ঢাকা: সরকার পদত্যাগের একদফার সমাধান ‘শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলনেই আসবে বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমরা সবাই এদেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে হয়েছি এবং একটা দফার মধ্যে এসেছি রেজিমের (সরকার) পদত্যাগের লক্ষ্যে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের দমননীতির চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যে সময়টা অতিক্রম করছি- এটা জাতির জন্য সবচেয়ে সংকটময় সময়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি সবচেয়ে বেশি গণতন্ত্রের পক্ষে তার সারাটা জীবন দিয়েছেন; তিনি আজকে অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় এই শাসকগোষ্ঠীর চরম প্রতিহিংসার কারণে বিনা চিকিৎসায় আজ মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছেন।
আমাদের প্রায় ৪৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা চলছে। অনেককেই নির্বাচনের আগে সাজা দিয়ে তারা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেটা করা হচ্ছে। এর একটাই মাত্র কারণ যেন বিরোধী দল নির্বাচনে না আসতে পারে; নির্বাচনে না যোগ দিতে পারে। যেখানে একমাত্র আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় যাবে, শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় যাবে।
রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং ইন্দো-প্যাসেফিক কৌশল’ শীর্ষক এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশনে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দানের বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক দেশ ও প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে অর্থনৈতিক ও কৌশলগতভাবে কাতারবদ্ধ হওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করার পাশাপাশি লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম ও রাজনীতি নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশীর স্বাধীনতা, সমতা, সমৃদ্ধির ক্ষমতায়নের জন্য দেশিয় উদ্যোগ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের দল বিএনপি জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করতে নিবেদিত।
গণতান্ত্রিক বিশ্বে গৃহীত ইন্দো-প্যাসেফিক কৌশল বৈশ্বিক একটি অবাধ, উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থাপত্যকে নতুন করে ঢেলে সাজাবে বলে আশা করা যায়। সংযোগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বঙ্গোপসাগরের শীর্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পশ্চিম ও পূর্ব গোলার্ধের পাশাপাশি ভারত মহাসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তা সহযোগিতা, নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সম্প্রীতি, নিরাপদ নৌ-চলাচল, টেকসই অর্থনীতি, মুক্ত বাণিজ্য, জলবায়ু, স্বাস্থ্য, মহামারির মতো হুমকিসমূহের মোকাবিলার পাশাপাশি একটি অবাধ, মুক্ত, উদার, গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ ইন্দা-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল গ্রহণ করেছি।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য দেন শাহজাহান ওমর, তাবিথ আউয়াল, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহেদুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
টিএ/এমজে