ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সিলেট ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
সিলেট ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা আদালতের আদেশ: প্রতীকী ছবি

সিলেট: সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাসহ ৫৫ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য ও সিলেট আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পূজন।

রোববার (১৩ আগস্ট) সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম এবং দ্রুত বিচার আদালতে এ মামলা করা হয়। আদালতের বিচারক সুমন ভূঁইয়া কোতোয়ালি থানাকে মামলাটি রেকর্ডের নির্দেশ দেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম (৩৪), সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ (৩০), মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম আহমদ(৩২), ছাত্রলীগ নেতা ইসফাকুর নূর চৌধুরী (২৪), আহমদ উদ্দিন সাজন(২৬), তানভীর আহমেদ (৩৮), আনছার ওরফে শোটার আনহার (২১), সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত কাউন্সিলর রুহেল আহমদ ওরফে কাউন্সিলর রুহেল, শান্ত আহমদ (২৬),সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মিছবাউল করিম রফিক(২৮), অনিক(২৪), জাবেদ আহমদ চৌধুরী (৩৫), হাসান মাহমুদ (৩০), মান্না কোরেশী (২৪), সাগর (২৪),মুহিত খান (২৪),আহমেদ ইয়াসিন(২৬), কামিল রাজা (২৫), জাকিরুল ইসলাম জাকির (৩০), রাসেল আহমেদ ওরফে হাত্তি রাসেল (২৯), মুহিউদ্দিন রাসেল (৩০), সাগর সরকার(২৮), নাসিম চৌধুরী (২২), শাহ আলম স্বাধীন(২৭), ইয়াছিন আহমেদ মারুফ (২৮),আহমদ আলী (২৮),আশরাফুল আম্বিয়া (২৮), জাহিদুল হক (২৬), মো. এমাদ(২৪), মনিউল আলম(২৭), মাহবুবুর রহমান চৌধুরী রেমু (২৮), কাজী জুবায়ের আহমদ (২৬), মো. আকাশ আর চৌধুরী (২২), আকাশ ঘোষ (২৬), বিরাজ দাস (২৫),নাঈম আহমদ (২৬), এস.কে সাজু (২৭),মো. আকিব চৌধুরী (২৫), সাকির হোসেন শাহীন (২৬), সালমান (২০), বিশাল দাস (২৫), খন্দকার মাহমুদুল হাসান জনি (২৫), ফরহাদ খান (২৬), রেদওয়ান আহমেদ রেজা (২৫),রাতুল কর পুরকায়স্থ (২২),গৌরভ (২০), আহাদ (২২), জকিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল আলম (২৯),সারওয়ার আশা(২৫), আজিজুর রহমান মুন্না (২৬), কনুজ ধর (২০), জিহান আহমদ (৩৩), এম ইমন সাহেদ (২৮), আলতাফ হোসেন মুরাদ (৩০), রায়হান খান (৩৬)। এছাড়াও অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলায় অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পূজন উল্লেখ করেন, আইনে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। ছাত্রলীগের সোহাগ-জাকিরের কমিটিতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। বর্তমানে সিলেট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। মামলার ১-৩ নং আসামিরা ছাত্রলীগের পদবিধারী নেতা হলেও তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকেন। ১নং আসামি নাজমুল র‍্যাবের শীর্ষ সন্ত্রাসী তালিকায় ৯ নাম্বারে তালিকাভুক্ত। অভিযুক্তরা সিলেটে চিনি চোরাকারবারী ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ফেসবুকে চিনি চোরাকারবারী এবং অছাত্র দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের বিষয়ে প্রতিবাদমূলক স্ট্যাটাস দিলে আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক মনোভাব পোষণ করে আসছিল।

এ ঘটনার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে দাড়িয়াপাড়া এগ্রোসীল নার্সারির সামনে অবস্থানকালে হঠাৎ নব নির্বাচিত কাউন্সিলর রুহেলসহ ১ থেকে ৫ নং আসামির নেতৃত্বে ২৫০ থেকে ৩০০ লোক স্লোগান দিয়ে এসে গুলিবর্ষণ করে। তারা আগ্নেয়াস্ত্র এবং রামদাসহ তার ওপর অতর্কিত হামলা করে এমনটি অভিযোগে উল্লেখ করেন অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পূজন। তারা আনুমানিক ৪০-৫০ ফুট দূর থেকে নাজমুলের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এক রাউন্ড করে। আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশে গুলি করে। তিনি প্রাণ বাঁচানোর জন্য বাসার দিকে দৌড়ে যাওয়ার সময় ডান পায়ে হাঁটুর নিচে গুলির কার্তুজের খণ্ডিতাংশ লাগে। সে সময় জখমপ্রাপ্ত হয়ে পাশের এক বাসায় আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি হন।  

শনিবার (১২ আগস্ট) প্রাইভেটভাবে চিকিৎসককে দেখালে তিনি পায়ের পরীক্ষা করিয়ে মাংসের মধ্যে গুলির স্প্রিন্টারবিদ্ধ থাকায় পুনরায় হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট পূজন বলেন, একজন সরকারি সহকারী প্রসিকিউটির হয়েও শুধুমাত্র আসামিদের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাইনি। আসামিরা ছাত্রলীগের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে জনমনে সর্বদা আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। বৈদ্যুতিক খুঁটির আলোতে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করেছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে, এপিপি অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পূজন আরও বলেন, হামলার ঘটনার পর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাকে দেখতে বাসায় আসেন। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এছাড়া হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কেন্দ্রের তিন সহ-সভাপতি ও আইন সম্পাদকের ওপর ওই ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই তদন্ত কমিটি সোমবার (১৪ আগস্ট) থেকে কাজ শুরু করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।