ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

মমির গোপন লেখায় প্রকাশিত প্রাচীন মিশর!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
মমির গোপন লেখায় প্রকাশিত প্রাচীন মিশর! ফেরাউনের কবরগুলোর দেয়ালে পাওয়া হায়রোগ্লিফিকগুলো দেখায় যে, ধনী ও শক্তিশালীদের কিভাবে চিত্রিত করা উচিত। ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

মমির পাদদেশ বা কফিনে এবং পিরামিড বা দেয়ালে পেস্ট ও প্লাস্টারে আবৃত বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির হালকা লেখা বোঝার স্ক্যানিং কৌশল উদ্ভাবন করেছেন লন্ডনের গবেষকরা।

মমিতে একসঙ্গে ধারণ করা ২০০০ বছরের পুরনো প্যাপিরাসের লেখাগুলো থেকে প্রাচীন মিশরের ইতিহাস আরও ভালোভাবে জানার আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। সে সময়কার মিশরীয়দের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির অনন্য ব্যবহার সম্পর্কে একটি নতুন অন্তর্দৃষ্টি পাচ্ছেন ইতিহাসবিদরাও।

প্যাপিরাসের স্ক্র্যাপগুলো দিয়ে আবৃত মৃতের শরীর সজ্জিত বাক্সগুলোতে রেখে কবরে স্থাপন করা হয়েছে। লেখাগুলো প্রাচীন মিশরীয়দের বাজারের পণ্য কেনার তালিকা বা ট্যাক্স রিটার্নে ব্যবহৃত হতো বলেও মনে করা হচ্ছে।

ফেরাউনের কবরগুলোর দেয়ালে পাওয়া হায়রোগ্লিফিকগুলো দেখায় যে, ধনী ও শক্তিশালীদের কিভাবে চিত্রিত করা উচিত। এটি তার সময়ে প্রচারিত হয়েছিল।

 পাদদেশের লেখাটি মমির নাম প্রকাশ করে ইথর্থরু।  লেখাটির অনুবাদ হচ্ছে- ‌হোরাসের চোখ আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে'।  ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীতসমাধিসৌধের ওই হায়রোগ্লিফিকস্‌ তাই সমৃদ্ধ ও শক্তিশালীদের গল্প বলে। নতুন স্ক্যানিং কৌশলটি তাদের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কেও আরও তথ্য প্রকাশ করে।

লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের অধ্যাপক অ্যাডাম গিবসনের মতে, প্রাচীন মিশরের প্রকৃত গল্পে প্রবেশ করার প্রকল্পটির নেতৃত্ব দেওয়া উচিৎ মিশরীয় বিজ্ঞানীদেরই। কারণ, প্যাপিরাসের মতো সম্মানিত বস্তু তৈরিতে বর্জ্য ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০০ বছর ধরে এটি সংরক্ষিত রয়েছে’।

‘তাই প্যাপিরাসের এ মুখোশ সেরা লাইব্রেরির মতো, যা এই মৃত ব্যক্তিদের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে’।

তাদের লেখাগুলো প্রায়ই পেস্ট ও প্লাস্টারে আবৃত থাকে, যেগুলো মমি একসঙ্গে ধারণ করে আছে। কিন্তু গবেষকরা বিভিন্ন ধরনের আলোর সঙ্গে সন্নিহিত আলো তৈরির মাধ্যমে স্ক্যানিং করে নিচে কি আছে, তাও দেখতে পান।

নতুন কৌশলের প্রথম সাফল্যের একটি হচ্ছে- ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের কেন্ট শহরের একটি জাদুঘরে রাখা শক্ত পাথরের ক্যাসেলের মমির কফিন বাক্স। এর পাদদেশে খালি চোখে দৃশ্যমান নয়, এমন লেখা আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা।

স্ক্যানটি মমিটির ‘ইথর্থরু’ নাম প্রকাশ করে, যা মিশরে একটি সাধারণ নাম। ডেভিড বা তার সময়ের স্টিফেনকে ইথর্থরু যা বলতে চেয়েছেন, তার অর্থ- ‘হোরাসের চোখ আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে’।

 পেস্ট ও প্লাস্টারে আবৃত বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির হালকা লেখাগুলো মমি একসঙ্গে ধারণ করে।  ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীতএখন পর্যন্ত তাদের কাছে কি লেখা হয়েছিল, তা দেখার একমাত্র উপায় হল এই মূল্যবান বস্তুগুলো ধ্বংস করা। তবে গবেষকরা যে স্ক্যানিং কৌশল গড়ে তুলেছেন, তা সেগুলোকে যেমন অক্ষত রাখে, ঠিক তেমনি প্যাপিরাসে কি লেখা, ঐতিহাসিকরাও পড়তে পারেন।

লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের ড. কেথরিন পিকয়াতের মতে, মিশরীয়দের মতো এখন প্যাপিরাসে বর্ণিত দু’জনও দুনিয়ার সেরা। যখন এই মূল্যবান বস্তুগুলোকে ধ্বংস করতে দেখি, তখন আমি ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এটি একটি অপরাধ। সেসব সুন্দর বস্তু সীমিত সম্পদ’।

‘এখন আমরা এর সংরক্ষণ করে ভেতরে যা দেখছি, সেগুলো প্রাচীন মিশরীয়দের বুঝতে সাহায্য করে। তারা নথিভুক্ত প্রমাণের মাধ্যমে বসবাস করতো এবং লিখিত এ সম্পদগুলো তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল’।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।