ঢাকা: মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আজকে যখন ফখরুলের মতো লোক বলেন, পাকিস্তান এর চেয়ে ভালো ছিল। এ কথা বলার পর যদি আজকে নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থাকত, মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত থাকত, যা হত সেটি আর বললাম না আমি।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয়’ এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন সম্পর্কে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বাংলাদেশ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের জন্য এরই মধ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ নির্বাচন হবে। ভোটার লিস্ট হবে যারা বর্তমানে ভাতাভুক্ত আছেন, তাদের তালিকার উপর নির্ভর করে। যারা মারা গেছেন, তাদের উত্তরাধিকাররা তো আর ভোটার হবেন না। দ্বিতীয়ত আরেকটি বিষয় হলো গঠনতন্ত্র, সেটিও আমরা এরই মধ্যে দিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, এ নির্বাচন এতদিন হয়নি বলে আমি মর্মাহত। এজন্য আজকে বিভিন্ন সংগঠন মাতবরি করে। সবাই মনে করে, মন্ত্রী চাইলে আকাশের চাঁদ এনে দিতে পারে, আর নির্বাচন তো সোজা বিষয়। আসলে তা নয়। তবে, আমি আশা করি জানুয়ারিতে নির্বাচনের সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমি যখন মন্ত্রী হই, তখন মুক্তিযোদ্ধাদের ৩ হাজার টাকা ভাতা ছিল। ভবিষ্যতে আরও পরিকল্পনা আছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, টানেল হতে পারে কাজেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যও ভালো কিছু হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার বাড়ি করা হবে। এরই মধ্যে ৫ হাজার ঘর তৈরিও হয়ে গেছে। আগামী মাসেই প্রধানমন্ত্রী হয়ত এটি উদ্বোধন করবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৭০ এর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে প্রবেশ এবং বাংলাদেশকে বিনির্মাণ, সে সময়ে যে অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। সেই একই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা এখনো লড়াই করছি। আমি আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন ৭১ এর ঘাতকদের বিচার হয়েছিল। কিন্তু, এই ৭১ এর পরাজিত শক্তি এখনো বাংলাদেশে রাজনীতি করে। এটা দুঃখজনক।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন মায়া বীর বিক্রম বলেন, ৭১ এ যেভাবে আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে একাকার হয়ে গিয়েছিলাম, লড়াই করেছিলাম তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কাজেই, আমাদের আরও একটা লড়াই করতে হবে। একবার নয়, দুইবার নয় ১৯ বার তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তাই আবারো ৫ম বারের মতো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পবিত্র দায়িত্ব। জিয়া-এরশাদ ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তে ভেজা পতাকা রাজাকারদের গাড়িতে দিয়েছে। সেখান থেকে শেখ হাসিনা দেশকে উদ্ধার করেছেন। তিনি আছেন বলেই আমরা ভালো আছি।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শাজাহান খান বলেন, ১৫ আগস্ট জিয়াউর রহমানের কাছে অনুমতি নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। তিনি তখন সেনাপ্রধান তার কি দায়িত্ব ছিল না, তার কাছে যখন অনুমতি চাইতে গেলো, তাদের গ্রেফতার করতে পারতেন৷ জানাতে পারতেন। তিনি তা করেন নি। খালেদা জিয়ার আমলেও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়। বদর বাহিনীর প্রধান নিজামী এবং গোলাম আযমদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছেন। ৭৫ সালের হত্যাকারীদের নিয়ে খালেদা জিয়া সংসদে নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়েছেন।
সভায় আরোও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এসপি মাহবুব উদ্দিন খান বীরবিক্রম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
এমকে/জেএইচ