ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

ব্রিটেনের চেয়েও বেশি ব্রিটিশ!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৭
ব্রিটেনের চেয়েও বেশি ব্রিটিশ! ফকল্যান্ড

দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটিশ শাসনাধীন দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের আয়তন ১২ হাজার ১৭৩ বর্গকিলোমিটার। এর রাজধানী দ্বীপ শহর স্ট্যানলি।

ব্রিটেন থেকে প্রায় ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হলেও স্ট্যানলির লাল টেলিফোন বক্স থেকে শুরু করে আইসক্রিম পর্যন্ত ব্রিটিশ ঐতিহ্য ধরে আছে শত শত বছর ধরে। ব্রিটিশ ঐতিহ্যের অংশ হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পানশালার বিয়ার ও মদ, লাল ডাবল ডেকার বাস এবং সুপার মার্কেট থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত পার্কিং স্টাইলও।

ফকল্যান্ডফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ক্লাসিক স্থাপত্য জুড়ে আছে স্ট্যানলি শহরের মণি-রঙিন বাড়িগুলো ঘিরে। এসবের কাঠের ফ্রেম ও লোহার ছাদ ব্রিটেন থেকে আমদানি করা। দ্বীপ শহরটিতে ১৮৮৭ সালে নির্মিত রানী ভিক্টোরিয়ার সুবর্ণজয়ন্তীর স্থাপনাগুলোও ঊনবিংশ শতাব্দীর ঐতিহ্যগত ব্রিটিশ শহরের পাকা ঘরের আদলে তৈরি করা হয়েছে।

এখানে অবস্থিত বিশ্বের দক্ষিণতম ক্যাথেড্রাল গির্জাটি ১৮৮০ সালে নির্মিত। ব্রিটিশ শাসনের এক শতাব্দী উদ্‌যাপন উপলক্ষে চার্চটির সামনে ১৯৩৩ সালে স্থাপিত হয়েছে দু’টি নীল তিমির চোয়ালের হাড়ে তৈরি আর্চওয়ে।

ফকল্যান্ডফকল্যান্ড একইসঙ্গে ভেড়া পালন ও সমুদ্রের পেঙ্গুইনদের জন্য বিখ্যাত। স্ট্যানলির ভাটিখানাগুলো সর্বাধুনিক ফ্যাশনের জিনিসপত্রে সজ্জিত। এসব বারে স্থানীয়ভাবে ধরা গভীর পানির স্কুইড ভাজা ও আইসক্রিম পরিবেশিত হয়, যা ব্রিটিশ শৌখিনতারই ঐতিহ্য মাত্র। স্ট্যানলি দ্বীপের সেরা মাছ ছোট প্রজাতির পেঙ্গুইন বা রকহুপারের সঙ্গে পরিবেশিত হিমায়িত চিপসও যুক্তরাজ্য থেকে আনা হয়।

ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ পূর্ব আফ্রিকার ভূতাত্ত্বিক অংশ এবং পর্যটন অর্থনীতি, মাছ ধরা ও ভেড়া পালনের ভিত্তিতে ব্রিটেন থেকে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে ভেড়ার লোমে তৈরি উল ও পোশাক ব্রিটিশ ঐতিহ্যে তৈরি হয়। আবার ম্যাজেলানীয় ও রকহুপার পেঙ্গুইনের মাংসের সঙ্গে  পরিবেশিত কফি ও সেরা ক্রিমের চায়ের মাঝেও ইংরেজদের ঐতিহ্য শক্তিশালী থাকে।

ফকল্যান্ডআর্জেন্টিনার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরের বিচ্ছিন্ন দ্বীপমালাটি নিয়ে ব্রিটেন ও আর্জেন্টিনার মধ্যে মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে এলেও বাসিন্দাদের অধিকাংশই ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত। মানব বসতি স্থাপনের পর থেকে এখানকার নয়টি প্রজন্মের ইতিহাস জানা যায়, তারা ব্রিটিশ ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করেন।

২০১৩ সালের গণভোটে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের আড়াই হাজার বাসিন্দার ৯৯.৮ শতাংশই ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে থাকার পক্ষে রায় দিয়েছেন।

ব্রিটিশ হিসেবে গর্ববোধের বৃহত্তম প্রদর্শন হিসেবে স্ট্যানলি শহরের ড্রাইভিং রেঞ্জ থেকে শুরু করে পাব সিলিং পর্যন্ত সবকিছু অসংখ্য ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক দিয়ে সজ্জিত। ফলে শহরটিকে ব্রিটেনের চেয়ে বেশি ব্রিটিশ বলে অভিহিত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
এএসআর/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।