ঢাকা, বুধবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তমত

দায় মেটানোর সময়

আমিনুল ইসলাম, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৪
দায় মেটানোর সময় জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী

জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী মামলার রায় ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার। যার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি সহায়তা, বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মোট ১৬টি অভিযোগ রয়েছে।



এ সেই নিজামী, যিনি একাত্তরে ঘৃণ্য আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন। ছিলেন জামায়াতে ইসলামির ছাত্র সংগঠন ছাত্রসংঘের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান শাখার প্রধান। এছাড়া ঘৃণ্য রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতে তার ভূমিকা ছিলো বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।

এ সেই নিজামী, যিনি একাত্তরে বাংলাদেশকে অস্বীকার করে এই দেশের নিরীহ মানুষ হত্যায় জড়িত ছিলেন। এ সেই নিজামী যিনি মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে অস্বীকার করার পরও স্বাধীন বাংলাদেশে একজন পূর্ণমন্ত্রী হয়ে নিজ গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। মানবতাবিরোধী হেন কাজ নেই যা একাত্তরে এসব ঘৃণ্য রাজাকার, আলবদর করেনি। অথচ এরাই একসময় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রক্ষমতায় পুনর্বাসিত হয়েছে, আর একাত্তরে শহীদরা হয়তো দূর থেকে কেবল উপহাস করেছে আমাদের।

নিজামি কেবল একজন সাবেক মন্ত্রী নন, তিনি জামায়াতে ইসলামীর আমিরও বটে। যে দলটির আমির ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন সেই দলটি কেমন হবে সেটি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়ে না। এই দলটি একাত্তরে বাংলাদেশকে অস্বীকার করেছে। অথচ এই স্বাধীন বাংলাদেশে দলটি শুধু রাজনীতিই করেনি, দলের অনেক সদস্য মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছে। যেই দলটি একাত্তরে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলো, দল হিসেবে তাঁদের কেন বিচার হবে না, সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ শুধু ব্যক্তি নয়, দল হিসেবে এই জামায়াতে ইসলামীর বিচারও করবে।

মঙ্গলবার নিজামীর রায় ঘোষণা করা হবে। এর আগে আমরা দেখেছি সব রায়ের সময়ই হরতালসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে জামায়াতে ইসলামি তথা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য একটা গোষ্ঠী। কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। কোন ঘৃণ্য অপরাধীর রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কোনভাবেই যেন কোন নিরীহ মানুষের জান-মালের ক্ষতি না হয়।   সেই সঙ্গে নানা রকম গুজব থেকে শুরু, মিথ্যা, বানোয়াট বিষয় যাতে আগের মতো একটা গোষ্ঠী ছড়াতে না পারে সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

এখন সময় হয়েছে এই দায় মেটানোর। এসব ঘৃণ্য মানবতাবিরোধীর যথাযথ শাস্তির মাধ্যমে এই দায় মেটাতে হবে। ৪২ বছরের অপেক্ষা ঘুচুক। আমরা এই প্রজন্ম এ দায় থেকে মুক্তি পেতে চাই।  

আমিনুল ইসলাম: গবেষক ও  ও অনলাইন এক্টিভিস্ট, [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।