ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

অফবিট

সুনামিতে সৃষ্ট বিচিত্র দ্বীপপুঞ্জ!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
সুনামিতে সৃষ্ট বিচিত্র দ্বীপপুঞ্জ!

সেটল্যান্ড হচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগর বেষ্টিত  স্কটল্যান্ডের সেই বিচিত্র দ্বীপপুঞ্জ, যেখানে অসাধারণ সৌন্দর্যের পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতা বিরাজমান। প্রত্যন্ত হওয়া সত্ত্বেও এখানকার হাজারো প্রজাতির জীববৈচিত্র্যের বসবাস প্রাগৈতিহাসিক প্লেইস্টোসিন যুগ থেকেই।

সেটল্যান্ড হচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগর বেষ্টিত  স্কটল্যান্ডের সেই বিচিত্র দ্বীপপুঞ্জ, যেখানে অসাধারণ সৌন্দর্যের পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতা বিরাজমান। প্রত্যন্ত হওয়া সত্ত্বেও এখানকার হাজারো প্রজাতির জীববৈচিত্র্যের বসবাস প্রাগৈতিহাসিক প্লেইস্টোসিন যুগ থেকেই।

মানুষও এখানে আছে প্রায় সমসাময়িক কাল থেকে। তাদের ভাষা বিচিত্র, আবার জীবনযাত্রাও কঠোর।

শতাধিক দ্বীপের সমষ্টি সেটল্যান্ডের মাত্র ১৬টি জনঅধ্যুষিত দ্বীপে বাস করেন মাত্র ২৩ হাজার ১৬৭ জন মানুষ। দ্বীপমালার মোট জনসংখ্যার অর্ধেক বিভিন্ন শহরের ১৬ কিলোমিটারের (১০ মাইল) মধ্যে বসবাস করেন। তবে ৫৬৬ বর্গমাইল আয়তন ও ১ হাজার ৬৭৯ মাইল দীর্ঘ তটরেখা বেষ্টিত দ্বীপপুঞ্জটির সেটল্যান্ডের প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা কয়েক হাজার।

ভূতাত্ত্বিক প্রমাণ বলছে, খ্রিস্টপূর্ব ৬ হাজার ১০০ সালে স্টরেগ্গা স্লাইড দ্বারা সৃষ্ট সুনামির আঘাতে সেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের উৎপত্তি। স্কটল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে ২৫ মিটার (৮২ ফুট) উচ্চতার ঢেউ সৃষ্টি হয় সেবার।

দ্বীপপুঞ্জটি এখন ব্রিটিশ উপনিবেশের অন্তর্গত হলেও যুগে যুগে এর মালিকানা বদলেছে। আদি ঐতিহাসিক যুগে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রগুলো বিশেষত নরওয়ের প্রভাবিত ছিল। দু’ হাজার বছর আগে এটি ছিল বিশাল ও শক্তিশালী রোমান সাম্রাজ্যের অংশ। পঞ্চদশ শতাব্দীতে স্কটল্যান্ডের অংশ হওয়ার আগে কিছুকাল ছিল প্রাচীন নর্স জাতিরও অধীনে।   স্কটল্যান্ড ১৭০৭ সালে গ্রেট ব্রিটেনের অংশ হয়ে উঠলে সেটল্যান্ডও দেশটির অধীনে চলে যায়। পরের বছরই পশ্চিম উপকূলের স্ক্যালোওয়ে থেকে রাজধানী স্থানান্তরিত হয় বর্তমান লারউইকে।

বাসিন্দাদের অধিকাংশই স্কটিশ ভাষায় কথা বললেও আছেন প্রাচীন নর্স জাতির নর্ন ও রোমান ভাষাভাষিরাও।  

রাজধানী ও বৃহত্তম উপনিবেশ লারউইকে ৬ হাজার ৯৫৮ জন, পুরনো রাজধানী স্ক্যালোওয়েতে ১ হাজার জন আর সবচেয়ে প্রত্যন্ত ও বিচ্ছিন্ন ফাওলায় মাত্র ৩০ জন বসবাস করেন।
 
প্রধান দ্বীপ মেনল্যান্ড হিসাবে পরিচিত ভাইলা, ছাড়াও আছে ব্রেসেই, নর্স, হোয়েলসেই, ইউনস্‌ট ফেটলার, বুরা, মাকেল রো, পাপা স্টোওর, ট্রন্ড্রা, ফেয়ার আইল, সামবার্ঘ, স্কেরিসসহ বিভিন্ন জনঅধ্যুষিত দ্বীপ।

বসতিহীন দ্বীপ মুসা ব্রোচ নামের লৌহযুগের বৃত্তাকার টাওয়ার আর রোনাস স্টফাস্ট নামে পাথরের স্পটের  জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যা স্কটল্যান্ডের সংরক্ষিত স্থাপনা। সেন্ট নিনিয়ানের আইল মেনল্যান্ড থেকে যুক্তরাজ্যে বৃহত্তম সক্রিয় ক্যানেল টম্বোলো দ্বারা সংযুক্ত। আছে সবচেয়ে উত্তরের দুর্গ মানেস ও স্ক।

সেটল্যান্ডের ভূতত্ত্বও জটিল। অনেক ফল্টের সঙ্গে অক্ষ ভাঁজ ছাড়াও উত্তরাঞ্চলে আছে ক্যালেডোনিয়ান পর্বত যুগের ফাঁড়িও। লেওয়িসিয়ান, ডালড্রেডিয়ান ও মইনি রূপান্তরিত শিলার সঙ্গে প্রাচীন লাল বেলেপাথর ও গ্রানাইটের সমন্বয়ে বিচিত্র স্বাতন্ত্র্যসূচক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্যনীয়। সমুদ্রতলে হিমবাহ ছাড়াও নানা পাতাল শিলাও বিদ্যমান।

সমুদ্রতলে তেল আবিষ্কারও এর বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতির অংশ।

প্লেইস্টোসিন যুগের ২০০০ টন বরফের হিমবাহের চাদরে আবৃত রোনাস পার্বত্য দ্বীপ এবং কেন্দ্রীয় সেটল্যান্ডে ভোঁদর, পাহাড়ি খরগোস ও সোনালী টিটিপক্ষী আশ্রিত পাথুরে পাড়গুলো উচ্চ জলাভূমি বরাবরে অবস্থিত।

সব মিলিয়ে এর অপরুপ দৃশ্যাবলী, বন্যপ্রাণীর বৈচিত্র্য পৃথিবী বিখ্যাত করেছে সেটল্যান্ডকে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।