাইনের পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। তারপর পথচারিরা তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনার ১৫দিন পর নাম পরিচয়হীন শিশুটির দু’হাত কাটার ছবিসহ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এ খবর পড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত এক সহৃদয় নারী। হাসপাতালে এসে মৃতপ্রায় শিশুটিকে তিনি মাতৃস্নেহে কোলে তুলে নেন। এরপর থেকে পাল্টে যায় শিশু শান্ত’র জীবনের গল্প। মমতাময়ী এই নারীই হচ্ছেন রুকসানা কামার। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বাংলাদেশ ইকোনোমিক জোন চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত তিনি।
তবে নিষ্ঠুরতার কাহিনী এখানেই শেষ নয়। দু’ হাত কেটে ফেলা শিশুটিকে আবারো নামানো হয় ভিক্ষাবৃত্তিতে। চক্রটি থেকে শিশুটিকে বাঁচাতে গিয়ে অনেক হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে নি:স্বার্থ ওই নারীকে। সৎ বাবা নামধারী যে নরপশু ও তার সহযোগিরা নিষ্পাপ শিশুটির হাত পা কেটে অভিশপ্ত ভিক্ষাবৃত্তিতে নামিয়ে টাকা আয় করতে চেয়েছিল বারবার তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে।
রুকসানা বলেন, পত্রিকায় সংবাদ দেখে যখন হাসপাতালে যাই তখন শিশুটি ছিল মৃতপ্রায়। কেটে ফেলা দু’হাতের ক্ষতস্থান দিয়ে তখনও ঝরছে রক্ত। মুখ ও
মাথার ক্ষতস্থানে মাছি ভনভন করছে। সারা শরীরে পায়খানা। কেউ পরিষ্কার করে নি। এমনকি দুগর্ন্ধের কারণে কেউ তার পাশে যায় না। কোনো রকম একটা ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। এঅবস্থায় তাকে কোলে তুলে নিয়ে পরিষ্কার করে ডাক্তার ও নার্সদের সহযোগিতা চাই শিশুটিকে দ্রুত সুস্থ্ করে তোলার জন্য।
তবে খুব ভালো সাড়া পাই নি। বরং তার সৎবাবা ও তার সিন্ডিকেটের লোকেরা মমতাজ নামের এক নার্সকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে অসুস্থ্ শিশুটিকে চুরি করে
মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল থেকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। কিছুটা সুস্থ্ হলে নিরাপত্তার কারণে তাকে রাখা হয় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। পরে তার মা আদালতে দরখাস্ত করে ছেলেকে তার নিজের জিম্মায় নেয়।
কিন্তু কয়েকদিন পর খবর নিয়ে জানতে পারি অসুস্থ শিশুটিকে তারা ভিক্ষাবৃত্তিতে নামিয়েছে। বিষয়টি পুলিশ ও র্যাবকে জানানোর পর তারাও গুরুত্ব দেয় নি। পরে একদিন ভিক্ষা করা অবস্থায় ছবি তুলে র্যাব-১ এর কর্মকর্তাদের দেখানোর পর তারা শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ভিক্ষুক সিন্ডিকেটের লোকজন ততক্ষণে স্থান পরিবর্তন করে শিশু শান্তকে গাজীপুরের একটি আস্তানায় নিয়ে গেছে।
রুকসানা আরো বলেন, পুলিশ ও র্যাব হাল ছাড়লেও আমি হাল ছাড়ি নি। কয়েকটি মাস যে শিশুটিকে নিজের সন্তানের মতো করে সুস্থ করে তুললাম তার এরকম পরিণতি চাই নি। তাই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে শান্তকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ি। অনেক কষ্ট করে বিমানবন্দরের কয়েকটি টোকাইয়ের কাছ থেকে জানতে পারি শান্তকে গাজীপুরে ওলি নামের এক ভিক্ষুক সিন্ডিকেরে নেতার আস্তানায় আটকে রাখা হয়েছে। বিষয়টি লিখিতভাবে র্যাব-১ অফিসে জানানোর পর সেখানে অভিযান চালিয়ে র্যাব শিশু শান্তকে উদ্ধার করে। বিষয়টি আদালতে অবহিত করে শান্তকে নিজের জিম্মায় নেই।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে পত্রিকা ও টেলিভিশনে খবর দেখে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার কথা বলা হয়। এছাড়া নিউ ইয়র্কসহ আমেরিকার বিভিন্ন এলাকার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ও শান্ত’র পাশে এসে দাঁড়ায়।
শেষে ফেলাডেলফিয়ার ‘‘শ্রাইনার্স হসপিটাল ফর চিলড্রেন” কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে শিশুটির দু’টি হাত লাগিয়ে দিতে রাজি হয়। এর পর শান্ত ও রুকসানাকে আমেরিকায় আনা হয়।
রুকসানা বলেন, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা শান্তকে পরিক্ষা নীরিক্ষা করে ২১ জানুয়ারি প্রথম একটি হাত লাগানো হয়। এর কিছুদিন পর অন্য হাতটি। চিকিৎসকরা বলেছেন, শান্ত আস্তে আস্তে আবারো নিজের হাত দিয়ে খেতে ও লিখতে পারবে। শুধুমাত্র কোনো ভারি কাজ করতে পারবে না।
তবে শান্ত বলেছে, লেখাপড়া করে বড় হবে আর তার সৎ বাবাকে শাস্তি দেবে; যাতে আর কারো হাত সে না কাটে।
**নিউইয়র্কে শান্তর জন্য তহবিল সংগ্রহ
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৪