ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

অফবিট

মেষ পালনে শত শত বছর টিকে থাকা সুউচ্চ পর্বতে!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৬
মেষ পালনে শত শত বছর টিকে থাকা সুউচ্চ পর্বতে!

খিনালিক শহরের খিনালাগভাষি খিনালিগ সম্প্রদায়ের মানুষ শত শত বছর ধরে বাস করছেন সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে। আজারবাইজানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের উচ্চতম বৃহত্তর ককেশাস পর্বতমালার এ শহরে তাদের অবস্থান কমপক্ষে দু’হাজার বছর ধরে।

খিনালিক শহরের খিনালাগভাষি খিনালিগ সম্প্রদায়ের মানুষ শত শত বছর ধরে বাস করছেন সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে। আজারবাইজানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের উচ্চতম বৃহত্তর ককেশাস পর্বতমালার এ শহরে তাদের অবস্থান কমপক্ষে দু’হাজার বছর ধরে।

আর তাদের কিংবদন্তি অনুসারে খিনালিগদের পূর্বপুরুষেরা এখানে অভিবাসিত হয়েছিলেন পাঁচ হাজার বছর আগে আলবেনীয় ককাস যুগে।

ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা ছাড়াও বিদ্যুৎহীন শহরটির বাসিন্দারা পাহাড়ি হিমবাহ ও শীতকালের আবহাওয়ায় চরম কষ্টে থাকেন। ফসল ও খাবারের অপ্রতুলতা চরম আর জীবন-জীবিকা সেখানে কঠিনতম।

তারপরও ককেশাস পর্বতমালার সর্বোচ্চ শিখরে কি করে তারা টিকে আছেন সহস্রাব্দ জুড়ে?। এ প্রশ্নের চমকপ্রদ উত্তর- মেষ পালনের সম্পদশীলতা আর খিনালিগদের উর্বর মস্তিস্ক!
 
শহরের টিলার চরম অনুর্বরতার কারণে এখানে অনেক ফসল চাষে সফলতা আসে না। যে কারণে স্থানীয়দের প্রধান খাদ্য হিসেবে আলু বিবেচিত এবং যে সহজ পণ্য শস্য খেয়ে বেঁচে থাকেন তারা। একটি সহজ খাবার ল্যাভাসের অনন্য রেসিপিও বাসিন্দাদের গর্বের বিষয়।

এক ধরনের ফ্ল্যাট রুটি সাধারণভাবে ককেশাস অঞ্চল ও পশ্চিম এশিয়া জুড়ে পাওয়া যায়। এটি একটি বিশেষ প্যান ব্যবহার করে আগুনে সেঁকে তৈরি করা হয়। শহরের নারীরা দুই ঘণ্টার মধ্যে এক সপ্তাহের খাবার প্রস্তুত ও সরবরাহ করতে পারেন।

সহস্রাব্দ ধরে ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা বিকশিত হয়েছে এখানে। তবে আধুনিকীকরণও চলছে। ২০০৬ সালে এ অঞ্চলের রাজধানী কুবার সঙ্গে খিনালিককে সংযোগ করে একটি রাস্তা নির্মিত হয়েছে, যা অন্য শহরগুলোকেও সংযুক্ত করেছে। ফলে আরো অনেক দর্শনার্থী ও পর্যটকদের যাতায়াত শুরু হয়েছে।

নতুন এ রুট সত্ত্বেও সেখানে যাতায়াত কয়েক বছরের জন্য অসম্ভবই রয়ে যায়। সেখানে সেপ্টেম্বর থেকেই বরফ পড়া শুরু হয়। প্রায়ই এর আগেও বরফ পড়ে এবং শীতকালে তাপমাত্রা মাইনাস ২১ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যায়। এ আবহাওয়া শুধু রাস্তাই ব্লক করে না, মেষপালকদেরও অসুবিধার কারণ হয়, যারা খিনালিগ সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড গঠন করেন। উষ্ণ অঞ্চলে তাদের পশুপালনের নতুন স্থান খুঁজে নিতে হয়।

শহরটিতে বিদ্যুৎ না থাকায় বাসিন্দাদের উষ্ণতার জন্য, টেজেক পদ্ধতির ওপর নির্ভর করতে হয়। টেজেকের আগুন তৈরি হয় সার-খড়ের মিশ্রণে। তাদের ঘর-বাড়ি নির্মিত হয়েছে কাছের গুডিয়াল নদীর পাথর দিয়ে। কিছু বাড়ি ২০০ বছর ধরে অগণিত ভূমিকম্পের মধ্যেও টিকে আছে।

মেষ পালন খিনালিক শহরের প্রধান জীবিকা ও কেন্দ্রীয় জীবনধারার অংশ, যা ককেশাস পর্বতমালার অন্যান্য শহরগুলোর সঙ্গে খাদ্য ও পোশাক আদান-প্রদানসহ বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করে। এই সম্পদশীলতা ও উর্বর মস্তিষ্কই এ সম্প্রদায়কে উচ্চ পর্বতে শত শত বছর ধরে বেঁচে থাকতে সহায়তা করছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।