ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

দেশকে নরকে পরিণত করেছে আ. লীগ: রিজভী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
দেশকে নরকে পরিণত করেছে আ. লীগ: রিজভী কথা বলছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

ঢাকা: অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে নরকে পরিণত করেছে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।  

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভয়াবহ আওয়ামী লীগ তাণ্ডব আর তামাশা ও ভাঁওতাবাজির নাটক শুরু করেছে।

পত্র-পত্রিকা, ইলেক্ট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা গুজব ছড়িয়ে গণমানুষকে বিভ্রান্ত করতে মাঠে নামানো হয়েছে সরকারের ‘পেইড বাহিনী’।  

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নিশ্চিত পতনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা নিশিরাতের সরকারের ভিত্তিমূল হচ্ছে এখন দলীয় গুণ্ডাবাহিনী, দলানুগত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আর অপপ্রচার ও উদ্ভট চাপাবাজি। ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশ থেকে ‘লালকার্ড’ পাওয়া শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত সফর করে সবকিছুর বিনিময়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য ধর্ণা দিয়ে কোথাও পাত্তা পাচ্ছেন না। গোটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন শেখ হাসিনা।  

তিনি বলেন, দেশে দুর্বার গণআন্দোলনে উত্তাল রাজপথ আর বিদেশে রেড সিগন্যালের এই পরিস্থিতিতে ভোট ডাকাত সরকার পুরোপুরি বেপরোয়া-উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। বন্দুকের নলের শাসন শুরু করেছে। সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুণ্ডাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে মরিয়া আক্রমণ চালাচ্ছে। কেবল গায়েবি মামলা, হয়রানি-হামলা-মারধর-ভাঙচুর-লুটপাটই নয়, এমনকি কুপিয়ে ও গুলিবর্ষণ করেও হত্যা ও পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে দেশের মানুষকে। মিছিল দেখলেই আতঙ্কে গুলি চালানো হচ্ছে নির্বিচারে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না।

বিএনপির ওই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের এক আলোচিত নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোমবার (২২ মে) মানববন্ধন করে প্রস্তাব দিয়েছেন নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান সংসদ ও আওয়ামী সরকারের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে হবে। তার এই প্রস্তাবের পক্ষে সরকার দলের নেতারা সমর্থন দিচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি শেখ হাসিনার চিরকালীন বিরক্তি ও বিতৃষ্ণা। এজন্য এখন ভোট পণ্ড করার নীলনকশা বাস্তবায়নের চক্রান্ত শুরু করেছেন তিনি।

রিজভী বলেন, বিনাভোটে সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে র‌্যাব-পুলিশকে দিয়ে বিরোধীদল ও মতের হাজার হাজার মানুষকে গুম খুন অপহরণ করেছে। আওয়ামী লীগের মুখের সন্ত্রাস থেকেও মানুষ রক্ষা পায়নি। শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কখনো পরোক্ষভাবে, কখনো সরাসরি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। গত বছরের ১৮ মে এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দিয়ে হত্যা করার হুমকি দেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে পদ্মা সেতু থেকে পানিতে ফেলে চুবিয়ে মারারও হুমকি দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, দেশের জনগণ ভুলে যায়নি, ‘একটার বদলে দশটা লাশ’ ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সারা দেশের আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লগি বৈঠাসহ রাজধানীতে জড়ো করেছিলেন শেখ হাসিনা।

সাবেক ছাত্রদল নেতা বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে সব সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা, হুকুমদাতা। ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে হুমকি দিয়ে কি বলেছিলেন সেটি আমি বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে চাই। তাহলে দেখা যাবে আওয়ামী নেতাদের সন্ত্রাসী চরিত্র পাল্টায়নি। উগ্রতা, নির্মমতা, অসূয়া ও হিংস্রতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের ভূষণ।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা, মহানগর, গাইবান্ধা, নওগা, কুষ্টিয়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গ্রেফতার আহত হামলার শিকার দলীয় নেতাকর্মীর তালিকা প্রকাশ করেন।  
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কোভিদ খোকন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আমিনুল ইসলাম ও তারিকুল আলম তেনজিং।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
টিএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।