ঢাকা: ২০১৩ সালে নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় যাওয়ায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় মঞ্চে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব আজকে (১৪ ডিসেম্বর) ভোর বেলায় বুদ্ধিজীবী দিবসে সাজ্জাদুল সুমনের বাড়িতে গেলেন। ২০১৩ সালে গুম হয়েছিল। তার বাড়িতে উনি গেলেন, আমি সবিনয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিমাসে কতজন গুম হয় সেই চিত্রটা কিন্তু সিএনএনে আমরা দেখেছি। কতজন নারী ধর্ষিত হয় সেটাও আমরা দেখেছি। কতজন খুন হয় সেই চিত্রও আমরা দেখেছি।
তিনি বলেন, পিটার হাস সাহেব, আপনি বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর... যদি দেখতাম আপনি বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গেছেন সেই চিত্রটা বেশি ভালো লাগতো। কিন্তু উনি চলে গেছেন সুমনের বাড়িতে।
হেফাজতের নেতাকর্মী গুম হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বলা হলো ৬৭ জনকে গুম করে খুন করেছে শেখ হাসিনার সরকার। পরে সাংবাদিকরা তদন্ত করে দেখলো এদের অধিকাংশ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে। সেই অবস্থায় এদের ছবি তুলেছে। আজকে এই যে ৬৭ জন এরা কি গুম হয়েছে, এরা গুম হয়েছিল?
তিনি বলেন, ‘আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যারা গুম নিয়ে কথা বলেন তাদেরকে বলব ফরহাদ মাজহার সাহেব নাকি গুম। কয়েকঘণ্টা পর দেখা গেলো উনি খুলনা অভিমুখে বাসে। নিজে নিজেই চলে গেছেন এটা কি গুম। এসব ঘটনা অনেক আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মামলা হয়েছে খুনের মামলা, মাদকের মামলা এখন নিজেই নিজেকে নিখোঁজ করেছে। বিএনপির এ রকম অসংখ্য কর্মী আছে। মামলা থেকে রক্ষা পেতে নিখোঁজ। চকরিয়ার সালাউদ্দিন, কত অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সালাউদ্দিন গুম হয়ে গেলে, নিজে নিজেই চলে গেল ইন্ডিয়া। এসব গুমের কাহিনী আপনাদের জানা উচিত মিস্টার পিটার হাস।
বিরোধীদের নিষেধাজ্ঞার মিশন ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এসব গুমের কাহিনী শুনিয়ে লাভ নেই। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাবেন বাংলাদেশের ওপর। মিশন ফেইলড, আমির খসরুর ওয়াশিংটন মিশন। নিষেধাজ্ঞা দিতে চেয়েছিল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ২০ দেশের ৭০ জনের বিরুদ্ধে। সেখানে বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ কিন্তু নেই। তবুও লবিস্ট নিয়োগ করে।
তিনি আরও বলেন, আমির খসরু একা যাননি। লবিস্ট নিয়োগ করেছে তারা। তার নাম কি জানেন, টোবি ক্যাডম্যান। তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী। যুক্তরাজ্যের একজন আইনজীবী, তিনি লবিস্টের কাজও করেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি (টোবি ক্যাডম্যান) সাক্ষাতকারে আল জাজিরাকে বলেছেন আমি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য, পুলিশ এবং র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ করেছিলাম। যুক্তরাষ্ট্র কথা রেখেছে, যুক্তরাজ্য আমার অনুরোধ রাখেনি। উষ্মা প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, টাকা পয়সা দিয়ে এসব করছেন, কোথা থেকে আসে টাকা? কারা দেয় টাকা, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি সব খবর আসে। একটা মিটিং করেন ৭ দিন আগে থেকে পিকনিক। টাকা আসে কোথা থেকে?
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
এমইউএম/এমএমজেড