তোমার মৃত্যু কাঁদায়নি। যারা বলছে কেঁদেছে, ওটা কাব্যিক।
নিরাপদ সড়কের জন্য পথে নামলো কতজন! উল্টোপথে হেঁটে সেই সমাজের চারপাশের মানুষেরা গড়ে তুলছে ‘নিরাপদ নরক’ সবাই ভেবে নেয়, যার সঙ্গে হচ্ছে হোক গিয়ে, আমার সঙ্গে হবে না অন্ততঃ। সেই বিশ্বাসের সড়কে হেঁটে দেখা মেলে নরকের। চোখ মেলে তাকানো জগতেই।
মানুষ শব্দটা এখন জাফরানের মতো দামি ও দুর্লভ। এক কেজি জাফরান কিনতে হলে যেমন ফতুর হতে হবে, তেমনি ফাস্টফুডের দোকানে গড়া শতকেজির দেহ থেকে এককেজি মানুষ পেতে খুঁজতে হবে লাখো জীব। নারীবাদী, পুরুষবাদী, পুঁজিবাদী, বাদী, বিবাদী। সবার একটা করে স্ট্যাটাস হবে।
এই দেখো না, আমিও লিখতে বসলাম। আসলে আমরা সবাই পরিণত হচ্ছি অমানুষ ধর্ষকগুলোর দাস ও দাসি বাঁদীতে। কিভাবে? ওই যে বললাম, ভেবে নিচ্ছি, ‘আমার কারও সঙ্গে হবে না!’ যেদিন তোমার অপরাধীর শাস্তি হবে, সেদিন আনন্দ মিছিলে তুমি থাকবে তো?
কতই না ভালো হতো, যদি অপরাধীর শাস্তি হলে তোমাকে ফিরে পেত তোমার পরিবারের মানুষগুলো! ফায়ার ফাইটার সোহেল রানাকে ‘অগ্নি বীর’ উপাধি দেয়া হলো। তুমিও কী ‘অগ্নিযোদ্ধা’ না? দুজনের আগুন প্রয়াণটা দুরকম কষ্ট দেয়।
প্রতিকার সবকিছু কেড়ে নেয়ার পর সান্ত্বনা পুরস্কার। দরকার প্রতিরোধ। ধর্ষককে হত্যা করা হারকিউলিসের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন ধর্ষণ ঠেকানো সুপার হিরো।
‘গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না’ টি শার্টের আলোচনাটা কিন্তু সমান্তরাল সময়েই চলছে। বহু আঙ্গিকে বহুপক্ষ নিয়েছে সবাই। আমরা মিলেমিশে মানুষ হতে পারলাম কই? অবলা কাক পর্যন্ত কাকের মাংস খায় না। আর আমরা? নিজেরাই নিজেদের লজ্জা দিচ্ছি নানান অপকর্মে। তাই শুনতে অশ্রাব্য হলেও বলি আবারও, ‘বেঁচেই গেলে নুসরাত!
আমরা প্রতিদিন ফিনিক্স পাখির মতো মরে আবার বেঁচে উঠি- নখ, দাঁত, শিরদাঁড়া আর মগজ ছাড়া। যাদের... আসল পুরুষের মেডেল ঝোলে গলায়। বিদায়...!
পরিচয়: লেখক ও সিনিয়র সহকারী সচিব
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
এমএ/