ঢাকা: বিএনপিকে মালয়েশিয়ার কথা স্মরণ রাখার পরামর্শ দিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, মালয়েশিয়াতে ছোট ছোট পার্টি প্রত্যেকে নির্বাচিত হয়েছে। আজকে বিএনপিকে যদি বড় কাজ করতে হলে, তাদের ২৭ দফা পূরণ করতে হলে, ছোট দলগুলোকে সঙ্গে নিতে হবে।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ভাসানী অনুসারী পরিষদে যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এ পরামর্শ দেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ভাসানী অনুসারী পরিষদ।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আরও বলেন, বিএনপি ২৭ দফা দিয়েছে, এটা ভালো। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, এটা হাফ হার্টেড। এটাতে তাদের আরও অনেক বেশি কাজ করার দরকার আছে। আজকে মিটিং মিছিল করতে পারবো না, এটা হতে পারে না। বিএনপির তাদের ঘোষণায় আরো পরিষ্কারভাবে বলা উচিত, মিটিং মিছিলের জন্য কারো অনুমতি লাগে না। পুলিশ অনুমতি দেওয়ার কে?
পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের দুর্ভোগ তো দেখতেই পাচ্ছেন। এরই মধ্যে এসপি পর্যায়ের ১০ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। আপনারা যাদের জন্য গতবার দিনের ভোট রাতে করে দিয়েছিলেন, তারা আপনাদের প্রতি কি ব্যবহার করছে। এটা স্মরণ রেখে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের পথে আপনারা দৃঢ়বদ্ধ থাকেন। লোক পিটানো, গুলি করা বন্ধ করেন।
বনানীতে ফুটপাতের ডাব বিক্রেতাকে মাসে ২২ হাজার টাকা থানাকে দিতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাধারণ হকার, পথজীবী, ফুটপাথের দোকানদারদের কাছ থেকে ঘুষ খাওয়া বন্ধ করেন। বড়লোকদের কাছ থেকে ঘুষ খান, তাতে আপত্তি নেই।
হাইকোর্টের বিচারপতিরা মেরুদণ্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হাজী সেলিম ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত। তাকে উচ্চ আদলত জামিন দিয়ে দিয়েছেন। অথচ খালেদা জিয়াকে জামিন দিচ্ছেন না। আমাদের হাইকোর্টের বিচারপতিরা মেরুদণ্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে দেশ-জাতি কোথায় গেছে? একজন মানুষ প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পরও তার ডাণ্ডাবেড়ি না খোলা কোন আইনে আছে? এমনকি ব্রিটিশ আইনেও এটা ছিল না।
তিনি বলেন, দেশে পরিবর্তন আনতে হলে সাহস করে আমাদের সবাইকে রাস্তায় থাকতে হবে। আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে নিশ্চিতভাবে দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
বর্তমান সরকারের দুইটা বড় ব্যর্থতা আছে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, একটি হলো, তারা স্বাস্থ্য খাতে বিন্দুমাত্র উন্নতি করতে পারেনি। দ্বিতীয়ত হলো, রোহিঙ্গা। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র নীতিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আত্মরক্ষার ট্রেনিং দেন। তাদের যুদ্ধ তাদের করতে দেন। তাদের সাহায্য করুন। কিন্তু তা আমরা করিনি। এ দিক দিয়ে পররাষ্ট্র নীতি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের জাতীয় নির্বাহী কমিটির আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ সেলিম ও সদস্য অ্যাডভোকেট ওহেদুর জামান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নেতাকর্মীরা ভাসানী অনুসারী পরিষদে যোগদান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
এসসি/জেএইচ