ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

‘বিএনপি বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করতে প্রতীকী হিসেবে খাম্বা নিয়ে যাবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৩
‘বিএনপি বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করতে প্রতীকী হিসেবে খাম্বা নিয়ে যাবে’ কথা বলছেন ড. হাছান মাহমুদ। 

ঢাকা: বিএনপি যখন বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করতে যাবে তখন প্রতীকী হিসেবে খাম্বা নিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।  

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত তো বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল।

এবার যদি সেটা করে তাহলে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে, উচিত শিক্ষা দেবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুত আছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা গণ্ডগোল করার চেষ্টা করবে। সেই গণ্ডগোল করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।  

লোডশেডিং নিয়ে বিএনপির কর্সসূচি প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় ছিল। এখন শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। শুধু বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় না। আজ থেকে সাড়ে ১৪ বছর আগে মানুষ গ্রামগঞ্জে বিদ্যুৎ দিয়ে বড় জোর ফ্যান চালাত আর লাইট জ্বালাত। এখন গ্রামে গ্রামে এসি, রেফ্রিজারেটর, মসজিদে এসি, ধর্মীয় উপাসনালয়ে এসি চলছে। ইজিবাইক, পেসারকুকার, রাইসকুকার সবগুলো বিদ্যুৎ সুবিধার মাধ্যমে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি সরকারের বিরাট সাফল্য।  

তিনি বলেন, দেশের একশভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা এবং বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে বহুমাত্রিক সুবিধা দেওয়া এটি বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর একটি বিরাট সাফল্য। এই সাফল্য মাঝেমধ্যে একটু বিদ্যুৎ চলে যেভাবে উসখুস করছি আমরা এতবড় সাফল্য সেটাতে তো, আমি মনে করি মানুষ আগের তুলনায় ভালো আছে। এখন মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে এটি সঠিক, বিদ্যুৎ মন্ত্রী বলেছেন ১৫ দিনের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন হবে।  

হাছন মাহমুদ বলেন, বিদ্যুতের অসুবিধা এটি জার্মানিতে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর এক সেকেন্ডের জন্য কখনো বিদ্যুৎ যায়নি, সেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিদ্যুতের রেশনিং করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে সবাইকে এসএমএস করে বলা হয়েছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করে ব্যবহার করার জন্য। সুতরাং এই অসুবিধা সাময়িক। বরং আমাদের সরকার শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এনেছে, বিদ্যুৎ সুবিধা নিয়ে মানুষ এখন বহুমান্ত্রিক সুবিধা পাচ্ছে, বিদ্যুতের বহুমাত্রিক ব্যবহার হচ্ছে।
 
বিএনপি ৮ জুন দেশের সব বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ওরা তো বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এবার যদি সেটা করে তাহলে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে, উচিত শিক্ষা দেবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুত আছে। তারা তো মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারেনি। তারেক রহমান খাম্বা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি করে বিদ্যুতের খাম্বা বানিয়েছিল, বিদ্যুৎ না দিয়ে শুধু খাম্বা লাগিয়েছিল। আমি আশা করব, তারা যখন বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করতে যাবে তখন প্রতীকী হিসেবে খাম্বা নিয়ে যাবে।

‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধের জন্য আমরা নানা ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামী জুলাই থেকে বিটিআরসি অনেক বেশি কার্যকরভাবে ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হবে। তাদের সক্ষমতার কিছু ঘাটতি আছে, সেই সক্ষমতা বাড়বে। তথ্য মন্ত্রণালয়ও গুজব প্রতিরোধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ’ 

বিএনপি-জামায়াত একসঙ্গে সরকার পতনের আন্দোলন করবে বলে শোনা যাচ্ছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সব সময় এক আছে, ওরা কোনো সময় বিচ্ছিন্ন হয়নি, মাঝেমধ্যে মৌন অবলম্বন করে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা গণ্ডগোল করার চেষ্টা করবে, সেই গণ্ডগোল করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছে। এটি কোনো সাধারণ রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, গণ্ডগোল করার উদ্দেশ্যে দিয়েছে, সেই গণ্ডগোল তাদের করতে দেওয়া হবে না। আমরাও সতর্ক আছি, বিএনপি-জামায়াতকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটি জনগণও জানে।  

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত কর্মসূচি ঘোষণা করছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কর্মসূচি ঘোষণা করবে এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়।  বিএনপি-জামায়াতের কর্মসূচি কিন্তু সহিংসতা করার লক্ষ্যেই সাজাচ্ছে বলে আমরা মনে করি। তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেশে গণ্ডগোল তৈরি করা, বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা, পানি ঘোলা করা, পানি ঘোলা করে সেখান থেকে মাছ শিকার করা। সেখান থেকে তারা সেই সুযোগ পাবে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন সরকারের দুঃশাসন দুর্নীতির কারণেই নাকি যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতিতে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বলা আছে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির নেতিবাচক ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি মানুষ পোড়ানোর অপরাজনীতি, নির্বাচন প্রতিহত ও বয়কট করার অপরাজনীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসানীতি ঘোষিত হয়েছে। এই ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপির মধ্যে অন্তর্জ্বালা শুরু হয়ে গেছে। কারণ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।  

তিনি বলেন, কোনো দেশ থেকে তারা তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির সমর্থন পায়নি। এটি ঘোষণার পর তাদের পক্ষে আর আগের মতো নির্বাচন প্রতিহত করব, নির্বাচন বর্জন করব এগুলো বলার আর সুযোগ নেই। যে কারণে মির্জা ফখরুল একেক সময় একে কথা বলছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি কেন জানি একটু হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন, এজন্য একেক দিন একেক কথা বলছেন। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কথা বলে আত্মতুষ্টিরও চেষ্টা করছেন। তাদের আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। নির্বাচন প্রতিহত করার রাজনীতি তাদের পক্ষে আর করা সম্ভবপর নয়। তাদের অনুরোধ জানান, দেশে গণ্ডগোল করার পরিকল্পনা না করে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২৩
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।