ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

১০ লাখ বছর ধরে টিকে আছে অস্ট্রেলিয়ান শাবকবাহীরা! 

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
১০ লাখ বছর ধরে টিকে আছে অস্ট্রেলিয়ান শাবকবাহীরা!  ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণীরা অনন্য। সেখানে যেসব প্রাণী বাস করে, সেগুলোর অধিকাংশই পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। ১০ লাখ বছর আগে প্লেইস্টোসিন প্রাণীর যুগে মহাদেশটিতে ছিল বৃহৎ আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণীরা।

অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণীরা অনন্য। সেখানে যেসব প্রাণী বাস করে, সেগুলোর অধিকাংশই পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।

 

১০ লাখ বছর আগে প্লেইস্টোসিন প্রাণীর যুগে মহাদেশটিতে ছিল বৃহৎ আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণীরা। এর মধ্যে প্ল্যাসেন্টাল স্তন্যপায়ীদের আধিপত্য বেশি ছিল মহাদেশটিতে। এসব প্রজাতিও ছিল অন্যদের চেয়ে আলাদা।

অর্থাৎ মানুষ পৃথিবীর অবিসংবাদী পরাশক্তি হয়ে উঠলেও গত দশ লাখ বছরে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ বিশাল জন্তুসহ সব আকার ও আয়তনের প্রাণীদের অভয়ারণ্যই রয়ে গেছে। যেখানে দক্ষিণ আমেরিকার অতিকায় অলস প্রাণী থেকে শুরু করে সাইবেরিয়ার ম্যামথরা পর্যন্ত হারিয়ে গেছে চিরতরে।  
 
কিন্তু অস্ট্রেলিয়া প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই মূলত ছিল শাবকবাহী (পেটের তলায় থলিতে শাবক বহন করে এমন স্তন্যপায়ী প্রাণী) জীবের ভূখণ্ড, যা এখনো আছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্লেইস্টোসিন শাবকবাহীরা গাম্বিয়ার ইঁদুর পাউস্‌ড সদৃশ প্রাণী। এখনকার ছোট ফ্লুফি প্রজাতির প্রাণীদের মতো দ্রুত দৌঁড়ে চলে এরা, যে কারণে চারপাশে হইচই শুরু হয়। কিন্তু এ শাবকবাহীদের কোনো কোনো প্রজাতির আকার ছোট কারের মতো হয় বা ব্লেডের চেয়ে লম্বা দাঁতওয়ালা হয়।

প্লেইস্টোসিন যুগে এই শাবকবাহী জীবেরা কেবল দৈত্যাকার প্রাণীদের মধ্যেই ছিল না, তারা ছিল ৫ মিটার দীর্ঘ টিকটিকি, অর্ধ টন ওজনের পাখি ও বিশালাকৃতির ডাইনোসরের মতো কচ্ছপ প্রজাতির মাঝেও।  

ফলে সে যুগের অস্ট্রেলিয়া সম্মিলিতভাবে ছিল একটি সত্যিকারের জৈবিক দুঃস্বপ্নের আবাসস্থল।

এসব শাবকবাহী প্রাণীদের কোনো কোনোটি আজও বেঁচে আছে। যেমন ক্যাঙ্গারু ও সমপ্রজাতির প্রাণীরা আজও দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। যদিও এটি একটি রহস্য যে, মানুষের উন্নত শিকার কৌশল ও আগুনের ব্যবহার করে তাদের আবাসস্থল পরিবর্তন করা সত্ত্বেও তারা কীভাবে টিকে আছে? 

জীববিজ্ঞানীদের ধারণা, এ জাতীয় প্রাণীদের লুকিয়ে লুকিয়ে বাস করা তাদের টিকে থাকার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেছে।

দশ লাখ বছর আগে প্লেইস্টোসিন যুগে ছোট মুখের ক্যাঙ্গারুরা ছিল দৈত্যাকার প্রাণীদের একটি। প্রোসোপটোডন গোলিয়াহ নামে পরিচিত এ প্রাণীটি বৃহত্তম ক্যাঙ্গারু হিসেবেও পরিচিত। ২ মিটার পর্যন্ত লম্বা লাল ক্যাঙ্গারুদেরও দেখা যেতো, যারা কমপক্ষে তিনবার লাফ না দিয়ে কোথাও যেতে পারতো না। এই জবুথবু শাবকবাহী জীবের হাঁটার মধ্যেও অসঙ্গতি ছিল।  

বিলুপ্ত ও পুরনো এ প্রজাতির স্থলে অভিযোজিত বর্তমান ক্যাঙ্গারু ছন্দময় হাঁটার শৈলী সমৃদ্ধ একটি দ্বিপদ ফ্যাশনেবল প্রাণী হিসেবেই পরিচিত। এদের হাঁটার শৈলী, পেশিতন্তু ও সুগঠিত নিতম্ব মানুষের সঙ্গে মিলে যায়।  

এমনকি এখনকার ক্যাঙ্গারুদের ছোট মুখ ও চোখ দু’টি সামনের দিকে এগিয়ে এসেছে, যা আমাদের অনুরূপ। তাদের দাঁতের গঠনও মানুষের পূর্বসুরী প্রাইমেটদের দাঁতের মতোই।  

এসব সমবৈশিষ্ট্যের কারণেই ক্যাঙ্গারুকে আধুনিক বনমানুষের সদৃশ প্রাণী বলে বিভ্রান্ত হতে হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
এএসআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।