ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

শোক দিবসের সভা শেষে ইবি ছাত্রলীগ কর্মীদের মারামারি

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
শোক দিবসের সভা শেষে ইবি ছাত্রলীগ কর্মীদের মারামারি

ইবি: শোকদিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মারামারির কিছুক্ষণ আগেই আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

রোববার (২০ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের সামনে শহীদ জিয়াউর রহমান হল ও শেখ রাসেল হল ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা চলাকালীন সময়ে মিলনায়তনে ঢুকতে গিয়ে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের শামীম ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শেখ রাসেল হলের আশিক কোরাইশির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।  

এ ঘটনার জেরে আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তনের বাহিরে এসে আবারও উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জিয়া হল ও রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে মারামারির সূত্রপাত হয়। পরে বঙ্গবন্ধু হল ও লালন শাহ হলের ছাত্রলীগ কর্মীরাও জড়িয়ে যায়। এসময় লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী আলাল ইবনে জয় (বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত) এবং তার সঙ্গীরা জিয়া হল ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর চড়াও হয় ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে জানা গেছে। এসময় ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সমাধান করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়।

মারামারি চলাকালীন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিব ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মুফতাঈন আহমেদ সাবিককে ছুরিকাঘাত করেন বলে জানা যায়। পরে আহত সাবিককে ইবি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।  

এদিকে, ছুরিকাঘাতের বিষয়টি এড়িয়ে গাছের ডালে কেটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবিক। তবে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে সাবিক বলেন, কিছু সংখ্যক ছেলেরা মারামারি করছিল। এসময় তাদেরকে থামাতে গিয়ে আম গাছের ডাল লেগে কেটে যায়। আমি এর বেশি আর বলতে চাচ্ছি না।

অভিযুক্ত আকিব ছুরিকাঘাতের বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবি করে নিজেও মার খেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, আলোচনা সভা শেষে বাহিরে দেখি হুলুস্থুল অবস্থা বিরাজ করছে। পরে রাসেল হলের ছেলেরা আমাকে মারধর করে। আমার হাতে এখনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।  

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ঘটনাটি ঘটার পর জানতে পেরে প্রক্টরিয়াল বডিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পরে তারা চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করেছে। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয় হবে।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আলোচনা সভা সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এর পরে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রগতিশীল সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’র আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস ২০২৩ উপলক্ষে “মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া-৩ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।  

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঝিনাইদহ-১ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই। আরও অতিথি হিসেবে ছিলেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশা।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া।  

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের জাতীয় শোকদিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।