ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

সংঘাতে যৌন সহিংসতা রোধে দায়িত্ব নিন, জাতিসংঘে বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৮
সংঘাতে যৌন সহিংসতা রোধে দায়িত্ব নিন, জাতিসংঘে বাংলাদেশ জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বক্তব্য রাখছেন

সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে যদি সংশ্লিষ্ট দেশ এগিয়ে না আসে তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকেই দায়িত্ব নিতে হবে। 

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম সোমবার (১৬ এপ্রিল) নিরাপত্তা পরিষদে ‘নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও ন্যায়বিচার পাওয়ার মাধ্যমে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ’ বিষয়ক এক উন্মুক্ত বিতর্কে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশর স্থায়ী দূতাবাস থেকে সোমবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

নিরাপত্তা পরিষদের চলতি এপ্রিল মাসের সভাপতি পেরু এই উন্মুক্ত বিতর্কের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটিতে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্য দেশসহ প্রায় ৭০টি দেশের প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।  

বক্তব্য রাখেন ‘সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা’ বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমিলা প্যাটেন এবং ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ বিষয়ক এনজিও ওয়ার্কিং গ্রুপের পক্ষে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি রাজিয়া সুলতানা। সুলতানা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নারী ও মেয়েদের চ্যালেঞ্জ এবং সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানটিতে রাজিয়া সুলতানাকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে ‘নারী শান্তি ও নিরাপত্তা’ বিষয়ক উন্মুক্ত বিতর্কে অংশে নিয়ে এই পরিষদে রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের কথা বলার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। আজ সুলতানা রোহিঙ্গাদের পক্ষে বক্তব্য দিলেন। এই কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি  প্রমিলা প্যাটেনকে ধন্যবাদ জানাই। ’

নিরাপত্তা পরিষদে সুলতানার বক্তব্য বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে আশ্রিত প্রায় ৭ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে মন্তব্য করে উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী যৌন সহিংসতার শিকার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নারীদের, যাদের একটি বড় অংশ গর্ভবতী, তাদের কথা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসহ অনান্য শারীরিক ও মানসিক  বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। নির্যাতিত এসব নারী ও মেয়েরা যেন তাদের জীবন ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সে বিষয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কমিউনিটি নেতা এবং সেবাদানকারীদের ভূমিকার প্রশংসনীয়।
 
বাংলাদেশের প্রতিনিধি আরও বলেন, অতিরিক্ত সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত না হলে এ জাতীয় ঘৃণিত ঘটনা বন্ধ হবে না এবং মর্যাদাসহ নিরাপদে ও নিরাপত্তার সঙ্গে নিজ ভূমিতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তন কোনো আশার আলো দেখবে না।

বাংলাদেশে আশ্রিত সহিংসতার শিকার এসব রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের জন্য বাংলাদেশ সরকার সব পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে একটি জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

সংঘাত সংশ্লিষ্ট যৌন সহিংসতার ওপর মহাসচিবের রিপোর্টের সুপারিশমালাকে ভিত্তি ধরে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী ‘সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা’র বিষয়ে সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রতিনিধি।

বাংলাদেশে সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৮
কেজেড/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ