ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের বাজেট সংকটে ঘুরে দাঁড়াবার বাজেট। বিশ্ব অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ম্যাজিক লিডারশিপ এর পরিচয় দিয়েছেন।
শনিবার (৩ জুন) ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন জানান। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে বিশ্বের সবাই কষ্টে আছে। সারা বিশ্ব সংঘাতময়, অস্থির পরিস্থিতি বিরাজমান। বিশ্ব পরিস্থিতির কারণেই মানুষ কষ্টে আছে, সরকার মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করছে। কষ্টটা দিচ্ছে বিশ্ব পরিস্থিতি, আমরা জনগণকে কষ্ট দিচ্ছি না। বিশ্ব অস্বস্তিকর অবস্থার পাশাপাশি ডলার সংকট রয়েছে। সোমালিয়াসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে ধারাবাহিক অগ্রগতির ফলে জিডিপির উন্নয়ন হয়েছে। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কি ছিল। আজ বিশ্ব অর্থনীতির ৩৫তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। বাজেটের কৃচ্ছ্রতাসাধন করে জিডিপির অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে।
দেশের রিজার্ভ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর রিজার্ভ কি ছিল? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রিজার্ভ ৪৮.৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটে এটার কিছুটা তারতম্য আছে তবে সব সংকটই সমাধান হয়ে যাবে দ্রুত। বিশ্বের অনেক দেশেই অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে অস্থির অবস্থা। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের অবস্থা কি? সেই তুলনায় বাংলাদেশ তো অনেক ভালো আছে। অনেক দেশের নেতারাই শেখ হাসিনাকে ফলো করেন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। সারা বিশ্ব শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেও এদেশের বিরোধী দলের লোকরা একটা ধন্যবাদও দিতে পারে না। বিএনপির নেতাদের কথা শুনলে মনে হয় দেশে দুর্ভিক্ষ হচ্ছে। তারা ভালো কিছু দেখতে পায় না। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে কিন্তু প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি আর উন্নয়ন অবদান অস্বীকার এগুলো কি মানা যায়? বিরোধী দল প্রতিপক্ষ, আমরা তাদের প্রতিপক্ষ মনে করলেও তারা শত্রু মনে, প্রতিপক্ষ মনে করে না। এদেশের বিরোধী দলের রাজনীতি বিশ্বে বিরল। বিরোধী দল শুধু সমালোচনা আর বিরোধিতা করে কিন্তু ভালো কোনো পরামর্শ দিতে পারে না।
বিএনপির বাজেট সমালোচনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে দল লুটপাটের জন্য বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন, দুর্নীতির জন্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন এমন কথা তারাই বলতে পারে। যাদের অর্থনীতিই ছিল লুটপাটের সে বিএনপি এ বাজেটকে লুটপাট বাজেট বলে কি করে? তাদের সময় কি পরিমাণ বাজেট ছিল? আজকে তা কি হয়েছে?
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এ বাজেট নির্বাচনী বাজেট কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনী বাজেট বলা যাবে না। সামনে নির্বাচন, নির্বাচনকে সামনে রেখে এ বাজেট সেটা তো আছেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে হামলা করা হতো, আওয়ামী লীগের সময় বিএনপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ কখনো হামলা করেনি। বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগ নেতারা বারবার নির্যাতিত হয়েছে কিন্তু বর্তমানে বিএনপি অবাধ ভাবে রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছে। ঢাকায় তারা কর্মসূচি পালন করছে কোথাও কি হামলা হয়েছে, হয়নি। অথচ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে, রাসেল স্কয়ারে দাঁড়াতে পারেনি। আমাদের নেতা মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিমের ওপর হামলা হয়েছে, আব্দুস সামাদ আজাদের ওপর হামলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৩
এসকে/আরআইএস