ঢাকা: নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলে বাধা দেবে না সরকার ও আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপির চলমান আন্দোলনের গতিবিধি সরকার পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি রাজপথের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। বিএনপির কর্মসূচির পাশাপাশি আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিয়ে মাঠে রয়েছে। বিএনপি যেভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছে এতে সরকার বা আওয়ামী লীগের তেমন একটা আপত্তি নেই। সে কারণে তাদের কর্মসূচিতে কোনো ধরনের বাধা বা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে না। তবে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আন্দোলনের নামে বিএনপি যাতে দেশে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে এ কারণে রাজনৈতিকভাবে মাঠে থাকতে আওয়ামী লীগের এ সিদ্ধান্ত।
গত ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিএনপি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত করেছিল এ কারণে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। ওইদিন রাজধানীর গোলাপবাগে অনুষ্ঠিত বিএনপির কর্মসূচিতে কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হয়নি। এর পর থেকে রাজধানীসহ সারা দেশেই বিএনপি কর্মসূচি পালন করে আসছে। কোথাওয়া কোনো বাঁধা আসেনি। তবে আন্দোলনের কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করতে সরকার ও আওয়ামী লীগ আবারও কঠোর অবস্থানে যাবে বলে জানান ওই নেতারা।
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি। তবে আওয়ামী লীগ ও সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে বিএনপির এই দাবি মেনে নেওয়া হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংবিাধনের নির্দেশনা মেনেই সব দলকে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার ও আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপি যদি নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি চালিয়ে যায় সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। গত কিছুদিন ধরে বিএনপি নিয়মিত কর্মসূচি দিয়ে আসছে এবং এসব কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনেরর অনাকাঙ্কিত ঘটনা বা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সভা-সমাবেশ, নিয়তান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করা যে কোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। নিয়মতান্ত্রিকভাবে যদি বিএনপি কর্মসূচি তা পালন করে তাতে বাধা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। তবে বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচি এবং গতিবিধি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দলটির নেতাদের গতিবিধিও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চলমান আন্দোলনকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা হলে সরকার সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেবে। আন্দোলনের মাধ্যমে বা কোনো কর্মসূচি দিয়ে সহিংসতা, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে এবং এর সঙ্গে অন্য কোনো উপদান যুক্ত করার চেষ্টা হলে সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী কঠোরভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগও রাজনৈতিকভাবে মাঠে রয়েছে। বিএনপির এ ধরনের যে কোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও শক্ত অবস্থানে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ধীরে সুস্থে পরিস্থিতি দেখছি। আমরা দলীয়ভাবেও কর্মসূচি দিয়ে মাঠে আছি, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছি। বিএনপি যে পর্যন্ত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা না করে, জনগণের জানমালের ক্ষতি না করে সে পর্যন্ত আমরা দেখব। কিন্তু যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হয়, জানমালের ক্ষতি করে, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
বাংলাদেশ সময়:২২৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
এসকে/এমএমজেড