ঢাকা: গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই, আমরা আমাদের ভোটের অধিকার চাই। আমাদের এ চাওয়া তো অন্যায় না।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পল্টন মোড়ে বৃহত্তর ধারার যুগপৎ আন্দোলনের এক দফা দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত পদযাত্রা ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনাই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যার ছেলের সম্পত্তি আমেরিকায় বাজেয়াপ্ত হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এ সরকার র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এনে দিয়েছে। এ সরকারের অপকর্মের জন্য আমেরিকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় থাকা অবস্থায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা এ সরকারের ওপর চপেটাঘাত। কিছুদিন আগে সেলফি তুলে খুব হাসি ঠাট্টা করছে আর এখন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় চোখের পানি ঝরছে। এ ১৪ বছরে আওয়ামী সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের যত চোখের পানি ঝরিয়েছে আওয়ামী সরকারকে তার দ্বিগুণ পানি ফেলতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার উন্নয়নের কথা বলছে অথচ আইএলও বলছে ,এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ২৮ দেশের মধ্যে শিক্ষিত বেকারে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোকে মানসম্মত চিকিৎসা নেই, বিশেষজ্ঞ নেই। কি উন্নয়ন করেছে সরকার? ধারাবাহিকভাবে একটি সরকার থাকলে উন্নয়ন হয়। কিন্তু এ সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে। এ লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম। এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু হয়েছে। সরকারের অনেক রথি-মহারথিরা এ নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ বাতিল হতে পারে। ক্ষমতাসীনদের আর কার কার সম্পদ আমেরিকায় বাজেয়াপ্ত হচ্ছে, কার কার ভিসা বাতিল হয়েছে আমরা সেটি জানতে চাই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মুমূর্ষু অবস্থায়। কখন কি হয় বলা যায় না। কিন্তু তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সরকারের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবরা একটু জ্বর হলেই সিঙ্গাপুরে চলে যায়, অথচ বিনা চিকিৎসায় ডেঙ্গুতে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই।
তিনি বলেন, সরকার নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ায় জনগণের নাভিশ্বাস শুরু হয়েছে। এ ব্যর্থ সরকারের জনগণ পদত্যাগ চায়। এজন্য জনগণের গণআন্দোলন শুরু হয়েছে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হবে৷ তবে প্রশাসনকে ব্যবহার করে সরকার দমন-পীড়নের মাধ্যমে আন্দোলন থামাতে চায়। যারা অতিউৎসাহী হয়ে জনগণের বুকে গুলি চালাবে, তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসবে। সুতরাং জনগণ বিরুদ্ধে না গিয়ে জনগণের পক্ষে কাজ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।
এ সময় সমাবেশ শেষে পল্টন মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করে মতিঝিল শাপলা চত্বরে গিয়ে পদযাত্রা শেষ হয়।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এ্যাড. নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতেমা তাসনিম, সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক তোজাজ্জল হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সৈয়দ মিল্টন, নজরুল ইসলাম মিলন, গাজী ইউনুছ, নাজিমুদ্দিন ও মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
এইচএমএস/জেএইচ