ঢাকা: যুগপৎ কর্মসূচির শুরুতে সমমনা ৩৩টি রাজনৈতিক দল নিয়ে আজ শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকার রাজপথে নামছে বিএনপি। ছয়টি স্থান থেকে গণমিছিলের মাধ্যমে রাজধানীতে যুগপৎ কর্মসূচির সূচনা হবে।
তিনটি জোটভুক্ত ৩০টি দল এবং পৃথকভাবে তিনটি দল গণমিছিলের কর্মসূচি পালন করবে। সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে নগরের বিভিন্ন রাজপথ প্রদক্ষিণ করবে দলগুলো।
ইতোমধ্যে গণমিছিলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে দলগুলো। বিশেষ করে বিএনপি আজকের গণমিছিলে বড় জমায়েত করতে চায়। কর্মসূচি সফলে সমমনা দল ও জোটের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে বিএনপি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বার্ষিকী উপলক্ষে দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি। এ বছর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে যুগপৎ হিসেবে ৩৩ দলের অংশগ্রহণে এই কর্মসূচি নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে।
ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপি নয়াপল্টন থেকে মগবাজার, গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে পুরানা পল্টন মোড়, ১২ দলীয় জোট ফকিরেরপুল পানির ট্যাঙ্ক থেকে বিজয়নগর, পুরানা পল্টন ক্রসিংয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসি ক্রসিংয়ে এলডিপি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট এলাকায় গণমিছিল করবে।
মিছিল শেষে বিরোধী দল ও জোটগুলো যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। জানা গেছে, আগামী ১১জানুয়ারি দশটি বিভাগীয় শহরে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া, ক্ষমতা হস্তান্তর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ ১০ দফা দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ থেকে রাজধানীতে গণমিছিলের এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর সব বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও গণমিছিলের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, তাদের গণমিছিল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। দলের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হবেন এবং দুপুর ২টায় মিছিল বের করবেন।
তিনি জানান, মিছিলটি বিজয়নগর, কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মগবাজার মোড় হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নয়াপল্টনে গিয়ে শেষ হবে।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, বেলা ১১টায় তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে মিছিল বের করবেন।
১২-দলীয় জোটের নেতা ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বিজয়নগর অভিমুখে মিছিল করতে দুপুর আড়াইটায় তাদের নেতাকর্মীরা ফকিরেরপুল পানির ট্যাঙ্কের কাছে জড়ো হবেন।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ জানান, দুপুর আড়াইটায় তারা পুরানা পল্টন মোড় থেকে মিছিল শুরু করবেন।
এলডিপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলেছেন, তারা কোনো জোটে না থাকায় তারা আলাদাভাবে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবেন।
এলডিপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন রাজ্জাক জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে এফডিসির কাছে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তারা মিছিল বের করবেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটের সামনে থেকে গণমিছিল বের করার অনুমতি চেয়ে জামায়াতের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ডিএমপি কার্যালয়ে যায়।
জামায়াতের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেন অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান। জানা গেছে, পুলিশ জামায়াতে ইসলামীকে গণমিছিলের কোনো অনুমতি দেয়নি। তবে জামায়াত সূত্র জানিয়েছে তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে গেট থেকে মিছিল করবে।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, এটি ঢাকাভিত্তিক কর্মসূচি। ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগর থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারকে মেসেজ দিতে চাই। আমাদের প্রস্তুতি ভালো। আশা করি ব্যাপক লোকের সমাগম হবে। সাধারণ জনগণও আমাদের গণমিছিলে যোগ দেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
এমএইচ/আরএইচ