ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দুই যুগ পর মিঠামইনে শেখ হাসিনা

মহিউদ্দিন মাহমুদ ও নজরুল ইসলাম খায়রুল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
দুই যুগ পর মিঠামইনে শেখ হাসিনা

মিঠামইন, কিশোরগঞ্জ থেকে: দুই যুগেরও বেশি সময় পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত মিঠামইন এসেছেন। তার আগমন ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে এ অঞ্চলে।

সরকার প্রধানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কিশোরগঞ্জবাসীও।

একটি ক্যান্টনমেন্ট উদ্বোধন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দিতে মিঠামইন এসেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সফরে তিনি প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে যাবেন।

মঙ্গলবার (ফেব্রুয়ারি ২৮) ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বেলা ১১টা ৫ মিনিটে মিঠামইনে রাষ্ট্রপতির বাড়ির পাশে ঘোড়াউত্রা নদীর চরে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সফরের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নামে সেনানিবাসটি উদ্বোধন করবেন।

এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়ি যাবেন তিনি। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে মিঠামইন সফর করলেও তৎকালীন সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার আবদুল হামিদের বাড়িতে যেতে পারেননি শেখ হাসিনা। তবে, রাষ্ট্রপতির বাড়ি কোথায় সেটা তিনি শুধু চোখে দেখেছিলেন।

সেখানে আতিথেয়তা গ্রহণ শেষে বিকেলে মিঠামইন হেলিপ্যাড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন।

এদিকে নিজের বাড়িতে জাতির পিতার কন্যাকে স্বাগত জানাতে গতকাল সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গভবন থেকে হেলিকপ্টারে মিঠামইন আসেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শেখ হাসিনাকে নিজ গ্রামের বাড়িতে হাওরের মাছ, অষ্টগ্রামের পনিরসহ স্থানীয় ঐতিহ্যের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে।

এদিন উপস্থিত সাংবাদিকরা রাষ্ট্রপতির বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী সফর সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করেন। আবদুল হামিদও আনন্দের সঙ্গে প্রশ্নের উত্তর দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি খুব খুশি বঙ্গবন্ধু কন্যা আমার বাড়ি আসছেন। আমাদের পরিবারের সবাই খুব খুশি। টুঙ্গিপাড়া কতবার গিয়েছি সেটা হিসেব করে বলতে পারবো না। যতবারই গিয়েছি ততবারই বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। আমি তো এখন রাজনীতির মধ্যে নেই। উনি আমার বাড়িতে আসবেন, আমি তাকে অভ্যর্থনা জানাতে এসেছি।

হাওরের প্রায় সব রকম মাছ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আপ্যায়ন করা হবে জানিয়ে রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, রুই, কাতল, বাইম, চিতল, চিংড়ি, পাবদাসহ হাওরের যত ধরনের মাছ পাওয়া যায় তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আপ্যায়ন করার চেষ্টা করবো।

উৎসবের রঙে রঙ্গিন মিঠামইন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে মিঠামইনসহ গোটা কিশোরগঞ্জে উৎসবের আমেজ। রঙিন সাজে সাজানো হয়েছে জনসভা মাঠ, আশপাশের এলাকা, মিঠামইনসহ কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ তুলে ধরে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ, টানানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি বিভিন্ন দেয়ালে রঙ করা হয়েছে। জনসভাস্থল মিঠামইন হেলিপ্যাড মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল নৌকার আকৃতির মঞ্চ।

সকাল থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সেখানে জড়ো হচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। মিঠামইন, ইটনা, অষ্টগ্রাম, করিমগঞ্জ, তাড়াইল, বাজিতপুর ও নিকলী উপজেলা থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ জনসভায় যোগ দেবেন বলে আশা করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও তার জনসভা সম্পর্কে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বাংলানিউজকে বলেন, তার কাছে আমাদের হাওরবাসীর আর কোনো চাওয়া নেই। হাওরের উন্নয়নে তিনি সব করে দিয়েছেন। সাব-মার্সিবল সড়কসহ (শুকনো মৌসুমে এ সড়ক চলাচল উপযোগী থাকবে, বর্ষায় পানিতে নিচে ডুবে থাকবে) দুর্গম হাওরে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত সরকারের নানা উন্নয়ন কাজ বদলে দিয়েছে এখানকার মানুষের জীবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরবাসীর জন্য যা করেছেন তার জন্য আমরা চির কৃতজ্ঞ। ওনাকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে আসবেন। জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এমইউএম/এমজে

আরও পড়ুন >> দুই যুগ পর মিঠামইন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, হাওরে উৎসবের আমেজ

>> নিজ বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।