ঢাকা: বিপ্লবী ওয়ার্কাস পাটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেছেন, বর্তমানে বাজারে গেলে সরকার নামে দেশে কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। যেভাবে একের পর এক ভবনে বিস্ফোরণ হচ্ছে, ঠিক একইভাবে ভোটবিহীন এই সরকারের বিরুদ্ধেও যেকোনো সময়ে গণবিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
শুক্রবার (১০ মার্চ) সকালে রাজধানীর ইনস্টিটিশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অব বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলয়নায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ কংগ্রেসের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয় এবং ৩য় ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধন হয়।
এতে সাইফুল হক বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের নজিরবিহীন লুটপাট ও দুর্নীতির ফলে গোটা দেশ এখন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সরকার আবারও নানান কায়দায় ২০১৮ সালের ন্যায় আরেকটি জালিয়াতির নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, গত ৫২ বছরে বাংলাদেশ লুটেরাদের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তাই জনগণের মনের কথা বলার জন্য, জনগনের অধিকার আদায়ের কথা বলার জন্যই বাংলাদেশ কংগ্রেসের জন্ম হয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ আইনি লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেমন দলটির জন্ম হয়েছে, ঠিক তেমনি আগামী দিনের যেকোনো ধরনের লড়াই সংগ্রামের জন্যও প্রস্তুত থাকতে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাই।
দলের মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পাটির (ন্যাপ) মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ন্যাপ (মোজাফফর)’র সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, জাগপা’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. শেখ আতিয়ার রহমান, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাদ্দাম হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মমতাজ উদ্দিন ফকির প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নেতারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
এর আগে সকালে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলেনের পর দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. শফিকুল ইসলামের স্বাগত বক্তব্যে মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৪ মার্চ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কংগ্রেস উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালের ৯মে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পায়। নিবন্ধনপ্রাপ্তির পর দলটি নিজস্ব প্রতীক ডাব নিয়ে বিভিন্ন সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয়। উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন জোটভুক্ত হয়ে বা এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় দলটি।
শীর্ষপদে নেই পরিবর্তন
তিন বছর পর অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। দলের শীর্ষ পদে ঘুরেফিরে আবারও পুরানোদেরই নির্বাচিত করা হয়েছে। কাউন্সিলের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত কর্ম অধিবেশনে অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন দলটির চেয়ারম্যান ও এডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম মহাসচিব হিসেবে পুন: নির্বাচিত হয়েছেন।
এর আগে দলের সংশোধনী গঠনতন্ত্র পড়ে শোনান কংগ্রেসের গঠনতন্ত্র উপকমিটির আহ্বায়ক এবং পার্টিযুগ্ম মহাসচিব তোফায়েল হোসেন।
পরে দলের চেয়ারম্যান বিগত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার তিন সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড আগামী ৩ বছরের জন্য ৭১ সদস্য বিশিষ্ট দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নাম প্রস্তাব করেন এবং উপস্থিত নেতাকর্মীরা সমর্থন দিলে সেটা নির্বাচিত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এমএইচ/এসএএইচ