ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

উদ্যানটাকে বাঁচান!

রুদ্রাক্ষ রহমান, কথা সাহিত্যিক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৫ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১২
উদ্যানটাকে বাঁচান!

ঢাকা: আমার ক্ষমতা নেই। যাদের আছে তারা এগিয়ে আসুন।

প্লিজ উদ্যানটাকে বাঁচান। রক্ষা  করুন। আখেরে আপনাদেরই লাভ হবে। আপনার হবে। আপনার সন্তানের হবে।

আপনারাইতো এই ঢাকা শহরে থাকবেন। আধিপত্য করবেন। আপনাদের জন্যে নির্মল বাতাস আর একটু খোলা রোদেলা পরিবেশের বড়বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়বে। গাড়িতে-বাড়িতে এয়ারকন্ডিশনের বদ্ধ হাওয়া আর কতক্ষণ ভালো লাগবে?

আমি গ্রামের ছেলে, কটা নদী পেরিয়ে এই শহরে এসেছিলাম। তারপর খুব মনোযোগ দিয়ে দেখেছি, নিষ্ঠার সবটুক ঢেলে দিয়ে বুঝেছি-`এই গাঁয়ে` আমার কোন ঘর-বাড়ি নেই। তাই একদিন না হয় গ্রামেই ফিরে যাব।

আপনি, আপনারা কোথায় যাবেন? ভাবছেন অন্যের গড়া সুখী, নিরাপদ শহরে। তারা আপনাকে নেবে না। আর অন্যের গড়া পরিপাটি শহরে কেনো থাববেন `প্রবাসী` হয়ে?

 জ্যৈষ্ঠের খরতাপে শরীর-মন পুড়ে যায়। একটু হাঁটলেই শরীর বেয়ে নেমে আসে ঘামের ঝরণা। সেই জ্যৈষ্ঠের এক দুপুরে একটু ছায়া পেতে, ক্ষণিক মায়া পেতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢোকা। ইতিহাসের সঙ্গে হাত ধরে চলা এই উদ্যান।

এখন উদ্যান বলতে দ্বিধা হয়। একটা, দুইটা করে শত শত দোকান, তাবু, আখড়া দখল করে নিচ্ছে। এক বছর, দু`বছর আগেও এমন ছিল না। দ্রুত বদলে যাচ্ছে। দিনমান হট্টগোল। বাধাহীন ঘুরে বেড়াচ্ছে মোটর সাইকেল। হর্নের উৎকট চিৎকারে গাছের ধ্যান নষ্ট। গাছ নেই, তারপরও যা আছে তাদের সৌন্দর্য চোখে পড়ে না দখলী জঞ্জালের ভিড়ে।

রাতে বৃষ্টি হয়েছে। হিজলের ডাল, পাতা ধুয়ে নির্মল। কিছুদিন আগে লম্বা দুলের মতো হিজল ফুল এখন ফলে ভরে গেছে। এদিকে, ওদিকে ছড়ানো আরও গাছ। গাছের তলায় তলায় দোকান। গাছ থাকবে না। যেমন গাছের তলায় ঘাস ছিল, নেই। সবুজ উধাও।

দেখছে সবাই। কেউ কিছু বলছে না। উদ্যানের বুক চিড়ে কারা রাতারাতি দোকান দিচ্ছে। কারা অনুমতি দিচ্ছে কেউ প্রশ্ন করে না। আমরা করতে পারি না। কাকে করবো?

তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলি এভাবে অন্ধ হয়ে থাকবেন না। এটা পাপ। এখনি প্রতিকার করুন। নাহলে রেহাই পাবেন না। ঢাকাকে বাঁচাতে, ইতিহাস রক্ষায় এ উদ্যানটাকে বাঁচান। প্লিজ!

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১২
সম্পাদনা: ওবায়দুল্লাহ সনি, নিউজরুম  এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।