ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

ছায়া হয়ে থাকবেন তিনি

অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৩
ছায়া হয়ে থাকবেন তিনি

ঢাকা: গত বছরের ৮ ডিসেম্বর যে খবরটি পুরো জাতিকে হতাশা আর বিষাদগ্রস্ত করেছিল, বৃহস্পতিবার ২৮ ফেব্রুয়ারির আরেকটি খবর আনন্দ-উল্লাস হয়ে সে হতাশাকে ঢেকে দেবে নিঃসন্দেহে। তারপরও ন্যায়পরায়ণ, সত্যনিষ্ঠ, দায়িত্ববান একজন বিচারকের আরাধ্য কাজটি সুসম্পন্ন করে যেতে না পারার বেদনা হয়তো রয়েই যাবে।

তবে সে বেদনার সঙ্গে সহমর্মী হবে বাঙালি আর দায়িত্ব আর শপথের প্রতি অবিচল থাকা মানুষটিকে মনে রাখবে চিরকাল।

কারণ, তিনিই যে বৃহস্পতিবারের সফলভাবে সম্পন্ন হওয়া কাজটির মূল কারিগর। দেশ-জাতির কাঁধে ৪২ বছর ধরে সওয়ার হয়ে থাকা কলঙ্কমুক্তির প্রথম ধাপটি যে তার হাত ধরেই সম্পন্ন হতে যাচ্ছিলো, অনাকাঙ্খিত দুঃখজনক ঘটনাটি না ঘটলে তা হতোও। আর সে কলঙ্কমুক্তির যে প্রক্রিয়া এখন চলছে, তাওতো তার দেখানো পথ বেয়ে আসছে।

তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির আসল বিজয়-আনন্দ অর্জনের এ কাজ যার বা যাদের হাত দিয়েই সম্পন্ন হোক, তিনি থাকবেন ছায়া হয়ে।        

তিনি হচ্ছেন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ চেয়ারম্যান পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা এই মানুষটির কথা জাতি চিরকাল শ্রদ্ধা-কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে।

বিচারপতি নাসিম যেদিন পদত্যাগ করেন, তার মাত্র দু’দিন আগে ট্রাইব্যুনাল-১ এ ৬ ডিসেম্বর শেষ হয়েছিল যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার সমস্ত বিচারিক প্রক্রিয়া। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তরকরণসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপকর্মের জন্য ‘দেইল্লা রাজাকার’ নামে কুখ্যাত সাঈদীর মামলার রায় যে কোনো দিন দেবেন বলে জানিয়ে রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণও (সিএভি) রেখেছিলেন তার নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। তিনি যদি রায় ঘোষণা করে যেতে পারতেন, তাহলে সেটাই হতো যুদ্ধাপরাধের মামলার প্রথম রায়, মুক্তিকামী-শান্তিপ্রিয় বাঙালি জাতির ৪২ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম, দাবি-দাওয়া, চাওয়া-পাওয়া আর স্বপ্নের প্রথম বিজয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে শহীদ ও তাদের পরিবার, সম্ভ্রম হারানো মা-বোন, মুক্তিযোদ্ধা আর নির্যাতিত-ভুক্তভোগী মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাসহ মানবতাবাদী বাংলাদেশ সৃষ্টির যে প্রক্রিয়া এখন চলছে, তার সূচনা ঘটতে পারতো তার মাধ্যমেই। তার পদত্যাগের বেদনাদায়ক ঘটনা না ঘটলে হতোও তাই। তারপরও এর রূপকার ও প্রতিষ্ঠাতা-অগ্রপথিক তিনিই রয়ে যাবেন।

স্কাইপিতে বেলজিয়াম প্রবাসী বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে তার কথোপকথন নিয়ে জামায়াতের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি চক্র যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালই শুধু নয়, দেশের বিচার ব্যবস্থাকেও কলঙ্কিত-বিতর্কিত করতে এক ভয়ঙ্কর খেলায় মেতে উঠেছিল। ধারাবাহিকভাবে কথোপকথন প্রকাশ করে দৈনিক আমার দেশ।  

তবে আমার দেশে প্রকাশিত কথোপকথনের কোথাও পদত্যাগী এই বিচারপতি রায় কি হবে বা কিভাবে হবে সে নিয়ে কোনো একটি কথাও বলেছেন- তা প্রমাণ করতে পারেনি অপশক্তিটি। চার দিন ধরে প্রকাশিত বিশাল বিশাল প্রতিবেদনগুলোর কোথাও বিচারপতি নিজামুল হক কিংবা আহমেদ জিয়াউদ্দিন কার মামলার রায় কি হবে সে বিষয়ে কোনো কথা বলেছেন বলে প্রকাশ করতে পারেনি। বরং প্রতিবেদনগুলোতেই বোঝা যায়, তারা কথা বলেছেন ট্রায়ালের প্রসিডিংস নিয়ে। প্রতিদিনের বিচার সর্ম্পকিত আলোচনা করেছেন তারা।

বিচারপতি নিজামুল হক ড. জিয়াকে জিজ্ঞেস করেননি, ‘কাকে কি করবো?’। কিংবা এতোদিন ধরে চলা এই বিচারে নিজামুল হকের দেওয়া কোনো আদেশ নিয়েও তারা কথা বলেননি কিংবা হয়নি কোনো এভিডেন্স টেকিং নিয়ে কথা। দু’জন আইনের মানুষ ব্যক্তিগত আলাপে আইন নিয়েই বেশি কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক।

বরং কথিত ওই কথোপকথনই প্রমাণ করে দেয়, বিচারপতি নিজামুল হক কারো কাছে নতি স্বীকার করতে চাননি। তিনি চেয়েছেন, আইন তার নিজ গতিতে চলবে। আহমেদ জিয়াউদ্দিনও চেয়েছেন সরকারকে বোঝাতে।

তারপরও নিজামুল হকের সম্পর্কে বিতর্ক তৈরি করা হয়। এর উদ্দেশ্য যে, বিচার বানচাল করা তা তিনিও বুঝতে পেরেছিলেন। তাইতো তিনি বিচার ব্যবস্থার প্রতি সংশয়ের জন্ম না দিয়ে চলে গেছেন। তার জন্য এই বিচার নিয়ে জনগনের মনে কোনো সংশয় থাক, সেটাও তিনি চাননি।

বিচারপতি নিজামুল হক আন্তর্জাতিক এবং সরকারের কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি। তিনি তার মতো করে আইন অনুযায়ী বিচার কাজ চালিয়ে গেছেন এবং বিচার নিয়ে কোনো কথা বলেননি। বিচার নিয়ে যা কথা হয়েছে, সেটা হয়েছে কি করে বিচারকে স্বচ্ছ, আন্তর্জাতিক মানের করা যায় এবং বিচার কাঠামো নিয়ে।

বিচারপতি নিজামুল হক একটা ল্যান্ডমার্ক জাজমেন্ট দিতে চেয়েছিলেন বলেই তিনি আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আইন নিয়ে আলাপ করেছেন। তিনি ড. জিয়াউদ্দিনের কাছে জানতে চাননি, ‘কাকে কিভাবে রায় দিলে ঝুলানো যাবে, সে উপায় বাৎলে দিন। ’

বরং তার উদ্দেশ্য ছিল, নতুন আইন নিয়ে জানা। নতুন একটি আইন নিয়ে বিচার করতে যাচ্ছেন। তাই সে বিচারের একটি আন্তর্জাতিক মান তিনি বজায় রাখতে চেয়েছিলেন। যে কারণে ইন্টারনেটের এই যুগে স্কাইপেতে একজন অভিজ্ঞ মানুষের সঙ্গে আইন নিয়েই কথা বলেছেন তিনি। বিনয়ী অথচ নির্ভীক বিচারপতি নাসিম ট্রাইব্যুনালে বলেছিলেন, ‘‘এটি একটি নতুন আইন। আমরা সবার কাছ থেকেই শিখছি। ’’ এটা তার যোগ্যতা-অভিজ্ঞতা, প্রাজ্ঞতারই নমূণা।

তিনি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে, কারও চাপের কাছে নতি স্বীকার করে কোনো ধরনের নৈতিক বা আইনগত অন্যায় করেননি। বিচারপতি  নিজামুল হক নাসিম সরকারপক্ষ কিংবা আসামিপক্ষের কারো দ্বারাই প্রভাবিত নন বলে নিজেকে প্রমাণিত করে গেছেন। তার এ নিরপেক্ষতাও ঘোষিত রায়গুলোকে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলবে।
এর ফলে তার কাজে কোনো আইন ভঙ্গ হয়নি, যা এমনকি ইকনমিস্টও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। যে ইকনমিস্ট প্রথম এ স্কাইপি কথোপকথন নিয়ে কথা উঠিয়েছিল, সেই ইকনমিস্টই বিচারপতি নাসিমের পদত্যাগের পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তারিখের বিশদ প্রতিবেদনের শেষাংশে এসে স্পষ্টই বলেছে – “We do not believe he (Ahmed Ziauddin) has broken any laws and cannot be held responsible for the actions of others” কোনো নৈতিকতার মানদণ্ডেরও লঙ্ঘন হয়নি, বরং নৈতিক দায়িত্ব পালিত হয়েছে।

শুরু থেকেই আসামিপক্ষ তথা জামায়াতি অপশক্তি এ বিচারকে ‘প্রহসনমূলক’ বলে এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। তারা (সাঈদীর আইনজীবীরা) শুরুতেই (অক্টোবর’২০১০) এ বিচারপতি নাসিমকেই সরানোর নানা অপচেষ্টা চালান। আর তারাই সর্বশেষ বিচারপতি নাসিমের স্কাইপিতে কথোপকথন ও পদত্যাগকে কেন্দ্র করে সাঈদীরটিসহ ৫টি মামলার পুনর্বিচারের দাবি তোলেন। ট্রাইব্যুনাল-১ এর অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে তারা এ বিষয়ে ষড়যন্ত্রের নানা দিকেও অপচেষ্টা চালান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট’৭৩ এর ৬(৪) এবং ৬(৬) এ স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘বিচার কাজ যেটা যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকেই শুরু করা যাবে। একজন বিচারপতি অনুপস্থিত থাকলে বা না থাকলে (যে কোনো কারণেই বিচারপতি পরিবর্তন হতে পারেন) বিচার ব্যবস্থা কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না। ’ তাই পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনাল-১ ও ট্রাইব্যুনাল-২ স্বাভাবিকভাবেই পুনর্বিচারের দাবি নাকচ করে দিয়ে বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

তবে ট্রাইব্যুনাল-১ সাঈদীর মামলায় উত্থাপিত উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক পুনরায় শুনে বিচার প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত করেছেন। এটিও তারা করেছেন বিচারপতি নাসিমের চাওয়া ও তার দেখানো পথ অনুসরণ করেই। এ পথ ট্রাইব্যুনাল, আইন-আদালত ও বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার পথ।

আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর ১১(৩) ধারায় দ্রুত শুনানি করার কথা পরিষ্কার বলা হয়েছে। অযৌক্তিকভাবে বিচার বিলম্বিত করার চেষ্টা বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। আর বিভিন্ন ছুতায় বিচার বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে-চাচ্ছেন জামায়াতিরা। একাত্তরের গণহত্যাকারীদের দোসররা কোনো বিধিই মানতে চাচ্ছেন না। এখনো চাচ্ছেন বিচার বিলম্বিত করতে।

তারপরও বিচারপতি নাসিম এ চাপকে আমলে নেননি। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ সহ্য করেছেন দিনের পর দিন। পরে তারাই সিনিয়রদের নিয়ে তার কাছে এসে মাফ চেয়েছেন। তাই যারা তার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলেন পরবর্তীতে তার উষ্ণ ও মিষ্টি ব্যবহারের জন্য বিচারপতি নাসিমকে মেনে নিয়েছিলেন অকুণ্ঠচিত্তে।

কথা আরও থেকে যায়। বিচারের মূল সুর, আর আসামিদের ব্যাপারে ‘ইনোসেন্ট আনটিল প্রুভেন গিল্টি’-এ এথিক্সে বিশ্বাসী ছিলেন। যতো আসামিকে তার এজলাসে আনা হয়, তাদের প্রত্যেকের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেখিয়ে গেছেন তিনি। ভালো ব্যবহার করেছেন সবার সঙ্গে। বিধি ভেঙ্গে তারা কথা বলতে চাইলে অন্যরা বাধা দিলেও তিনি সুযোগ করে দিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রেও নিয়ম ভেঙ্গে কোনো কিছু করে যাননি সৎ এ মানুষটি।

বৃহস্পতিবার সাঈদীকে ফাঁসির যে রায় দেওয়া হয়েছে, সেটি হচ্ছে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠিত হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত তৃতীয় রায়। অথচ ট্রাইব্যুনালের প্রথম মামলা হিসেবে, প্রথম বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কারণে এটি হতে পারতো প্রথম রায়। তা হয়নি বটে, কিন্তু এটিসহ অন্য সব মামলার রায়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে গেছে।

সে কারণে শত ষড়যন্ত্র- অপতৎপরতার মুখেও বিচারপতি নাসিমের শেষ করে সাঈদীর মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া (প্রথম দফায়) দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া এ ধরনের (যার নজির রয়েছে বিশ্বে হাতে গোণা কয়েকটি) বিচারের পথিকৃত হয়েও থাকবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, ‘‘এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যেদিন থেকে শুরু হয়েছে, সেদিন থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া বিচারপতি নিজামুল হক একটি দিনের জন্যও ট্রাইব্যুনালে আসা থেকে বিরত থাকেননি। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টা, কখনো সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এজলাস কক্ষে বিচার কাজ পরিচালনা করেছেন। বইপত্র, নথি নাড়াচাড়া করতেন। সাক্ষী-সাবুদদের জেরার রেকর্ড ঘাঁটতেন। প্রতিটি প্রসিডিংসের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতেন। ট্রায়ালের শুরু থেকে প্রতিদিনের ঘটনার রেকর্ড ছিল তার নখদর্পণে। আবার রাতেও তিনি কিভাবে এই বিচারকে আন্তর্জাতিক মানের করা যায় সেটা নিয়েও কথা বলেছেন আইন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। এখানেও পাওয়া যায় তার সততার পরিচয়।

বিশ্বমানের ট্রায়াল চাইতে গিয়ে, ইন্টারনেটে ড. জিয়ার সঙ্গে বিচারের নানা বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু কোথাও কি একবারও বলেছেন, রায় কী হবে? একবারও কি তিনি রায় নিয়ে আলোচনা করেছেন? করেননি। উনারা দুজনেই রায়ের আকার, আকৃতি, উপস্থাপনা ও বিভিন্ন রেফারেন্স নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিভাবে রায়কে আন্তজার্তিকমানের করে তৈরি করা যায় তা নিয়ে কথা হযেছে। যেন বিশ্বের চোখে বাংলাদেশ প্রমাণ করতে পারে যে, ১৯৭১ এ সংঘটিত অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা, অধিকার ও যোগ্যতা বাংলাদেশেরই আছে। আমাদের জাতিসংঘ, আমেরিকা, ভারত বা সৌদি আরবের কাছে যেতে হবে না। আমরা আমাদের আইনে আমাদের দেশীয় বিচারকদের দিয়েই এ বিচার সম্পন্ন করতে পারব।

যারা ওই পূর্ণাঙ্গ কথোপকথন পড়েছেন, তারা প্রত্যেকে স্বীকার করেছেন, কোথাও কোন অসৎ উদ্দেশ্য চোখে পড়েনি। কোথাও রায় কী হবে তা নিয়ে তিনি আলোচনা করেননি।

এক কথায়, তিনি চাইতেন, যেন বিশ্বমানের ট্রায়াল হয়। যেন খুব ফেয়ার হয় ট্রায়ালটি। ফেয়ার ট্রায়াল নিশ্চিত করতে কোনো বিতর্ক যেন এ বিচারকে কালিমা লেপন করতে না পারে, তাই তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে চলে গেছেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের মাথার ওপরে রেখে গেছেন তার ছায়া, যে ছায়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের আইনসিদ্ধ বিষয়গুলোকে আগলে রাখবে, পথ দেখাবে চিরকাল।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৩
সম্পাদনা: রানা রায়হান, আউটপুট এডিটর[email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।