ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

আ. লীগের খুনের রাজনীতি যখন শুরু, তখন বিএনপির জন্মই হয়নি: আব্বাস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৩
আ. লীগের খুনের রাজনীতি যখন শুরু, তখন বিএনপির জন্মই হয়নি: আব্বাস

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আজ আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপি খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। আরে, যখন আওয়ামী লীগের খুনের রাজনীতি শুরু হয়, তখন তো বিএনপির জন্মই হয়নি।

 

তিনি বলেন, খুনের রাজনীতি দেখেছি ৭৪-৭৫ সালে। শাহজাহানপুরে আমার সামনে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় এসপি মাহবুব, সার্জেন কুদ্দুস, সার্জেন্ট কিবরিয়া। তাদের টিম লিডার ছিলেন এসপি মাহবুব। আবুল হোসেনকে আর পাওয়া যায়নি। সে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে এখনো আমি বেঁচে আছি।  

তিনি বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ সালে ত্রিশ হাজার যুবকের রক্তে রঞ্জিত আওয়ামী লীগের হাত।  

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, রমনা ও শাহজাহানপুর থানা বিএনপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।  

দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ চলাকালে জেলখানায় আটক ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবুল বাসারের লাশ জানাজার জন্য নয়াপল্টনে আনা হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।  

মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করেনি। শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশ অনেক ভালো অবস্থানে গিয়েছিল। এদেশ তখন বিশ্বের কাছে ইমার্জিং টাইগার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। চোর-বাটপার ছিল না। আজ সেই বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে লুটেরাদের রাষ্ট্র।  

তিনি বলেন, মাঝখানে কয়েকদিন নেতাকর্মীদের ওপর অন্যায়, অবিচার, জেল, জুলুম বন্ধ ছিল। কী কারণে বন্ধ ছিল, তা জানি না। এখন সব শুরু হয়েছে। জীবিত গ্রেপ্তার হচ্ছে, আর মৃত বেরিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কর্মী আবুল বাসার, ইদ্রিস মন্ডলকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। আর লম্বা লম্বা কথা বলেন, আপনারা খুনের রাজনীতি করেন না। এই রাজনীতি শেষ করবেন। এই সরকারকে সরানোর জন্য, দেশে গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যতটুকু যাওয়া প্রয়োজন, বিএনপি নেতাকর্মীরা ততটুকুই যাবে।  

আব্বাস বলেন, নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছুদিন ধরে সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নন, তারা আওয়ামী লীগের চাকর-বাকর। তারা ফরমায়েশি কথা বলছেন। ফরমায়েশি রায় দিচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল-মৃত্যুকে ভয় পায় না। সারাদেশে পোশাকি সন্ত্রাস চলছে। জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে জনগণের ওপরই অত্যাচারের স্টিম রোলার চালাচ্ছেন।  

তিনি বলেন, গতকাল দেখলাম তারেক রহমানের নামে তথাকথিত বিশিষ্টজনেরা নানারকম কথা বলছেন। আসলে তাদের কোনো পরিচয় নেই। তারা আওয়ামী লীগার। কোনো ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ করে না। যারা ভদ্র, তারা এ দল করতে পারে না, চলে আসতে বাধ্য হয়।

সমাবেশে সালাম বলেন, এ সরকার পতন নিশ্চিত দেখে আন্দোলনের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। শুরু করছে জঙ্গি নাটক। আরও অনেক নাটক করবে। আমরা সব বিষয়ে সজাগ আছি। কোনো ফন্দিফিকির করে লাভ নেই। ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। অন্যায়ের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর মোড় ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এ ছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মহানগর বিএনপি নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৩
টিএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।