ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

মোবাইল কিনতে নিজের অপহরণ নাটক সাজালো বালক!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৪ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৮
মোবাইল কিনতে নিজের অপহরণ নাটক সাজালো বালক! শিনজোর

ঢাকা: নতুন মোবাইল ফোন কেনার টাকা সংগ্রহের জন্য নিজেকে অপহরণের নাটক সাজালো এক বালক। নিজেই অপহরণকারী সেজে মায়ের কাছে দাবি করে মুক্তিপণ। কিন্তু পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে সত্য।

চীনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিচুয়ান প্রদেশে বসবাস করে ১৩ বছর বয়সী শিনজোর (ছদ্মনাম)। সম্প্রতি এক বিকেলে তার মায়ের কাছে বেইজিংয়ের একটি নম্বর থেকে কল আসে।

কলটি রিসিভ করতেই চমকে ওঠেন তিনি।

ওপাশ থেকে ছেলের কাঁপা-কাঁপা গলা ভেসে আসে, ‘মা! মা!’

তিনি ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘কার ফোন থেকে কল করেছো তুমি’?

উত্তর আসে, ‘একজন অপরিচিত লোকের’।

ছেলেকে আর কোনো প্রশ্ন করার আগেই লাইনটি কেটে যায়। ওই নম্বরে আবার কল করার চেষ্টা করলে তা অকেজো দেখায়।

দ্বিতীয় কলটি আসে আরও তিনঘণ্টা পর। এবার ওপাশ থেকে শিনজোর কান্নার শব্দ ভেসে আসে। সে মাকে জানায়, রেলস্টেশনের কাছ থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছে।

এরপর একটি টেক্সট মেসেজ আসে শিনজোর মায়ের মোবাইলে। সেখানে লেখা, ‘যদি তোমার সন্তানকে নিরাপদে ফিরে পেতে চাও, তবে ৫০ হাজার ইউয়ান (প্রায় ৭ লাখ টাকা) নিয়ে রেলস্টেশনে চলে এসো। ’

টেক্সট মেসেজের সঙ্গে একটি ছবিও পাঠায় কিডনাপাররা। ছবিতে দেখা যায়, শিনজোর মুখে একটি সাদা কাপড় গুঁজে দেওয়া।  

ছবিটি দেখে ঘাবড়ে যান শিনজোর মা। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফিরতি মেসেজে লেখেন, ‘দয়া করে আমার ছেলের কোনো ক্ষতি করো না। টাকা রেডি আছে। ’

এরপর স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শিনজোর মা এবং তাদের কাছে সব খুলে বলেন। কিছুক্ষণ পর কিডনাপারের নম্বর থেকে আবার কল আসে। এবারও ওপাশ থেকে কথা বলছে শিনজো। সে জানায়, চারজন লোক তাকে অপহরণ করে রেলস্টেশনের কাছাকাছি একটি আস্তানায় নিয়ে চোখ বেঁধে বিছানার নিচে ফেলে রাখে। একসময় তাকে রেখে বেরিয়ে গেলে, এই সুযোগে সে মাকে ফোন দেয়।

অপহরণকারীদের পাঠানো টেক্সট মেসেজগুলো পরীক্ষা করে পুলিশ এতে বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পায়। তাছাড়া বেইজিংয়ের নম্বরটাও ভুয়া।  

পুলিশের সঙ্গে শিনজোরপুলিশ এটা ভেবে আরও অবাক হয় যে, চারজন ব্যক্তি একটা বালককে অপহরণের পর কেন একটা মোবাইল ফোনসহ তাকে একা ফেলে বেরিয়ে যাবে!

তদন্তের দু’দিনের মাথায় পার্শ্ববর্তী জেলার একটি হোটেলে লুকনো অবস্থায় শিনজোকে খুঁজে পায় পুলিশ। সেখানে কিডনাপারদের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে সত্যটা বলে দেয় শিনজো। জানা যায়, পুরো ঘটনাই আসলে সাজানো নাটক!

মা-বাবার মনোযোগ নিজের দিকে ফিরিয়ে আনতে চায় শিনজো। তাই অপহরণের এ নাটক সাজায়। আর এদিকে মুক্তিপণের টাকা দিয়ে একটা মোবাইল ফোন কেনা গেলেতো দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা। গত এক বছর ধরে একটা মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার জন্য মা-বাবার মাথা খারাপ করে রেখেছিল ছেলেটা। আর দেরি সহ্য হচ্ছিল না তার!

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।