ঢাকা: জনগণের পকেট কাটতে এবং লুটপাটের টাকা যোগান দিতেই সরকার আবারও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী জননেতা আবুল হাসান রুবেল।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) এক যুক্ত বিবৃতিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ জানান গণসংহতি আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্ব।
তারা বলেন, অবিলম্বে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা প্রত্যাহার করতে হবে। গ্যাস বিদ্যুৎসহ জ্বালানি পণ্যের মূল্য নির্ধারণের এখতিয়ার একমাত্র বিইআরসি’র হাতেই থাকতে হবে। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধি করা বা মূল্য নির্ধারণ করা চলবে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনগণের পকেট কাটতে এবং লুটপাটের টাকা যোগান দিতেই সরকার আবারও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। জনগণের কথা দেশের কথা বিবেচনায় না নিয়ে কয়েকদিন আগে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। বিইআরসিকে গণশুনানির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে গ্যাস বিদ্যুৎসহ জ্বালানি পণ্যের মূল্য নির্ধারণের এখতিয়ার দিলেও সেটাকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকার প্রতি মাসে যখন খুশি তখন দাম বাড়ানোটাকে নিরঙ্কুশ করতেই মন্ত্রণালয়ের হাতে এই ক্ষমতা নিয়ে নেয়। সরাসরি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক গ্যাস-বিদ্যুৎসহ কৌশলগত জ্বালানি পণ্যের নির্ধারণের এই প্রক্রিয়া চরম অগণতান্ত্রিক এবং বাস্তবে এটা আইনি প্রক্রিয়ায় লুটপাটের একটা রাস্তা মাত্র। বাংলাদেশের বর্তমান উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৫০ শতাংশ গ্যাসের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়ে আসছে। সুতরাং গ্যাসের দাম বাড়লে আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়বে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে দাম বৃদ্ধির খেলায় মেতে উঠেছে সরকার।
জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারছে, কারণ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, জনগণের কাছে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই, জবাবদিহিতা নেই। শিল্প, বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর অর্থ হচ্ছে দেশের অর্থনীতিকে আরও ভয়াবহতার মুখে ঠেলে দেওয়া। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, মাঝারি শিল্প এবং বৃহৎ শিল্প সবখানে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৩ গুণ বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। আগে যা ছিল ১২ টাকার কম।
তিনি আরও বলেন, একদিকে সরকার ঘুম-খুন-অপহরণ, বিরোধী মত দমন, গ্রেফতার ও হামলা-মামলাসহ জনগণের সমস্ত অধিকার হরণ করে চলেছে। অন্যদিকে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করে জনগণের পকেট কাটছে। জনগণের টাকায় গড়ে তোলা রাষ্ট্রীয় কোষাগার উজাড় করে সেই টাকা বিদেশে পাচার করছে ঘনিষ্ঠজনরা। এরকম জবরদস্তি ও জবাবদিহিতাহীনভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। শাসনতন্ত্রের পরিবর্তন না ঘটালে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ বিপদের মুখে ফেলে দেবে। এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে জনগণের দুর্ভোগ ক্রমাগত বাড়তেই থাকবে। এই সরকারকে বিদায় দিয়ে মানুষের পক্ষের সরকার প্রতিষ্ঠা করা এখন প্রধান কাজ। দেশকে বাঁচাতে হলে দেশের সমস্ত মানুষকে এবং সকল রাজনৈতিক দলকে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এমজেএফ