ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

কিউবি ও বাংলালায়নের প্রতারণা

শরিফুল ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৩
কিউবি ও বাংলালায়নের প্রতারণা

বাংলাদেশে দুইটি কোম্পানি ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছে গত ২ বছর যাবত। এটা ঠিক যে ওয়াইম্যাক্স কোম্পানিগুলো অন্তত পক্ষে ঢাকা শহরে ইন্টারনেট সহজলভ্য করেছে সব জায়গায়।

আমাদের দেশী আইএসপিগুলো এখনো গুলশান, বারিধারা, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডি, মতিঝিল এলাকা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি পর্যাপ্ত রেভ্যেনু না পাওয়ার আশায়।

সে হিসেবে ঢাকা শহরের আনাচে কানাচে বাংলালায়ন এবং কিউবি ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিয়েছে। আমার মনে আছে, আগে যখন উলন রোডে থাকতাম, জিপি ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম। এরপর প্রথম যখন কিউবি আসল কি যে খুশী হয়েছিলাম ২৫৬ কেপিবিএস গতির কারণে। এরপর যখন কিউবি গতি বাড়িয়ে দিল তখন আরো খুশী হলাম। কিন্তু এসব রক্ত চোষা কোম্পানির গ্রাহকরা যে বেশীদিন খুশী থাকতে পারবে না এটা আমার জানা ছিল। অখুশীর মাত্রাটা কোন পর্যায়ে যায় সে জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

অপেক্ষা বেশী দিন করতে হল না। চলে এলো ফেয়ার ইউসেজ পলিসি যেটাকে ফাপ নামে আখ্যায়িত করল কোম্পানিগুলো। তাদের নিয়ম অনুযায়ী মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যবহারের পর আপনার গতি কমে যাবে। এমন কমা কমবে যে ইন্টারনেট থাকবে, কিন্তু আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না।

ইন্টারনেট ব্যবহার করার একটা স্বভাব হল আপনি যখন বেশী গতির লিংক ব্যবহার করছেন, এরপর কিন্তু আপনার কম গতি ভালো লাগবে না। আর এটাকে পুঁজি করেই ওয়াই ম্যাক্স কোম্পানিগুলো ফাপ এর প্রচলন করে যাতে পরবর্তীতে আপনি প্যাকেজ আপগ্রেডেশন করেন।

আমার কথা কিন্তু অন্য জায়গায়। কিউবি বা বাংলালায়ন যখন ব্যবসা শুরু করে তখন ব্যান্ডউইথ’র সরকারি দাম ছিল ১৮ হাজার টাকা+ ভ্যাট। এরপর কয়েক দফা ব্যান্ডউইথের দাম কমে এখন সেটা হয়েছে ৪হাজার ৮০০টাকা +ভ্যাট। কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে তো কোনো কোম্পানি দাম কমাইনি, এমনকি ব্যান্ডউইথ আপগ্রেডও করা হয়নি এ পর্যন্ত।

স্বাভাবিক ভাবে মূল্য কমালে রেভিনিউ কমে যাবে, এজন্য এ ধরনের সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মূল্য না কমিয়ে গতি বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ওয়াই ম্যাক্স কোম্পানিগুলো এসবের ধার ধারেনি গত ২ বছরেও।

একটা জিনিস সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বিটিসিএল বা মাংগো অথবা বিভিন্ন আইআইজি কোম্পানি অনেক আগেই কিন্তু মূল্য কমিয়েছে। এবং তারা কিন্তু গতি বিক্রি করে, ডাটা ভ্যলিউম বিক্রি করে না। কিন্তু বাংলালায়ন বা কিউবি ফেয়ার উইসেজ পলিসির মাধ্যমে গ্রাহকদের ডাটা ব্যবহারেও সীমাবধ্যতা আরোপ করে যেটা বাংলাদেশের অন্য কোন আইএসপি কোম্পানি করে না। এখানেও গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার যে, গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে এই দুইটি বড় কোম্পানির কাছে প্রকাশ্য দিবালোকেই অথচ বিটিআরসি সব দেখে বুঝেও চোখ বন্ধ করে রেখেছে।

কেউ কি বলতে পারবেন আমরা সাধারণ গ্রাহকরা কোথায় যাব?

লেখক: বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী, ইমেল: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৩
সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।