ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

ধুতি-পাঞ্জাবি ও শাখা-সিঁদুর পরিয়ে বট-পাকড়ের বিয়ে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
ধুতি-পাঞ্জাবি ও শাখা-সিঁদুর পরিয়ে বট-পাকড়ের বিয়ে!

সিরাজগঞ্জ: কামারখন্দ উপজেলায় ধুতি-পাঞ্জাবি ও শাখা-সিঁদুর পরিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে দুই গাছের। সিঁদুর ও শাড়ি পড়ে কনে সেজেছে বট গাছ।

ধুতি-পাঞ্জাবি আর মুকুট পড়ে বর সেজেছে পাকড় গাছ।

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় তাঁত ব্যবসায়ী শীতল সরকারের বাড়িতে মহা ধুমধামের মধ্য দিয়ে বট-পাকোড় গাছের ব্যতিক্রমী এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।  

এভাবেই হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিয়ে দেয়া হলো বট ও পাকড় গাছের। এতে প্রায় ৭ শতাধিক অতিথি অংশ নেন। এছাড়াও বিয়ে দেখতে বিভিন্ন বয়সী শত শত মানুষ ওই বাড়িতে ভীড় জমায়।  

শীতল সরকার জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে তার বাড়িতে একটি পাকড় গাছের জন্ম হয়। বেশ কয়েক বছর পর ওই পাকড় গাছের পাশেই আরও একটি বটগাছের জন্ম হয়। হিন্দু শাস্ত্রে বট ও পাকড় গাছ পাশাপাশি জন্ম হলে তাদের মধ্যে বিয়ে দেয়ার বিধান রয়েছে। এই বিয়ে না দেওয়ায় তাদের পরিবারে বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যা ও সংকট দেখা দেয়। এসব সমস্যার কারণে সেই পাকড় ও বট গাছের বিয়ের আয়োজন করতে পারেননি তিনি।  

তিনি আরও বলেন, আমি ও আমার পরিবার একাধিকবার স্বপ্ন দেখি বট ও পাকড়ের বিয়ে না দেয়ায় এসব পারিবারিক সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তাই পারিবারিক সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে উৎসবমুখর পরিবেশে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। রায় দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম, গোপালপুর গ্রামের আনন্দমোহন, দেবাশীষ মণ্ডল মিঠুনসহ স্থানীয় অনেকেই বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই শীতল সরকারের বাড়িতে চলছিল বট ও পাকড় গাছের বিয়ের আয়োজন। বিয়ে উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পুরো গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে পাকড় গাছকে সাজানো হয়েছিল বর।  

ধুতি, পাঞ্জাবি ও মুকুট পড়িয়ে সাজানো হয় এ গাছটিকে। আর বট গাছকে শাড়ি জড়িয়ে, শাঁখা-সিঁদুর ও মুকুট পরিয়ে কনে সাজে সাজানো হয়। এছাড়াও বিয়ে উপলক্ষে আলোকসজ্জা আর ঢাক ঢোলের পাশাপাশি সাউণ্ড বক্সে গান বাজিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অতিথিরা। সাথে ছিল নৈশ ভোজের আয়োজন।  

রায় দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ জানান, হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী বট ও পাকড় একই স্থানে জন্ম হলে তাদের মধ্যে বিয়ে পড়াতে হয়। এ কারণে শীতল সরকার বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই বিয়ে সম্পন্ন করে। ব্যতিক্রমী এ বিয়েতে অতিথি ছাড়াও আশ-পাশের গ্রাম থেকে আসা প্রায় ৫শ' লোককে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।