ঢাকা: আগুন দিয়ে গাড়ি পুড়িয়ে সরকার পরিবর্তন করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস করে, আগুন দিয়ে গাড়ি পুড়িয়ে আর যাই হোক সরকার পরিবর্তন করা যায় না।
রোববার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের প্রথম কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে মেনন বলেন, সামনে নির্বাচন, অতএব সেই নির্বাচনের ব্যাপার নিয়ে দেশে তুলকালাম চলছে। বিদেশি শক্তি আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল ভারতে এসেছে। ভারতে এসে তাদের আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল বাংলাদেশের নির্বাচন। যখন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় পরাশক্তি বা আঞ্চলিক শক্তির বিবেচনার বিষয় হয়ে যায় তখন দেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত বা জনগণের সিদ্ধান্ত কোথায় এসে দাঁড়ায়?
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লম্ফঝম্প করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং প্রতি মুহূর্তে আমাদের একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলছেন। আমি বিভিন্ন সময় বলেছি, নিজের দিকে তাকান। আমেরিকার নির্বাচনে তারা রাশিয়ার ভূমিকাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কিনা? আমেরিকার নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্ক আছে কিনা? সেখানে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার জন্য ক্যাপিটাল হিলে আক্রমণ হয়েছিল কিনা? তাহলে আমার দেশে এসে আমার দেশের ব্যাপার নিয়ে নিয়ে তাদের এত মাথা ঘামানোর দরকার কি?
তিনি বলেন, আমি জানি না ভারতের সঙ্গে আলোচনায় তারা (আমেরিকা) সর্বশেষ কোন অবস্থান গ্রহণ করবে। তবে নির্বাচন যে খুব সুখময় হবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। যদিও বিএনপি অবরোধ দিচ্ছে হরতাল দিচ্ছে। এ হরতাল-অবরোধ হচ্ছে কিনা সেটা আপনারা ভালো জানেন। তারা (বিএনপি) ২০১৪ সালে যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, ড্রাইভারদের পুড়িয়ে মেরেছিল, রাস্তায় গাছ ফেলে রেখে দিনের পর দিন কক্সবাজার, সাতক্ষীরা অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের দিন প্রিজাইডিং অফিসারকেও হত্যা করেছিল। ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের নির্বাচনী এলাকায় ১১২টা কেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন হতে পারেনি, যদিও নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু কার্যকর কিছু করতে পারেনি। সে পরিস্থিতি আজকে কিন্তু নেই। কিন্তু তারপরেও আমি বলবো এ নির্বাচন সুখময় হবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে জনগণ যাতে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তার জন্য একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, দেশ এখন ক্রান্তিলগ্নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সরকারদলীয় মন্ত্রীরা বলেন সিন্ডিকেট কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না। দেশের রাজনীতিতেও এখন সিন্ডিকেট রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গাড়িঘোড়া জ্বালাও-পোড়াও করে কোনো সমাধান হবে না এবং গণহারে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেও কোনো সমাধান করা যাবে না। সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে বসে তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারে।
এ সময় দলটির কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। সভাপতি হিসেবে নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আজিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি হিসেবে সেলিম মোজাম্মেল, ফেরদৌস বশির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজী সিরাজুল ইসলাম ও মইনুল আহসান মুন্নার নাম ঘোষণা করা হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মাজহারুল হক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) যুগ্ম আহবায়ক ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৩
এসসি/জেএইচ